আটলান্টার মের্সিডিজ-বেঞ্জ স্টেডিয়ামে (Mercedes-Benz Stadium) ফুটবল ভক্তদের এক অসাধারণ উপহার দিলেন লিওনেল মেসি (Lionel Messi)। ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের (FIFA Club World Cup) গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ইন্টার মায়ামি (Inter Miami)২-১ গোলে হারালো ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলের এক চিরচেনা নাম এফসি পোর্তোকে (FC Porto)।
খেলার শুরুটা অবশ্য ছিল মায়ামির জন্য হতাশাজনক। ম্যাচের মাত্র অষ্টম মিনিটেই দলের তরুণ ডিফেন্ডার নোয়া অ্যালেন এক অপ্রয়োজনীয় ফাউল করে বসেন, যার ফলে পেনাল্টি পায় পোর্তো। স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড সামু আগেহোওয়া সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে পোর্তোকে ১-০ গোলে এগিয়ে দেন। প্রথমার্ধজুড়ে পোর্তো বলের নিয়ন্ত্রণে আধিপত্য বিস্তার করলেও দ্বিতীয় গোলের দেখা পায়নি। আর এটাই ম্যাচে বড় পার্থক্য গড়ে দেয়।
দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমে একেবারেই ভিন্ন রূপে দেখা যায় ইন্টার মায়ামিকে। নতুন উদ্যমে খেলতে থাকা দলটি মাত্র ৪৭ মিনিটে সমতায় ফেরে। ডানদিক থেকে মার্সেলো ওয়েইগানডের ক্রসে টেলাস্কো সেগোভিয়া এক দুর্দান্ত হাফ-ভলিতে গোল করে হেরনসদের সমতায় ফেরান। গোলটি মায়ামির খেলোয়াড়দের মনে আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনে।
এর মাত্র সাত মিনিট পরেই ম্যাচের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তটি আসে। পোর্তোর ডিফেন্ডাররা বক্সের ঠিক বাইরে অপ্রয়োজনীয় ফাউল করে বসে। বলটি যখন লিওনেল মেসির পায়ে আসে, তখনই গ্যালারির প্রত্যাশা ছিল স্পষ্ট—এই ম্যাচে কিছু বিশেষ ঘটতে যাচ্ছে। ৩৭ বছর বয়সী এই আর্জেন্টাইন মহাতারকা তার বিখ্যাত বাঁ পা দিয়ে নিখুঁতভাবে বলটি পাঠান গোলপোস্টের উপরের কোনায়। গোলকিপারের পক্ষে রক্ষা করা অসম্ভব ছিল। বলটি জালে জড়াতেই মাঠজুড়ে ধ্বনিত হয় “মেসি! মেসি!” চিৎকার।
এই গোলের মাধ্যমে শুধু মায়ামিকে এগিয়ে দেন মেসি, তা নয়—দলের মেজাজ, খেলায় গতি এবং সমর্থকদের মনোবলকেও চাঙ্গা করে দেন তিনি। এরপর বাকি সময়টুকুতে পোর্তো একাধিক চেষ্টা করলেও, মায়ামির রক্ষণভাগ ও গোলকিপার ড্রেক ক্যালেন্ডারের দৃঢ়তায় আর গোল আদায় করে নিতে পারেনি।
এই জয়ে মায়ামির পয়েন্ট দাঁড়াল চার, যা তাদের নিয়ে গেল গ্রুপ এ-তে দ্বিতীয় স্থানে, পামেইরাসের সঙ্গে সমানে সমানে। এখন গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে এই ব্রাজিলিয়ান জায়ান্টদের বিপক্ষে মাঠে নামবে মায়ামি, যেখানে জয় মানেই কোয়ার্টার-ফাইনালের টিকিট।
এই ম্যাচে লিওনেল মেসির পারফরম্যান্স ছিল নিঃসন্দেহে ম্যাচের সেরা। দলের সবাই যখন চাপে, তখন আবারও প্রমাণ করলেন কেন তাকে বলা হয় “ফুটবলের জাদুকর”। ৩৭ বছর বয়সেও তার ফ্রি-কিক আজও সমান কার্যকর, সমান অনন্য। মায়ামির হয়ে টেলাস্কো সেগোভিয়া এবং মার্সেলো ওয়েইগানডও নজর কেড়েছেন। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে দলের ঘুরে দাঁড়ানোর নেপথ্যে তাদের ভূমিকাও প্রশংসার যোগ্য।
Lionel Messi trademark free-kick earned Inter Miami win against FC Porto in FIFA Club World Cup