Surgical strike planning: বর্তমানে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি কোনও সশস্ত্র সংঘর্ষ না থাকলেও সীমান্তে উত্তেজনা কমেনি। এমন পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং (Rajnath Singh)-এর নেতৃত্বে বাহিনী প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক হওয়াকে ঘিরে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা। প্রতিরক্ষা মহলের অনেকেই মনে করছেন, এটি নিছক রুটিন বৈঠক নয়—বরং এর পিছনে রয়েছে কৌশলগত উদ্দেশ্য।
জানা গিয়েছে, সোমবার হওয়া এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ (CDS) জেনারেল অনিল চৌহান, সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী, নৌসেনা প্রধান অ্যাডমিরাল দীনেশ কে ত্রিপাঠী এবং প্রতিরক্ষা সচিব রাজেশ কুমার সিং। প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে চলা এই বৈঠকে সীমান্ত পরিস্থিতি, পাকিস্তানের বর্তমান ভূরাজনৈতিক অবস্থান, এবং ভবিষ্যতের সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেই সূত্রের খবর।
কৌশলগত পটভূমি
উল্লেখযোগ্যভাবে, কিছুদিন আগেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ মন্তব্য করেন যে, তাঁর দেশ অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে এবং ভারতের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক চান। কিন্তু পাশাপাশি পাক সেনা ও ISI-র তরফে জঙ্গি অনুপ্রবেশ ও অস্ত্র পাচার অব্যাহত রয়েছে। কাশ্মীর সীমান্তে ড্রোনের মাধ্যমে অস্ত্র ও মাদক সরবরাহের প্রবণতা বেড়েছে।
এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক ও সেনাবাহিনী যথেষ্ট সতর্ক। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমান বৈঠক একটি স্পষ্ট বার্তা দিতে চায়—যে ভারত শুধু সতর্কই নয়, প্রয়োজনে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত।
“সার্জিক্যাল স্ট্রাইক” পুনরাবৃত্তির সম্ভাবনা?
২০১৬ সালে উরির হামলার পর ভারত প্রথমবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালায়। এরপর ২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলার জবাবে বালাকোটে এয়ার স্ট্রাইক চালায় ভারতীয় বায়ুসেনা। এই দুই অভিযানের মাধ্যমে ভারত পাকিস্তানকে স্পষ্ট বার্তা দেয় যে, সন্ত্রাসবাদ মেনে নেওয়া হবে না।
বর্তমান বৈঠককে কেন্দ্র করে প্রশ্ন উঠছে, ভারত কি আবারও সেই রাস্তায় হাঁটতে চলেছে? যদিও সরকারিভাবে কিছু বলা হয়নি, তবে প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এমন কিছুর সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
নির্বাচনী আবহে নতুন কৌশল?
ভারতের প্রেক্ষাপটে, বর্তমানে নির্বাচনী পরিবেশ চলছে। এই সময় নিরাপত্তা ও কৌশলগত বিষয়গুলো রাজনৈতিক গুরুত্বও পায়। অনেকে মনে করছেন, রাজনাথ সিংয়ের এই বৈঠক নির্বাচনকে কেন্দ্র করেও হতে পারে, যাতে দেশের নিরাপত্তা নিয়ে জনগণের আস্থা আরও দৃঢ় করা যায়। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, কেবল রাজনৈতিক লাভের জন্য এমন উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয় না, এর পিছনে নিশ্চয়ই বাস্তব কোনও নিরাপত্তাজনিত কারণ রয়েছে।