বাংলার আনাচেকানাচে রয়েছেন বহু ফুটবলার (Bengal Footballers)। দুটো গোল পোস্ট, একটা বল। ফুটবল খেলার জন্য আর কী চাই? চাই আরও অনেক কিছু। ফুটবলার হিসেবে কেরিয়ার গড়ার জন্য দরকার আরও অনেক কিছু। বিশেষত সুষম আহার। বিজ্ঞানের পরিভাষায় যাকে বলা হয় ডায়েট। দুর্ভাগ্যবশত বাংলার ফুটবলারদের অনেকের থালায় প্রয়োজনীয় আহার গিয়ে পৌঁছায় না। তা সত্বেও ফুটবলার তৈরির অ্যাকাডেমিগুলো কিন্তু থেমে নেই। উঠতি ফুটবলাররা নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছেন হাল।
আদিবাসী ফুটবলারদের প্রতিভা বিকাশে জন্য কাজ করছে পুরুলিয়ার মানবাজারে অবস্থিত বিবেকানন্দ ফুটবল অ্যাকাডেমি। ডক্টর প্রশান্ত মাহাতো অ্যাকাডেমি সভাপতি। গ্রামের আশেপাশের বহু আদিবাসী ছেলেমেয়ে ফুটবল প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকেন এই ক্লাবে। একটা ক্লাব ভালোভাবে চালানোর জন্য কতটা রসদ দরকার হয় সেটা ময়দান ঘনিষ্ঠরা জানেন। বিবেকানন্দ ফুটবল অ্যাকাডেমি সহ রাজ্যের বেশিরভাগ অ্যাকাডেমিতে নেই উপযুক্ত পরিকাঠামো। তার মধ্যেও চলছে উঠতি ফুটবলারদের বড় করার কাজ। প্রয়োজনে ছেলেরা মাটি কুপিয়ে জমি তৈরি করছেন, চাষ করছেন।
বিবেকানন্দ ফুটবল অ্যাকাডেমির ছাত্ররা জমি তৈরি করে আলু চাষ করেছেন এবার। ইতিমধ্যে দশ বস্তা আলু তোলা হয়েছে। কষ্ট হলেও জীবন সংগ্রামের এই পর্যায়ে রয়েছে কিছু করে দেখানোর অদম্য জেদ।
অ্যাকাডেমির ম্যানেজার রবিলোচন মাহাতো বলেছেন, “চাষ করার মাধ্যমে আমাদের প্রয়োজনীয় শারীরিক কসরত হচ্ছে। যে আলু চাষ করা হচ্ছে তার সাহায্যে ছাত্রদের প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগান দেওয়ার বিকল্প তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। এর আগেও আমরা কৃষি কাজের সাহায্যে নিয়েছি। যে আলু চাষ হচ্ছে সেটা বাজারে বিক্রি করে দু-পয়সা লাভ হচ্ছে। সিজন অনুযায়ী আলুর দাম ওঠানামা করে।”
“আশেপাশের এলাকা থেকে আদিবাসী ছেলেমেয়েরা আমাদের এখানে আসে। তাদের ফুটবলার হিসেবে তৈরি করার জন্য সাধ্য মতো আমরা চেষ্টা করছি। চাষের কাজে অ্যাকাডেমির সবাই আমরা হাত লাগাই। এতে একে অন্যের সঙ্গে বোঝা পড়া তৈরি হচ্ছে আমাদের মধ্যে”, জানিয়েছেন রবিলোচন মাহাতো।
বাংলার ফুটবলে বিবেকানন্দ ফুটবল অ্যাকাডেমির ভুমিকা রয়েছে যথেষ্ট। কলকাতা ফুটবল লীগে অ্যাকাডেমির বহু ছেলে অংশ নিচ্ছেন। রবিলোচনবাবু জানিয়েছেন, “কলকাতা ফুটবল লীগের গত দুই মরসুমে আমাদের মোট ১৭ জন ছেলে অংশ নিয়েছিল।” শুধু কলকাতা ফুটবল লীগ নয়, রাজ্য স্তরেও প্রতিনিয়ত নিজেদের উপস্থিতির কথা জোরালোভাবে জানান দিচ্ছে পুরুলিয়ার বিবেকানন্দ ফুটবল অ্যাকাডেমি।