‘কারা যাচ্ছে কোর্টে? চিনে রাখুন,’ ভাতা বিতর্কে ফুঁসলেন কুণাল

চাকরি হারানো গ্রুপ সি ও ডি কর্মীদের ভাতা দেওয়ার উপর কলকাতা হাই কোর্টের অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ ঘিরে ফের উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। শুক্রবার বিচারপতি অমৃতা সিনহার একক…

‘কারা যাচ্ছে কোর্টে? চিনে রাখুন,’ ভাতা বিতর্কে ফুঁসলেন কুণাল

চাকরি হারানো গ্রুপ সি ও ডি কর্মীদের ভাতা দেওয়ার উপর কলকাতা হাই কোর্টের অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ ঘিরে ফের উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। শুক্রবার বিচারপতি অমৃতা সিনহার একক বেঞ্চ এই নির্দেশ জারি করার পরই সরব হন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। আদালতের রায় নিয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও, বিরোধীদের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানান তিনি। প্রশ্ন তোলেন এই মানবিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কারা আদালতের দারস্থ হলেন?

তীব্র প্রতিক্রিয়া কুণালের 

“বন্ধু তোমার পথের সাথীকে চিনে রাখ,”-রায়ের পরেই বলেন কুণাল ঘোষ। তিনি আরও বলেন, “মানবিক মুখ্যমন্ত্রী যাঁরা চাকরিহারা, তাঁদের সংসার চালানোর কথা ভেবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এই রাজ্যে ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেল বাতিল করে বহু গ্রুপ সি ও ডি কর্মীর চাকরি চলে যায়। সরকার তাঁদের পাশে দাঁড়াতে চাইছিল। অথচ সেই ঘোষণার বিরোধিতা করে কিছু লোক আদালতে গেলেন! মানুষ তাঁদের চিনে রাখুক।”

   

কুণাল ঘোষ এখানেই থেমে থাকেননি। তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘আদালত নিয়ে আমি কিছু বলছি না। কিন্তু কারা পাশে থাকল, আর কারা মানুষের চাকরি, ভাতা খেয়ে নিচ্ছে এটা মানুষ বুঝে নিচ্ছে। বিরোধীরা আজ চোখের জলকে পুঁজি করে রাজনীতি করতে চাইছে। যাঁদের সংসার চলছিল চাকরির টাকায়, আজ তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তেও বাধা আসছে। এটাই কী রাজনীতি?”

ভাতার প্রতিশ্রুতি kunal ghosh on high courts order

প্রসঙ্গত, রাজ্য সরকার গত মে মাসে ঘোষণা করেছিল চাকরি হারানো গ্রুপ সি কর্মীরা প্রতি মাসে ২৫ হাজার টাকা এবং গ্রুপ ডি কর্মীরা ২০ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন। এই ঘোষণার বিরুদ্ধেই কলকাতা হাই কোর্টে মামলা ওঠে। শুক্রবার সেই মামলায় আদালত জানিয়ে দেয়, আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্য কোনও ভাতা দিতে পারবে না।

Advertisements

ক্ষুব্ধ অন্যান্য তৃণমূল নেতারাও

এই রায়ের পর কেবল কুণাল ঘোষ নন, একাধিক তৃণমূল নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। জয়প্রকাশ মজুমদারের অভিযোগ, “নির্বাচিত সরকার যাতে কাজ করতে না পারে, সেই উদ্দেশ্যেই কিছু বেঞ্চ সবকিছু আটকে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আগেও এমন নজির আমরা দেখেছি।” বিপরীতে, বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষ এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “এটি রাজ্য সরকারের গালে আর একটি চপেটাঘাত। পাশাপাশি, যারা চাকরি হারিয়েছেন, তাঁদের প্রতি আমাদের সহানুভূতি আছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর এই ভাতা ঘোষণা ছিল স্পষ্টভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”

তবে সবমিলিয়ে এই ইস্যুতে শাসক-বিরোধী মুখোমুখি সংঘাতে। একদিকে রাজ্য সরকার বলছে, এ ছিল সম্পূর্ণ মানবিক উদ্যোগ। অন্যদিকে, বিরোধীদের মতে, এটি রাজনৈতিক চালে ভাতা দেওয়ার চেষ্টা। এই টানাপোড়েনের মাঝে কুণাল ঘোষের হুঁশিয়ারি, “মানুষ দেখছে কারা মানবিকতার পাশে, আর কারা সুবিধাবাদী রাজনীতি করছে। বন্ধু, তোমার পথের সাথীকে এবার চিনে রাখ।”