Israel Hamas War: কে বলে গাজা বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন? সুড়ঙ্গ ধাঁধায় মাটির তলায় শক্তিধর হামাস

অবরুদ্ধ গাজা? আপাত দৃষ্টিতে সেটাই ঠিক। ভূপৃষ্ঠে গাজা অবরুদ্ধ হলেও তার বিস্তার ভূঅভ্যন্তরে। মাটির নিচে গাজার এক অন্য জগত রয়েছে। ৪০ কিলোমিটার লম্বা এবং ১০…

অবরুদ্ধ গাজা? আপাত দৃষ্টিতে সেটাই ঠিক। ভূপৃষ্ঠে গাজা অবরুদ্ধ হলেও তার বিস্তার ভূঅভ্যন্তরে। মাটির নিচে গাজার এক অন্য জগত রয়েছে। ৪০ কিলোমিটার লম্বা এবং ১০ কিলোমিটার চওড়া গাজা ভূখণ্ডের নিচে মাকড়সার জালের মত ছড়িয়ে আছে হামাসের সুড়ঙ্গ পথ যা ইজরায়েলি বাহিনীর অভিযানে (Israel Hamas War) বড় মাথাব্যথার বিষয়। গাজার অভ্যন্তরে এমন সুড়ঙ্গ পথের জাল ইজরায়েলের সেনার জন্য বিপদ। গাজায় ঢুকলে বিপদ এমন সতর্কবাতা আগেই পেয়েছে ইজরায়েল।

প্যালেস্টাইনের দুটি অংশ। একটি ওয়েস্ট ব্যাংক অন্যটি গাজা উপত্যকা। মাঝে আছে ইজরায়েল। গাজার মতো ছোট্ট ফিলিস্তিনি এলাকাটি অবরুদ্ধ বলে পরিচিত। এর একপাশে ইজরায়েল সীমান্ত। অন্যপাশে মিশর আর ভূমধ্যসাগর। গাজা থেকে বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য কয়েকটি চেকপোস্ট আছে। যেগুলো নিয়ন্ত্রণ করে ইজরায়েল ও মিশর সরকার। তবে মাটির তলা দিয়ে যে সুড়ঙ্গ পথ তৈরি করেছে গাজার শাসক হামাস গোষ্ঠি তার বিস্তৃতি ইরান পর্যন্ত বলে মনে করা হয়।

   

২০০৭ সালে হামাস প্রথম এই সুড়ঙ্গগুলি বানানো শুরু করে। তখন গাজা উপত্যকা এবং মিশরের মাঝামাঝি অংশে সাধারণ ফিলিস্তিনিদের জন্য দ্রব্য পণ্য সরবরাহ ছিলই মূল লক্ষ্য। ২০১৩ সালে ইজরায়েলমুখী সুড়ঙ্গ তৈরি করে হামাস। সেই সময় ইজরায়েলের লাগোয়া গাজা সীমান্তে কমপক্ষে তিনটি সুড়ঙ্গ নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে দুটি সুড়ঙ্গ বিস্ফোরক বোঝাই ছিল। ইজরায়েল সেনাদের ফাঁদে ফেলার এমন কৌশল নিত হামাস।

রিপোর্ট অনুযায়ী, সুড়ঙ্গগুলির কোনওটি কোনও বহুতল থেকে, কোনওটি আবার কোনও স্কুল এবং মসজিদ থেকে খনন হয়েছে। কোথা থেকে এই সুড়ঙ্গের শুরু এবং কোথায় শেষ, তা একমাত্র হামাস সদস্যরাই জানে। ইজরায়েল এবং মিশর এই সুড়ঙ্গ পথ ধ্বংসের চেষ্টা করলেও এগুলির বেশিরভাগ অংশ এখনো অক্ষত রয়েছে।

সিএসআইএফ এর বিশ্লেষক ড্যানিয়েল বাইম্যান জানিয়েছেন, হামাস সুড়ঙ্গ পথে ইরান থেকে বিস্ফোরক আনে। এর মধ্যে দূরপাল্লার অস্ত্রও থাকে। হামাস সহ সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো বিভিন্ন সময়ে সুড়ঙ্গে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র রকেট গোলাবারুদ লুকিয়ে রাখে। যোদ্ধাদের গোপন আশ্রয়স্থল হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। সাম্প্রতিক ঘটনার পরে বলা হচ্ছে অস্ত্র তৈরীর কারখানা রয়েছে এইসব টানেলের মধ্যে। মনে করা হচ্ছে, গত ৭ অক্টোবর ইজরায়েলে যে হামলা চালিয়েছিল হামাস, এই ধরনের সুড়ঙ্গ ব্যবহার করেই ঢুকেছিল তারা। বহির্জগতের কাছে এই সুড়ঙ্গ একটি রহস্য হয়েই রয়েছে।

ইজরায়েল বলছে তারা হামাসকে পৃথিবীর বুক থেকে নিশ্চিহ্ন করতে চায়। এটি করতে হলে তাদের এই গাজার সুড়ঙ্গ জাল ধ্বংস করতে হবে। হামাসরা বিবিসির প্রতিনিধি কোয়েন্টিন সোমারভিলকে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছিল এই ধরনের সুড়ঙ্গে। তিনি জানিয়েছেন, এই সুড়ঙ্গের একটি গাজা উপত্যকার দক্ষিণে অবস্থিত। ভূপৃষ্ঠের ৩০ মিটারের মতো গভীরে অবস্থিত এবং এর প্রবেশ মুখ বড় বাড়ি, স্কুল বা মসজিদের মধ্যে। ফলে এগুলো সাধারণ নাগরিকদের বিমান হামলার ঝুঁকিতে ফেলছে।

সুড়ঙ্গের গোলকধাঁধায় ঘেরা গাজা। এ সুড়ঙ্গ রহস্য সমাধান হামাস জানে। প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সুড়ঙ্গ পথগুলি থেকে দিনের পর দিন যুদ্ধ চালাতে পারে হামাস। মাটির নিচে তাদের লড়াই কৌশল চমকদার। ইজরায়েলের মতো উচ্চ প্রযুক্তি শক্তির অধিকারী সেনার কাছে সুড়ঙ্গগুলি একেবারেই অজানা।