মুম্বই, ১১ জুন ২০২৫: বলিউডের কুইন দীপিকা পাড়ুকোন (Deepika Padukone) ২০১৭ সালে তাঁর হলিউড অভিষেক xXx: Return of Xander Cage-এর মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী দর্শকদের মন জয় করেছিলেন। ভিন ডিজেলের সঙ্গে তাঁর জুটি এবং সেরেনা উঙ্গারের চরিত্রে তাঁর দুর্দান্ত অভিনয় ছবিটিকে বিশ্বব্যাপী ৩৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি আয় করে দিয়েছিল। তবে, এই সাফল্যের পর দীপিকা কেন আর কোনো হলিউড প্রকল্পে অংশ নেননি, তা নিয়ে সম্প্রতি তাঁর সাক্ষাৎকারে আলোকপাত করা হয়েছে। তাঁর বৈশ্বিক আবেদন এবং বলিউড ও আন্তর্জাতিক সিনেমার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ভক্তরা এখন উৎসুক হয়ে উঠেছেন তাঁর পরবর্তী হলিউড প্রকল্প বা ক্রসওভার ওটিটি সিরিজে অংশগ্রহণের সম্ভাবনা নিয়ে।
দীপিকা তাঁর সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি সিনেমাকে ভারতীয় বা আন্তর্জাতিক হিসেবে বিবেচনা করেন না, বরং এটিকে নিজেকে প্রকাশ করার মাধ্যম হিসেবে দেখেন। তিনি বলেন, “আমার জন্য গল্প এবং চরিত্রই মুখ্য। আমি xXx-এ অংশ নিয়েছিলাম কারণ সেরেনা উঙ্গারের চরিত্রটি অত্যন্ত শক্তিশালী এবং প্রভাবশালী ছিল। আমি হলিউডে সক্রিয়ভাবে কিছু খুঁজছি না, তবে ভালো গল্প পেলে ভারত বা বিদেশ যেখানেই হোক, আমি তা গ্রহণ করতে প্রস্তুত।” এই দৃষ্টিভঙ্গি তাঁর কাজের প্রতি নিষ্ঠা এবং গল্পের গুণমানের প্রতি তাঁর প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করে।
xXx: Return of Xander Cage ছিল দীপিকার প্রথম হলিউড প্রকল্প, যেখানে তিনি ভিন ডিজেলের সঙ্গে অ্যাকশন-প্যাকড দৃশ্যে মুগ্ধ করেছিলেন। ছবিটি চীনে ১৬৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছিল, যা এর বৈশ্বিক সাফল্যের একটি বড় অংশ। দীপিকার চরিত্র সেরেনা ছিল একজন সাহসী এবং স্বাধীন নারী, যিনি ভিন ডিজেলের নেতৃত্বাধীন দলের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ মিশনে যোগ দিয়েছিলেন। ভিন ডিজেল নিজে দীপিকার প্রশংসা করে বলেছিলেন, “তিনি একজন অসাধারণ প্রতিভা এবং তাঁর সঙ্গে কাজ করা আমার জন্য আনন্দের ছিল।” তিনি এমনকি দীপিকাকে “পরবর্তী বৈশ্বিক সুপারস্টার” হিসেবে অভিহিত করেছিলেন।
তবে, xXx-এর পর দীপিকা হলিউডে কোনো নতুন প্রকল্পে যোগ দেননি। তিনি বলেছেন, তিনি এমন চরিত্র এবং গল্প খুঁজছেন যা তাঁকে চ্যালেঞ্জ করে এবং তাঁর অভিনয় দক্ষতা প্রকাশের সুযোগ দেয়। তাঁর এই দৃষ্টিভঙ্গি ভক্তদের মধ্যে জল্পনা তৈরি করেছে যে তিনি হয়তো কোনো বড় হলিউড প্রকল্প বা ক্রসওভার ওটিটি সিরিজে অংশ নিতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, xXx ফ্র্যাঞ্চাইজির চতুর্থ কিস্তির কথা উঠেছিল, যেখানে দীপিকার ফিরে আসার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। যদিও এই প্রকল্পটি এখনও পুরোপুরি উৎপাদন পর্যায়ে পৌঁছায়নি, ভিন ডিজেল এবং পরিচালক ডি.জে. কারুসো নিশ্চিত করেছেন যে প্রধান কাস্ট ফিরে আসতে পারে।
দীপিকার বলিউড ক্যারিয়ারও এই সময়ে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। ২০২৩ সালে তিনি পাঠান এবং জওয়ান-এ শাহরুখ খানের সঙ্গে অভিনয় করে বক্স অফিসে ১০০০ কোটি টাকার বেশি আয় করেছেন। ২০২৪ সালে ফাইটার এবং কল্কি ২৮৯৮ এডি-তে তাঁর অভিনয় সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে। তাঁর নিজস্ব প্রযোজনা সংস্থা কা প্রোডাকশনের মাধ্যমে তিনি ছাপাক এবং ৮৩-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ ছবি প্রযোজনা করেছেন, যা তাঁর বহুমুখী প্রতিভার প্রমাণ।
সম্প্রতি, দীপিকার একটি সম্ভাব্য ক্রসওভার ওটিটি সিরিজে অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা চলছে। ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলোর ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার সঙ্গে, দীপিকার মতো একজন বৈশ্বিক তারকার জন্য একটি আন্তর্জাতিক সিরিজে অভিনয় করা অবাক করার মতো নয়। তিনি হয়তো এমন একটি প্রকল্প বেছে নিতে পারেন যেখানে ভারতীয় এবং পশ্চিমা গল্প বলার শৈলী মিলিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার কোয়ান্টিকো-র মতো একটি সিরিজে দীপিকার অংশগ্রহণ দর্শকদের জন্য আকর্ষণীয় হতে পারে।
দীপিকার বৈশ্বিক আবেদন তাঁর সামাজিক মাধ্যমেও প্রতিফলিত হয়। তাঁর ইনস্টাগ্রামে ভিন ডিজেলের সঙ্গে ছবি ভাইরাল হয়েছিল, এবং তাঁর হলিউড যাত্রা ভারতীয় দর্শকদের গর্বিত করেছিল। তিনি বলেছেন, “আমি আমার দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে গর্বিত, বিশেষ করে এমন একটি অ্যাকশন ফ্র্যাঞ্চাইজিতে।” ভক্তরা এখন অপেক্ষায় আছেন তাঁর পরবর্তী বড় হলিউড প্রকল্পের জন্য, যা তাঁর ক্যারিয়ারকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে।