তানাশাহি নেহি চলেগি (একনায়কতন্ত্র চলবে না) বলে সংসদ ভবনের অধিবেশন কক্ষে স্মোক বম্ব হামলায় (Parliament Security) জড়িত চার জনকে তদন্তের স্বার্থে পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ। ধৃতরা সবাই ভগত সিং ফ্যান ক্নাব সদস্য বলে তদন্তে উঠে এসেছে।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার দিল্লির পাতিয়ালা হাউস কোর্ট লোকসভায় নিরাপত্তা লঙ্ঘনের জন্য গ্রেফতার করা চার অভিযুক্তকে সাত দিনের জন্য দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেলের হেফাজতে পাঠিয়েছে।
চার অভিযুক্ত- মনোরঞ্জন ডি, সাগর শর্মা, অমল শিন্ডে এবং নীলম দেবীকে দিল্লি পুলিশ বিশেষ বিচারক হরদীপ কৌরের সামনে হাজির করা হয়। পুলিশের তরফে 15 দিনের জন্য হেফাজতে চাওয়া হয়। আদালত সাত দিনের হেফাজত নির্দেশ দেয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইন (ইউএপিএ) এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির (আইপিসি) বিভিন্ন ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযুক্তদের পরে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল অফিসে নিয়ে আসা হয়।
এই গোষ্ঠির মূল পরিকল্পনাকারী ললিত ঝা ও তার সার্কেলের একাধিক ব্যক্তি পশ্চিমবঙ্গে থাকে। ললিত পলাতক। বাকিদের জেরা চলছে। তদন্তে উঠে আসছে মাওবাদী সংযোগ।
বুধবার লোকসভার অধিবেশনে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সাংসদ (মালদা উত্তর কেন্দ্র) খগেন মুর্মু তার বক্তব্য রাখছিলেন। ঠিক তখনইদর্শক আসন থেকে লোকসভার চেম্বারে ঝাঁপিয়ে পড়ে স্মোক বম্ব ছোঁড়া দুজনের একজন মনোরঞ্জন ডি। সংসদ ভবন ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। তদন্তে জানা যাচ্ছে মনোরঞ্জন ‘ভগত সিং ফ্যান ক্লাব’ নামে একটি সোশ্যাল মিডিয়া পেজের সাথে যুক্ত।
পুলিশ জানিয়েছে যেভাবে পরাধীন দেশে কেন্দ্রীয় আইনসভাতে (Central Assembly) বিপ্লবী ভগৎ সিং ও বটুকেশ্বর দত্ত ধোঁয়ার বোমা নিক্ষেপ করে ব্রিটিশ শাসনকে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন সেইরকম পথ নিয়েছিল দুই হামলাকারী। বিপ্লবী ভগত সিংয়ের অনুপ্রেরণায় সংসদ অধিবেশনে স্নোক বম্ব ছুঁড়েছিল মনোরঞ্জন ডি। পুলিশ কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন যে মনোরঞ্জন একজন “বিপ্লবী ধরনের” বলে মনে করা হচ্ছে।
নীলম দেবী যে বুধবার সংসদের বাইরে প্রতিবাদ করছিল, সে ভগত সিংয়ের ছবি সহ নিজের একটি ছবি পোস্ট করে। নীলম এই বছরের শুরুতে দিল্লিতে হওয়া কুস্তিগীরদের প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিল বলে জানা যাচ্ছে। সংসদে হামলার আগে X (পূর্বে টুইটারে) তার শেষ পোস্টে নীলম প্রশ্ন করে কেন সংসদ এবং বিধানসভায় মহিলাদের জন্য ৫০ শতাংশ কোটা নেই।
বুধবার, ২০০১ সালের সংসদে জঙ্গি হামলার বার্ষিকীতে , একটি বড় নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে। মনোরঞ্জন এবং তার সহযোগী সাগর শর্মা জিরো আওয়ারে পাবলিক গ্যালারি থেকে লোকসভার চেম্বারে ঝাঁপ দেয়। এরপর তারা স্লোগান দেয়, এবং ক্যানিস্টার থেকে হলুদ গ্যাস স্প্রে করে। এরপরই কিছু সাংসদ তাদের ধরে ফেলে। একই সাথে, নীলম এবং অন্য অভিযুক্ত, অমল শিন্ডেপার্লামেন্টের বাইরে প্রতিবাদ করে, ক্যানিস্টার থেকে রঙিন গ্যাস স্প্রে করে এবং সংসদ চত্বরের বাইরে “তানাশাহি নাহি চলেগি (স্বৈরাচার চলবে না)” বলে চিৎকার করে। এই চারজন সহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং কঠোর সন্ত্রাসবিরোধী আইনে (anti-terror laws) অভিযুক্ত করা হয়েছে।