লিডসে প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ডের (England) কাছে পরাজয় ভারতের (Indian Cricket Team)। এর প্রভাবে ২০২৫-২৭ বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পনশিপ (WTC) চক্রের পয়েন্ট টেবিলে (Point Table) বড় রদবদল এনে দিয়েছে। ইংল্যান্ডের ওপেনার বেন ডাকেটের বিধ্বংসী ১৪৯ রানের সৌজন্যে ৩৭১ রানের কঠিন লক্ষ্য তাড়া করে জয় ছিনিয়ে নেয় রুট-স্টোকসরা। এই জয়ের ফলে ইংল্যান্ড নতুন চক্রের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান দখল করেছে। এক ম্যাচ খেলে তারা ১২ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে, পয়েন্ট শতাংশ হার ১০০। অন্যদিকে, শুভমনের নেতৃত্বে পরাজয়ের পর টেবিলের চতুর্থ স্থানে নেমে গিয়েছে, ভারত। ফলত ক্রিকেট বিশ্বে ‘লাস্টবয়’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে।
নতুন টেস্ট চ্যাম্পনশিপের চক্রে এখন পর্যন্ত মাত্র চারটি দল ইংল্যান্ড, ভারত, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ অভিযান শুরু করেছে। অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তান এখনও এই চক্রে প্রথম ম্যাচ খেলেনি। ফলে, অভিযান শুরু করা চার দলের মধ্যে ভারত বর্তমানে সবচেয়ে নিচে। এক ম্যাচ খেলে তারা কোনো পয়েন্ট সংগ্রহ করতে পারেনি, যা ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গলে সিরিজের প্রথম টেস্ট ড্র করে টেবিলে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। এক ম্যাচে ৪ পয়েন্ট সংগ্রহ করে তাদের পয়েন্ট শতাংশ হার ৩৩.৩৩। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর ১৪৮ এবং মুশফিকুর রহিমের ১৬৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ৪৯৫ রানের বিশাল স্কোর গড়ে। দ্বিতীয় ইনিংসে শান্তর অপরাজিত ১২৫ রান ম্যাচ ড্র করতে সাহায্য করে, যা বাংলাদেশকে মূল্যবান পয়েন্ট এনে দেয়। এই পারফরম্যান্স বাংলাদেশের সম্ভাবনার ঝলক দেখায়।
শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশের বিপক্ষে গলে টেস্ট জিততে না পারলেও, টেবিলে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। তারাও এক ম্যাচ ড্র করে ৪ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে, পয়েন্ট শতাংশ হার ৩৩.৩৩। পাথুম নিশঙ্কার ১৮৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংস শ্রীলঙ্কাকে ম্যাচে টিকিয়ে রাখলেও, তারা জয় ছিনিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়। তবুও, ভারতের উপরে থেকে তারা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে।
ডব্লিউটিসি পয়েন্ট বণ্টন ব্যবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। জয়ের জন্য ১২ পয়েন্ট, ড্রয়ের জন্য ৪ পয়েন্ট এবং টাইয়ের জন্য ৬ পয়েন্ট দেওয়া হয়। পয়েন্ট শতাংশ দিয়ে র্যাঙ্কিং নির্ধারিত হয়, যা মোট প্রাপ্ত পয়েন্টকে সম্ভাব্য পয়েন্ট দিয়ে ভাগ করে হিসাব করা হয়। ওভার-রেটে পিছিয়ে থাকলে প্রতি ওভারে এক পয়েন্ট কাটা যায়, যা দলগুলোর জন্য অতিরিক্ত চ্যালেঞ্জ।
লিডসে ভারতের হার দলের কৌশল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। সাবেক ইংলিশ স্পিনার মন্টি পানেসার পরামর্শ দিয়েছেন, বার্মিংহামে দ্বিতীয় টেস্টে কুলদীপ যাদবকে দলে নেওয়া উচিত। এডবাস্টনের পিচে স্পিনাররা প্রভাব ফেলতে পারে এবং কুলদীপের ‘এক্স-ফ্যাক্টর’ ভারতকে সিরিজে ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হতে পারে। তবে, শার্দুল ঠাকুরের অলরাউন্ড ক্ষমতা এবং রবীন্দ্র জাদেজার ধারাবাহিকতা বিবেচনায় দল নির্বাচন কঠিন হয়ে পড়েছে।
ভারতের জন্য লিডসের হার হতাশাজনক হলেও, পাঁচ ম্যাচের এই সিরিজে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্থান প্রমাণ করে, সঠিক কৌশল ও ধারাবাহিকতা থাকলে ছোট দলগুলোও বড় প্রভাব ফেলতে পারে। ইংল্যান্ডের শীর্ষস্থান ধরে রাখতে হলে তাদের ধারাবাহিক পারফরম্যান্স অব্যাহত রাখতে হবে।
ডব্লিউটিসি ২০২৫-২৭ চক্র এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে। নয়টি দলের এই প্রতিযোগিতায় প্রতিটি ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ। ভারত কি বার্মিংহামে জয়ের মাধ্যমে টেবিলে উঠে আসবে? বাংলাদেশ কি তাদের স্বপ্নের অভিযান অব্যাহত রাখবে? নাকি ইংল্যান্ড তাদের আধিপত্য বজায় রাখবে? ক্রিকেটপ্রেমীরা এই প্রশ্নের উত্তরের অপেক্ষায় রয়েছেন।
Indian Cricket Team Leeds Loss Puts Them Last in WTC Point Table