খিদিরপুর অগ্নিকান্ডে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা মমতার

খিদিরপুর বাজারে রবিবার গভীর রাতে ঘটে যাওয়া বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (mamata)…

mamata in khidirpur

খিদিরপুর বাজারে রবিবার গভীর রাতে ঘটে যাওয়া বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (mamata) । তিনি ক্ষতিপূরণ হিসেবে আর্থিক সাহায্য এবং নতুন বাজার নির্মাণের ঘোষণা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, যাদের দোকান সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে, তাদের প্রত্যেককে ১ লক্ষ টাকা এবং যাদের দোকান আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

এছাড়াও, (mamata) কলকাতা মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের (কেএমসি) তত্ত্বাবধানে নতুন বাজার নির্মাণ করা হবে, যা বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, ক্ষতিপূরণ বিতরণের আগে সঠিক সমীক্ষা করা হবে, যাতে সঠিক ব্যক্তিরা সাহায্য পান এবং কোনও অনিয়ম না হয়। যতদিন ক্ষতিপূরণ এসে না পৌঁছয় বাজারের দোকানদার দের জন্য ১০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হবে যাতে তারা সংসার চালাতে পারে।

   

অগ্নিকাণ্ডের ভয়াবহতা

রবিবার গভীর রাতে খিদিরপুর বাজারে (mamata) আগুন লাগার ঘটনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাজারে এক হাজারেরও বেশি দোকান ছিল, যার মধ্যে অন্তত ৪০০টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। কিছু সূত্রে দাবি করা হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত দোকানের সংখ্যা ১৩০০-এর কাছাকাছি। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, আগুনে নগদ টাকা, প্রয়োজনীয় নথিপত্র এবং কয়েক লক্ষ টাকার মূল্যবান জিনিসপত্র পুড়ে গেছে। তেলের গুদামে আগুন লাগার কারণে শিখা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, যা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়িয়েছে।

স্থানীয়রা (mamata) জানিয়েছেন, দমকল বাহিনীকে ঘটনার খবর দেওয়ার পরেও তারা প্রায় তিন ঘণ্টা দেরিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এই বিলম্বের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশি সময় লেগেছে, ফলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বেড়েছে। সোমবার সকাল পর্যন্ত দমকল বাহিনী পকেট ফায়ার নেভানোর কাজ চালিয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা (mamata)

অগ্নিকাণ্ডের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (mamata) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, “খিদিরপুর বাজারের ব্যবসায়ীরা আমাদের পরিবারের সদস্য। তাদের এই দুর্দিনে আমরা পাশে আছি। যাদের দোকান সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে, তাদের ১ লক্ষ টাকা এবং যাদের দোকান আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।”

তিনি আরও জানান, কলকাতা মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে নতুন বাজার নির্মাণ করা হবে, যা আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে তৈরি হবে। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে মমতা দোকানদারদের উদ্দেশ্যে বলেন তারা যেন গ্যাসের সিলিন্ডার মাঝে মাঝে পরীক্ষা করে যাতে এই ধরণের দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (mamata) জোর দিয়ে বলেন, “ক্ষতিপূরণ বিতরণের আগে আমরা একটি বিজ্ঞানসম্মত সমীক্ষা করব। এই সমীক্ষার মাধ্যমে সঠিক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করা হবে। আমরা চাই না যে কোনও অন্যায় ব্যক্তি এই সাহায্য পাক।” তিনি স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে দ্রুত সমীক্ষা শুরু হয় এবং ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা হয়।

নতুন বাজার নির্মাণের পরিকল্পনা

মুখ্যমন্ত্রী (mamata) জানিয়েছেন, খিদিরপুর বাজার পুনর্নির্মাণের দায়িত্ব কলকাতা মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের উপর দেওয়া হবে। এই নতুন বাজার আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সহ তৈরি করা হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের অগ্নিকাণ্ড রোধ করা যায়। তিনি বলেন, “বাজারটি এমনভাবে তৈরি করা হবে, যাতে আগুনের ঝুঁকি কম থাকে।

আমরা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করব এবং নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দেব।” দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু জানিয়েছেন, বাজারের অনেক দোকান বেআইনিভাবে নির্মিত হয়েছিল এবং নিরাপত্তা বিধি মানা হয়নি। তিনি বলেন, “আমরা কাউকে দোষারোপ করছি না। তবে নতুন বাজার নির্মাণের সময় সব নিয়ম মেনে চলা হবে।”

স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া

অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা মুখ্যমন্ত্রীর (mamata) এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে, অনেকে দ্রুত ক্ষতিপূরণ বিতরণ এবং বাজার পুনর্নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন। একজন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী বলেন, “আমরা সব হারিয়েছি।

Advertisements

মুখ্যমন্ত্রীর (mamata) ঘোষণা আমাদের জন্য আশার আলো। তবে আমরা চাই, দ্রুত সাহায্য পৌঁছাক।” আরেকজন ব্যবসায়ী বলেন, “আমাদের জীবিকা এই বাজারের উপর নির্ভরশীল। নতুন বাজার তৈরি না হওয়া পর্যন্ত আমরা কীভাবে চলব?” স্থানীয়রা দমকল বাহিনীর বিলম্ব নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাদের অভিযোগ, দমকল আরও তাড়াতাড়ি পৌঁছলে ক্ষতির পরিমাণ কম হতো।

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে জোর! ডুয়ার্সের জাতীয় উদ্যান তিন মাসের জন্য বন্ধ

তদন্ত ও কারণ অনুসন্ধান

অগ্নিকাণ্ডের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। দমকল বিভাগ জানিয়েছে, আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসার পর কুলিং অফ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। এরপর তদন্ত শুরু হবে, যাতে আগুনের কারণ চিহ্নিত করা যায়। স্থানীয়দের ধারণা, তেলের গুদাম এবং দাহ্য পদার্থের মজুত আগুন ছড়িয়ে পড়ার অন্যতম কারণ।

মুখ্যমন্ত্রী (mamata) নির্দেশ দিয়েছেন, তদন্তে কোনও ত্রুটি রাখা যাবে না। তিনি বলেন, “আমরা জানতে চাই, কীভাবে এই ঘটনা ঘটল। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

অগ্নিকাণ্ড (mamata) এবং মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষতিপূরণ ঘোষণা রাজনৈতিক বিতর্কেরও জন্ম দিয়েছে। বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদার বলেন, “তৃণমূল সরকারের অধীনে এ ধরনের ঘটনা বারবার ঘটছে। ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়েছে, কিন্তু এটা কি সঠিক মানুষের কাছে পৌঁছাবে? আমরা সরকারের কাজের উপর নজর রাখব।” তিনি আরও বলেন, “বাজারে নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাবই এই ক্ষতির মূল কারণ।” তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম পাল্টা জবাবে বলেন, “বিজেপি শুধু সমালোচনা করে। মুখ্যমন্ত্রী দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছেন। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছি।”

ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ

মুখ্যমন্ত্রীর (mamata) ঘোষণা অনুযায়ী, ক্ষতিপূরণ বিতরণের জন্য দ্রুত সমীক্ষা শুরু হবে। কলকাতা মিউনিসিপাল কর্পোরেশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে বাজার পুনর্নির্মাণের কাজ দ্রুত শুরু হয়। এছাড়াও, রাজ্য সরকার অন্যান্য বাজারে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটি গঠন করতে পারে।

এই ঘটনা বাংলার ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের জন্য একটি বড় ধাক্কা। মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষতিপূরণ এবং পুনর্নির্মাণের প্রতিশ্রুতি ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আশার আলো হলেও, এই প্রক্রিয়ার দ্রুত বাস্তবায়ন এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।