ভারত সরকার চীন এবং জাপান থেকে আমদানি হওয়া জল পরিশোধন রাসায়নিক ‘ট্রাইক্লোরো আইসোসায়ানিউরিক অ্যাসিড’-এর উপর পাঁচ বছরের জন্য অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করেছে। এই শুল্কের পরিমাণ প্রতি টন ৯৮৬ ডলার পর্যন্ত হতে পারে। যা দেশের অভ্যন্তরীণ শিল্পকে সস্তা আমদানির প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে রক্ষা করতে নেওয়া হয়েছে। ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্তের ঘোষণা করা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানায় যে এই সিদ্ধান্তটি বাণিজ্য মন্ত্রকের অধীনস্থ ‘ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ট্রেড রেমিডিজ'(ডিগিটিআর) এর সুপারিশ অনুসারে নেওয়া হয়েছে। ডিগিটিআর তদন্তে উঠে এসেছে যে, চীন ও জাপান থেকে আমদানি হওয়া ‘ট্রাইক্লোরো আইসোসায়ানিউরিক অ্যাসিড’ ভারতীয় বাজারে অবমূল্যায়িত দামতে প্রবাহিত হওয়ায় স্থানীয় শিল্পে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক পাঁচ বছর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে, যতক্ষণ না এটি বাতিল, বা সংশোধিত হয়।” চীন ও জাপান ভারতীয় বাজারে প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার হলেও, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ভারত তাদের গার্হস্থ্য শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করছে।
এছাড়া অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক আরোপের প্রক্রিয়া অনুযায়ী, ডিগিটিআর তদন্ত চালিয়ে শুল্ক আরোপের সুপারিশ করে এবং তারপর তিন মাসের মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় এর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়। এই পদক্ষেপ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা এর মধ্যে বহুপাক্ষিক বাণিজ্য বিধির আওতায় সম্পাদিত হয়, যাতে সাশ্রয়ী দাম বা অস্বাভাবিক নিম্নমূল্যে আমদানি হয়ে দেশের গার্হস্থ্য শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক মূলত একটি সুরক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করে, যা দেশের অভ্যন্তরীণ শিল্পকে বাঁচানোর জন্য নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। এটি একটি ক্ষতিকর বাণিজ্য চর্চা হিসেবে বিবেচিত হতে পারে, কিন্তু এর উদ্দেশ্য আন্তর্জাতিক বাজারে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা এবং স্থানীয় শিল্পের জন্য সমতল পরিবেশ নিশ্চিত করা।
এটি ভারতের রপ্তানি খাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা দেশের শিল্প এবং ব্যবসা ক্ষেত্রের জন্য একটি শক্তিশালী বার্তা পাঠাচ্ছে, যে অনৈতিক বাণিজ্য চর্চা কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না।