Saudi Arabia: ফিলিস্তিনি ইস্যুতে শুরু আরবের তেল কূটনীতি, দাম বাড়বে জ্বালানির

আসছে শীত। বরফে ঢেকে যাবে ইউরোপ আমেরিকা এশিয়ার বিস্তির্ণ অংশ। তীব্র শীতের হাওয়ায় বহু দেশে জনজীবন কুঁকড়ে যাবে। দরকার জ্বালানি। এমনই মুহূর্তে তেলের বাজার গরম…

আসছে শীত। বরফে ঢেকে যাবে ইউরোপ আমেরিকা এশিয়ার বিস্তির্ণ অংশ। তীব্র শীতের হাওয়ায় বহু দেশে জনজীবন কুঁকড়ে যাবে। দরকার জ্বালানি। এমনই মুহূর্তে তেলের বাজার গরম করে দিল সৌদি আরব। প্রত্যাশিতভাবেই ফিলিস্তিনি ইস্যুতে আরব শুরু করল তেল কূটনীতি। রয়টার্সের খবর, আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সৌদি আরব ও রাশিয়া দিনে যথাক্রমে ১০ লক্ষ ও তিন লক্ষব্যারেল তেল কম উত্তোলন করবে। এর ফলে বিশ্ব তেল বাজার গরম হতে চলল। জ্বালানি মূল্যে আগুন ধরবে বলে মনে করা হচ্ছে।

ইজরায়েল ও হামাস সংঘর্ষের ইস্যু ধরে সৌদি আরব ও রাশিয়া বারবার ইজরায়েল বিরোধী অবস্থান নিয়েছে। তেল উত্তোলনে বিশ্বে অন্যতম রাশিয়া। তারাও এবার সৌদি আরবের পাশে এসে উত্তোলন কমানোর সিদ্ধান্ত নিল। অর্থনৈতিক বিশ্লেষনে বলা হচ্ছে, এবার ইজরায়েলকে তেলে মারার কাজ শুরু করলে প্যালেস্টাইনপন্থীরা।

বিশ্বে তেলের বাজারে স্থিতিশীলতা এবং ভারসাম্য আনতেই তেল উত্তোলন কমানোর সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে সৌদি। পরে রাশিয়াও তার সঙ্গে যোগ দিয়েছে। খবর রয়টার্সের। সম্প্রতি ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ওঠামানা করেছে। কারণ বিশ্বের মোট জ্বালানি তেলের প্রায় এক-তৃতীয়াংশই সরবরাহ হয় মধ্যপ্রাচ্য থেকে। আর ইরানের এই সংঘাতে সরাসরি জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।যদিও সংঘাত বাড়লে সৌদি আরব ও রাশিয়া এই পরিকল্পনার পরিবর্তন আনতে পারে বলে জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি। তবে আপততদৃষ্টিতে ওপেক প্লাস তেল উত্তোলন কম রাখতেই আগ্রহী।

বিশ্বের তেল রপ্তানিকারক দেশসমূহ এবং ওপেক প্লাসের এপ্রিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গত জুলাই মাস থেকে প্রতিদিন ১০ লক্ষ ব্যারেল তেল কম উত্তোলন করছে সৌদি আরব। সে কারণে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলারের উপরে পৌঁছে গিয়েছে। এ বছর সেপ্টেম্বরে অপরিশোধিত ব্রেন্ট তেলের দাম ব্যারেল প্রতি সবচেয়ে বেশি ছিল, ৯৮ ডলার। আর গত শুক্রবার ছিল ৮৫ ডলার। ওপেক প্লাসের জুনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০২৪ সালেও তেল উত্তোলন কমানো হবে।

সৌদি প্রেস এজেন্সির বিবৃতি অনুযায়ী, সৌদি আরব আগামী মাসে তাদের জ্বালানি তেলের উৎপাদনের পরিমাণ পর্যালোচনা করবে। পরে তারা বিবেচনা করবে তেল উত্তোলনের পরিমাণ বাড়ানো হবে, না কি কমানো হবে। পরে আলাদা এক বিবৃতিতে একই কথা জানিয়েছেন রাশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাক।

উল্লেখ্য, বিশ্বের শীর্ষ তেল উৎপাদনকারী দেশগুলো ‘দ্য অরগানাইজেশন অব দ্য পেট্রোলিয়াম কান্ট্রিস’ যা ওপেক নামে পরিচিত। আবার ওপেকের বাইরে অন্যান্য তেল উৎপাদনকারী দেশ ও ওপেকের সদস্যদের একত্রে ওপেক প্লাস নামে অভিহিত করা হয়।রয়টার্স জানিয়েছে, গত বছর থেকে ওপেক প্লাসের সদস্য রাষ্ট্রগুলো বিশ্ব জ্বালানি বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার স্বার্থে উৎপাদন কমিয়ে চলেছে।

ব্লুমবার্গ ইকোনমিকসের মতে, নিওম নামের একটি ব্যয়বহুল প্রকল্পের জন্য তেলের দাম ১০০ ডলারের মতো রাখা প্রয়োজন সৌদি আরবের। এদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনেরও ইউক্রেনের বিপক্ষে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে প্রয়োজন পেট্রোলিয়াম রাজস্বের।বছরের তৃতীয় কোয়ার্টারে এসে জ্বালানি খাত ১৭.৩ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। যা ২০১১ সালের পর সবচেয়ে বেশি। এর পেছনে মূল কারণ হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়ানোর জন্য তাদের তেল উৎপাদন কমিয়ে আনা।