বাংলাদেশের খাদ্যসঙ্কটে ‘সহায়’ ইসলামাবাদ! এক লক্ষ টন চাল রফতানির পথে পাকিস্তান

Pakistan rice export Bangladesh

বাংলাদেশের চালের বাজার যখন ক্রমাগত অস্থির, তখনই ইসলামাবাদের তরফে উঠল বড় পদক্ষেপ। বাংলাদেশে রফতানির উদ্দেশ্যে এক লক্ষ টন চাল কিনতে জাতীয় দরপত্র আহ্বান করেছে পাকিস্তান সরকার। গত বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রায়ত্ত ট্রেডিং কর্পোরেশন অফ পাকিস্তান (TCP) দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। আগামী শুক্রবারের মধ্যেই অফার জমা দিতে হবে।

Advertisements

সরকারি সূত্রে স্পষ্ট— চাল ক্রয়ের এই উদ্যোগ শুধু বাজারচাহিদার প্রতিক্রিয়া নয়, বরং ঢাকা–ইসলামাবাদ সম্পর্কে নতুন উষ্ণতারও ইঙ্গিত বহন করছে। শেখ হাসিনার প্রশাসনের সময়ে দুই দেশের সরাসরি বাণিজ্য কার্যত স্তব্ধ ছিল। কিন্তু তাঁর পতনের পর এই বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে ফের চালু হয়েছে দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক, এবং সেই সময় থেকেই কয়েক দফায় পাকিস্তান থেকে মোট ৫০ হাজার টন চাল আমদানি করেছে বাংলাদেশ। এখন তার প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ চাল পাঠাতে প্রস্তুত হচ্ছে শাহবাজ় শরিফের প্রশাসন।

   

বাংলাদেশি বাজারে দাম লাগামছাড়া

বাংলাদেশের খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির পরিসংখ্যান বলছে—
গত বছরের অক্টোবরের তুলনায় এই বছরের অক্টোবরে দেশে মোটা, মাঝারি ও সরু — তিন শ্রেণির চালেরই মূল্য বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।
• মোটা চাল: ৫২.৪৩ টাকা (BDT) প্রতি কেজি
• মাঝারি চাল: ৬২.৪৩ টাকা (BDT)
• সরু দানার চাল: ৭৭.১০ টাকা (BDT)

ট্রেডিং কর্পোরেশন অফ বাংলাদেশ (TCB) আরও এক ধাপ এগিয়ে দাবি করেছে — বাজারে প্রকৃত মূল্য এর থেকেও বেশি। এই পরিস্থিতিতে বাজার থিতু রাখতে ক্রমাগত নতুন চাল আমদানির দরপত্র ডাকছে বাংলাদেশ। ঠিক এই সময়েই পাকিস্তানের রফতানি উদ্যোগ কৌশলগত দিক থেকেও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

Advertisements

কোন ধরণের চাল যাবে বাংলাদেশে Pakistan rice export Bangladesh

পাকিস্তান লম্বা দানার সাদা চাল কিনতে চাইছে, যা প্যাকেটজাত অবস্থায় করাচি বন্দর থেকে সমুদ্রপথে বাংলাদেশে পাঠানো হবে।

কূটনৈতিক প্রেক্ষাপটে দৃষ্টি আকর্ষণ

বিশেষজ্ঞদের মতে, “বাণিজ্যকে সেতু করে ইসলামাবাদ ঢাকার সঙ্গে নতুন যুগের সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাইছে।” হাসিনা-উত্তর অঞ্চলে দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক সমীকরণে বাংলাদেশ–পাকিস্তান সংযোগ নতুন করে গতিশীল হচ্ছে।

বাণিজ্যিক দূরত্ব কমার সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক মেরুকরণও কমবে কিনা, তা এখনই নিশ্চিত নয়। তবে বাস্তব পরিস্থিতি বলছে —চালের বাণিজ্যই দুই দেশের সম্পর্কে নতুন অধ্যায়ের দরজা খুলে দিচ্ছে।