Burmese Python: যত খুশি অজগর মারো, কেন এমন বিচিত্র প্রতিযোগিতা চলছে আমেরিকায়?

পৃথিবীতে অনেক আশ্চর্যের মতন ঘটনা আছে যা অনেকেরই অজানা। তারই মধ্যে পড়ে যত খুশি সাপ মারার প্রতিযোগিতা। এমন অদ্ভুত রীতি রয়েছে এই জগতেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের…

Jalpaiguri-Python

পৃথিবীতে অনেক আশ্চর্যের মতন ঘটনা আছে যা অনেকেরই অজানা। তারই মধ্যে পড়ে যত খুশি সাপ মারার প্রতিযোগিতা। এমন অদ্ভুত রীতি রয়েছে এই জগতেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার বর্মিজ পাইথন (Burmese python) জাতীয় অজগর সাপ। তাদের সংখ্যা এতটাই বেড়ে গেছে যে সাপ মারার জন্য শিকারীদের উৎসাহিত করা হয়। বছরে একবার একটি পাইথন নিধন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এমন সাপ মারার রীতি প্রায় এক দশক ধরে চলে আসছে।

বিরাট আকারের পাইথন সাপ নিধন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আসেন হাজার হাজার মানুষ। শুধু যুক্তরাষ্ট্র থেকেই নয়, বাইরের নানা দেশ থেকেও লোক আসে সাপ নিধন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে।  কেন করা হয় এই সাপ-নিধন প্রতিযোগিতা? বার্মিজ পাইথন নামের এই অজগর  থাকে ফ্লোরিডার দক্ষিণাঞ্চলের ‘এভারগ্লেড’ নামে জলজ তৃণভূমিতে। এই সাপ বিশাল বড়। পূর্ণবয়স্ক অবস্থায় ১৯-২০ ফুট পর্যন্ত লম্বা এবং ওজনে ৯০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে এই সাপ। বার্মিজ পাইথন একটা আস্ত ঘড়িয়াল বা এ্যালিগেটর পর্যন্ত গিলে ফেলতে পারে

   

এভারগ্লেড অঞ্চলে এই সাপের সংখ্যা সাংঘাতিকভাবে বেড়ে গেছে। ফলে তারা তাদের খিদে মেটাতে অন্যান্য প্রজাতির প্রাণী শিকার করে খেয়ে ফেলছে। এর জন্য অনেক প্রজাতির প্রাণী বিলুপ্তির মুখে। এভারগ্লেড অঞ্চলে থাকে র্যা কুন, খরগোশ এবং পোসুম। তবে এইসব প্রাণীর ৯০% এর বেশি এই বার্মিজ পাইথনের পেটে গেছে বা প্রায় সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তবে এই বার্মিজ পাইথন কিন্তু এখানকার স্থানীয় সাপই নয়। বিংশ শতাব্দীতে পোষ্য হিসেবে এই সাপের ফ্লোরিডায় আবির্ভাব। এরপর তা ছড়িয়ে পড়ে সেখানকার বনভূমিতে। এরপর আসতে আসতে বিলুপ্ত হতে থাকে স্থানীয় প্রাণীরা। এদের খাবারের তালিকায় পাখী, ইঁদুরজাতীয় প্রাণী, খরগোষ, আর অন্য সরীসৃপ তো আছেই – এমনকি হরিণ ও ঘড়িয়াল (এ্যালিগেটর) পর্যন্ত খেয়ে ফেলতে পারে এই সাপ। স্থানীয় প্রাণী সংরক্ষণবিদদের মতে বর্মিজ পাইথনের ফলে এভারগ্লেড এলাকার প্রাণীবৈচিত্রের গুরুতর ক্ষতি হচ্ছে। এই সাপের সংখ্যা কমানোর জন্যই এই বার্ষিক অজগর-নিধন প্রতিযোগিতা প্রয়োজন।

মার্কিন ফেডারেল কর্তৃপক্ষ ২০১২ সালে বর্মিজ পাইথন আমদানি নিষিদ্ধ করে। এর এক বছর পর শুরু হয় পাইথন চ্যালেঞ্জ নামে এই সাপ মারার প্রতিযোগিতা। একজন কতগুলো পাইথন মারতে পারবে তার ওপর কোন বিধিনিষেধ নেই। প্রতিযোগীদের ২৫ ডলার দিতে হয় এবং ৩০ মিনিটের একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শেষ করতে হয়। সাপটি মারার পর তা বিক্রি করা যায় বা নিজের কাছেও রাখা যায়।

তবে কিছু প্রাণী অধিকার সংগঠন অবশ্য এর সমালোচনা করেছে। তাদের দাবি মানবিক উপায়ে এবং শুধু পেশাদার শিকারীদের দিয়ে এই সাপের সংখ্যা কমানো হোক। তবে এই নিধন-প্রক্রিয়ার কী ফল হচ্ছে তা এখনও অবধি খুব একটা স্পষ্ট নয়।