Iran Hijab Row: হিজাব বিরোধী আমিনির মতো সংকটজন আরমিতা, খবর সংগ্রহে ধৃত সাংবাদিক

নীতি পুলিশের মার খেয়ে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ইরানি তরুণী আরমিতা গেরাভান্ডের (Armita Geravand)। তার অবস্থা সংকটজনক। ঠিক যেমনটা হয়েছিল ইরানি আমিনির ক্ষেত্রে। হিজাব না…

নীতি পুলিশের মার খেয়ে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ইরানি তরুণী আরমিতা গেরাভান্ডের (Armita Geravand)। তার অবস্থা সংকটজনক। ঠিক যেমনটা হয়েছিল ইরানি আমিনির ক্ষেত্রে। হিজাব না পরায় আমিনিকে বেদম মেরেছিল ইরানের নীতি পুলিশ। জখম আমিনির মৃত্যু হয় হাসপাতালে। এবার হিজাব বিরোধী আর্মিতার সর্বশেষ যে ছবি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে এসেছে তাতে বিশ্ব জুড়ে উদ্বেগ। ছবি থেকেই স্পষ্ট তিনি সংকটজনক। কোমায় চলে গিয়েছেন ওই তরুণী। এমনটাই সংবাদসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন তার আত্মীয়রা।

মাহশা আমিনির মৃত্যুর পর ইরানের হিজাব বিরোধী আন্দোলনে সরকারী দমন পীড়ণ হিংসাত্মক সংঘর্ষে শতাধিক নিহত। বহু প্রতিবাদী জেলে বন্দি। এই বিক্ষোভ তুঙ্গে উঠেছিল কাতার বিশ্বকাপ ফুটবল আসরেও। তবে ইরান সরকার হিজাব নিয়ে নরম হয়নি। এবার হিজাব আইন লঙ্ঘন করার অভিযোগে তেহরান মেট্রোতে আক্রান্ত আর্মিতাকে নিয়ে বিক্ষোভ ছড়াচ্ছে। ১৬-বছর বয়সী আর্মিতার মাহসা আমিনির (Mahsa Amini) মতো একই পরিণতির মুখোমুখি হতে পারে। ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনি নীতি পুলিশের হেফাজতে মার খেয়ে গত বছর কোমায় চলে গেছিলেন। তার মৃত্যু ও বিক্ষোভে গোটা বিশ্ব কেঁপেছিল।

রবিবার ইসলামিক পোষাক কোড (Islamic dress code) প্রয়োগকারী নীতি পুলিশ অফিসারদের মার খেয়ে জখম আরমিতা গেরাভান্ড কোমায় চলে যাওয়ার কথা অস্বীকার করেছে ইরান সরকার। তবে ইরানি-কুর্দি অধিকার গোষ্ঠী হেনগাও তেহরানের একটি হাসপাতালে অচেতন অবস্থায় থাকা তার আর্মিতার ছবি পোস্ট করেছে। বলা হয়েছে ঘটনার পর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

ইরানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছ থেকে ঘটনাটি সম্পর্কে মন্তব্য করার অনুরোধের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে কয়েকজন জানান তিনি হাসপাতালের আইসিইউ-তে কোমায় রয়েছেন এবং তার অবস্থা গুরুতর… তার স্বজনরা বলেছেন যে হাসপাতালে সাধারণ পোশাকের প্রচুর উপস্থিতি রয়েছে। আরেকজন কর্মী বলেছেন যে নিরাপত্তা বাহিনী গেরাভান্ডের বাবা-মাকে তার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতে বা মানবাধিকার গোষ্ঠীর সাথে কথা বলতে নিষেধ করেছিল। বিষয়টির সংবেদনশীলতার কারণে নেতাকর্মীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কথা বলেছেন।

ইরানের জাতীয় সংবাদ সংস্থা IRNA-তে শেয়ার করা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, বাধ্যতামূলক হিজাব ছাড়া গেরাভান্ডকে মেট্রো প্ল্যাটফর্ম থেকে ট্রেনের দিকে হেঁটে যেতে তার দুই মহিলা বন্ধুর সঙ্গে। এরপর কেবিনে প্রবেশ করার পরে, একজন মহিলাকে অবিলম্বে পিছিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে এবং অন্য একটি মেয়েকে যাত্রীরা কেবিন থেকে অচেতন অবস্থায় টেনে নিয়ে যাচ্ছে। রয়টার্স ফুটেজের সত্যতা যাচাই করতে পারেনি বলে জানিয়েছে।

তেহরান মেট্রো অপারেটিং কোম্পানির প্রধান মাসুদ দোরোস্তি আইআরএনএকে বলেন, সিসিটিভি ফুটেজে যাত্রী বা কোম্পানির কর্মচারীদের মধ্যে মৌখিক বা শারীরিক সংঘর্ষের কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। সোমবার এক ইরানি সাংবাদিককে সংক্ষিপ্তভাবে গ্রেফতার করা হয় যখন তিনি গেরাভান্ডের অবস্থা সম্পর্কে জানতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন।

IRNA-তে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে, তার বাবা-মা বলেছেন যে তাদের মেয়ের রক্তচাপ কমে গেছে, তার ভারসাম্য হারিয়েছে এবং এর ফলে মেট্রো কেবিনের ভিতরে তার মাথায় আঘাত হয়। গেরাভান্ডের মা বলেন, “আমি মনে করি আমার মেয়ের রক্তচাপ কমে গেছে, আমি খুব বেশি নিশ্চিত নই, আমার মনে হয় তারা বলেছে তার রক্তচাপ কমে গেছে।” তিনি যোগ করেছেন যে বিতর্ক তৈরি করার কোনও মানে নেই। তবে সোশ্যাল মিডিয়ার অধিকার গোষ্ঠীগুলি কর্তৃপক্ষকে কেবিনের ভিতর থেকে ফুটেজ প্রকাশ করার আহ্বান জানিয়েছে, দাবি করেছে যে তার বাবা-মায়ের বিবৃতি চাপের মধ্যে দেওয়া হয়েছিল।

সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে জার্মানির বিদেশমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক বলেছেন, “আবারও একবার ইরানে একজন তরুণী তার জীবনের জন্য লড়াই করছেন। শুধুমাত্র পাতাল রেলে তার চুল দেখানোর কারণে। এটা অসহনীয়। আরমিতা গারাওয়ান্দের বাবা-মা ক্যামেরার সামনে নন, কিন্তু তাদের কাছে থাকার অধিকার আছে মেয়ের বিছানার পাশে।“