কলেজ ভর্তির পোর্টালে প্রথম দিন কত আবেদন জমা পড়ল ?

পশ্চিমবঙ্গের উচ্চশিক্ষা বিভাগের সেন্ট্রালাইজড অনলাইন পোর্টালে আজ (admission) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৮,৪৪৩ জন ছাত্রছাত্রী নিজেদের নথিভুক্ত করেছেন। এই নথিভুক্ত ছাত্রছাত্রীরা মোট ৭১,৯৪৯টি আবেদন জমা দিয়েছেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, নথিভুক্ত ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ২৫১ জন ভিন রাজ্যের, যা পশ্চিমবঙ্গের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি ক্রমবর্ধমান আকর্ষণের ইঙ্গিত দেয়।

এই সেন্ট্রালাইজড পোর্টালটি (admission) রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে স্নাতক স্তরে ভর্তির প্রক্রিয়াকে সহজ ও স্বচ্ছ করার লক্ষ্যে চালু করা হয়েছে। এই উদ্যোগ উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ডিজিটাল রূপান্তরের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

সেন্ট্রালাইজড অনলাইন পোর্টাল: উদ্দেশ্য ও তাৎপর্য

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উচ্চশিক্ষা (admission) বিভাগ ২০২৪ সালে স্নাতক স্তরে ভর্তির জন্য একটি সেন্ট্রালাইজড অনলাইন পোর্টাল চালু করে। এই পোর্টালের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা রাজ্যের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি একক প্ল্যাটফর্ম থেকে আবেদন করতে পারেন। এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো ভর্তি প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনা এবং ছাত্রছাত্রীদের জন্য ভর্তির প্রক্রিয়াকে আরও সুবিধাজনক করা।

এই পোর্টালের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা (admission) একাধিক কলেজে আলাদাভাবে আবেদন করার ঝামেলা থেকে মুক্তি পান এবং ভর্তির জন্য একটি সুবিন্যস্ত ব্যবস্থার সুবিধা পান। উচ্চশিক্ষা বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “এই পোর্টালটি ছাত্রছাত্রীদের জন্য একটি স্বচ্ছ, দ্রুত এবং নির্ভরযোগ্য ভর্তি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করছে।

আমরা লক্ষ্য করছি যে, ভিন রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরাও আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে।” আজকের তথ্য অনুযায়ী, ২৮,৪৪৩ জন নথিভুক্ত ছাত্রছাত্রীর মধ্যে ২৫১ জন ভিন রাজ্যের, যা এই পোর্টালের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার প্রমাণ।

আবেদনের পরিসংখ্যান ও প্রবণতা (admission)

২০২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়ায় (admission) এখনও পর্যন্ত ২৮,৪৪৩ জন ছাত্রছাত্রী পোর্টালে নথিভুক্ত হয়েছেন, যারা মোট ৭১,৯৪৯টি আবেদন জমা দিয়েছেন। এর অর্থ গড়ে প্রত্যেক ছাত্রছাত্রী প্রায় ২.৫টি কলেজে আবেদন করেছেন। এই সংখ্যা থেকে বোঝা যায়, ছাত্রছাত্রীরা বিভিন্ন কলেজ ও বিষয়ে তাদের পছন্দের ক্ষেত্রে একাধিক বিকল্প অন্বেষণ করছেন।

পোর্টালের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, পছন্দের কোর্স এবং কলেজের তথ্য এক জায়গায় জমা দিয়ে একাধিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে পারছেন, যা সময় ও শ্রম সাশ্রয় করে। ভিন রাজ্যের ২৫১ জন ছাত্রছাত্রীর নথিভুক্তি পশ্চিমবঙ্গের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ক্রমবর্ধমান আকর্ষণের ইঙ্গিত দেয়।

বিশেষ করে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, (admission) যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানগুলি তাদের মানসম্মত শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগের জন্য দেশজুড়ে পরিচিত। উচ্চশিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভিন রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের আগ্রহ বাড়ার পিছনে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি এবং পোর্টালের ব্যবহার সহজতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

পোর্টালের সুবিধা ও চ্যালেঞ্জ

সেন্ট্রালাইজড অনলাইন (admission) পোর্টালটি ছাত্রছাত্রীদের জন্য একটি ঝামেলামুক্ত ভর্তি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করছে। এর মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা ঘরে বসে আবেদন করতে পারছেন, তাদের আবেদনের স্থিতি ট্র্যাক করতে পারছেন এবং মেধা তালিকা ও কাউন্সেলিং সংক্রান্ত তথ্য পাচ্ছেন।

পোর্টালটি আবেদন ফি প্রদানের জন্য অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে এবং বিভিন্ন ভাষায় ব্যবহারকারী-বান্ধব ইন্টারফেস প্রদান করে। এছাড়া, পোর্টালে তথ্য আপলোডের জন্য বিস্তারিত নির্দেশিকা এবং হেল্পলাইন নম্বর রয়েছে, যা ছাত্রছাত্রীদের সমস্যার সমাধানে সহায়তা করে।

তবে, পোর্টালের কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। গ্রামাঞ্চলের ছাত্রছাত্রীরা ইন্টারনেট সংযোগ ও ডিজিটাল জ্ঞানের অভাবে আবেদন প্রক্রিয়ায় সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এক্স প্ল্যাটফর্মে একজন ছাত্র লিখেছেন, “পোর্টালটি ব্যবহার করা সহজ, কিন্তু গ্রামে ইন্টারনেটের গতি কম থাকায় আবেদন জমা দিতে সমস্যা হচ্ছে।” উচ্চশিক্ষা বিভাগ জানিয়েছে, তারা গ্রামাঞ্চলে ইন্টারনেট সুবিধা উন্নত করতে এবং স্থানীয় কলেজগুলিতে সহায়তা কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা করছে।

জনগণ ও শিক্ষাবিদদের প্রতিক্রিয়া

এক্স প্ল্যাটফর্মে (admission) ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষাবিদরা এই পোর্টাল নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। একজন ছাত্র লিখেছেন, “এই পোর্টাল আমাদের জন্য ভর্তি প্রক্রিয়াকে অনেক সহজ করেছে। আগে আমাদের বিভিন্ন কলেজে গিয়ে ফর্ম জমা দিতে হতো, এখন সবকিছু অনলাইনে হয়ে যায়।” আরেকজন শিক্ষাবিদ মন্তব্য করেছেন, “পোর্টালটি স্বচ্ছতা এনেছে, তবে কিছু কলেজ এখনও তাদের মেধা তালিকা প্রকাশে দেরি করছে। এটি সমাধান করা প্রয়োজন।”

ভিন রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহণ নিয়ে শিক্ষাবিদরা উৎসাহ প্রকাশ করেছেন। একজন অধ্যাপক বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের কলেজগুলি এখন জাতীয় স্তরে প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠছে। ভিন রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের আগ্রহ আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতির প্রমাণ।”

সরকার ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের ভূমিকা

পশ্চিমবঙ্গের (admission) উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু এই পোর্টালের সাফল্যে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “আমাদের লক্ষ্য ছিল ভর্তি প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ ও সুবিন্যস্ত করা। ২৮,৪৪৩ জন ছাত্রছাত্রীর নথিভুক্তি এবং ৭১,৯৪৯টি আবেদন এই পোর্টালের জনপ্রিয়তা ও কার্যকারিতার প্রমাণ। আমরা ভিন রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের আগ্রহে উৎসাহিত।” তিনি আরও জানান, সরকার পোর্টালের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং ব্যবহারকারী অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কাজ করে যাচ্ছে।

উচ্চশিক্ষা বিভাগ জানিয়েছে, তারা ভর্তি প্রক্রিয়ার পরবর্তী ধাপগুলি, যেমন মেধা তালিকা প্রকাশ এবং কাউন্সেলিং, যথাসময়ে সম্পন্ন করার জন্য কলেজগুলির সঙ্গে সমন্বয় করছে। এছাড়া, ছাত্রছাত্রীদের জন্য স্কলারশিপ এবং আর্থিক সহায়তার তথ্যও পোর্টালে যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

ভারতীয় যুদ্ধবিমানগুলি ব্রহ্মোসের চেয়েও মারাত্মক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে সজ্জিত হবে

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

উচ্চশিক্ষা (admission) বিভাগ ভবিষ্যতে এই পোর্টালের মাধ্যমে স্নাতকোত্তর এবং ডিপ্লোমা কোর্সের ভর্তি প্রক্রিয়াও অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা করছে। এছাড়া, পোর্টালে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ভিত্তিক কোর্স সুপারিশ ব্যবস্থা এবং ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং সুবিধা যুক্ত করার কথা বিবেচনা করা হচ্ছে। এই উদ্যোগগুলি ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাগত ও পেশাগত পরিকল্পনায় আরও সহায়তা করবে।

পশ্চিমবঙ্গের উচ্চশিক্ষা বিভাগের সেন্ট্রালাইজড অনলাইন পোর্টাল ভর্তি প্রক্রিয়ায় একটি নতুন যুগের সূচনা করেছে। ২৮,৪৪৩ জন ছাত্রছাত্রীর নথিভুক্তি এবং ৭১,৯৪৯টি আবেদন এই পোর্টালের সাফল্য ও গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ। ভিন রাজ্যের ২৫১ জন ছাত্রছাত্রীর অংশগ্রহণ পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থার জাতীয় আকর্ষণ বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়।

তবে, গ্রামাঞ্চলের ডিজিটাল অবকাঠামো (admission) উন্নয়ন এবং প্রযুক্তিগত সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে এই পোর্টালকে আরও কার্যকর করা প্রয়োজন। আগামী দিনে এই পোর্টাল উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গকে একটি অগ্রণী রাজ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।