ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যে টানাপোড়েন, ট্রাম্পের কড়া মন্তব্য

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) ফের দাবি করলেন যে, ভারত তাঁকে ‘নো ট্যারিফ’ বা শূন্য শুল্কের বাণিজ্য চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছিল। তবে তাঁর…

Bagram Stays With Us: Taliban Snubs Trump’s Demand for Return

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) ফের দাবি করলেন যে, ভারত তাঁকে ‘নো ট্যারিফ’ বা শূন্য শুল্কের বাণিজ্য চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছিল। তবে তাঁর শাসনকালে ভারতীয় আমদানির উপর ধারাবাহিকভাবে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এই মন্তব্যের ফলে ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে।

Advertisements

সম্প্রতি একটি রেডিও সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “চীন আমাদের শুল্ক দিয়ে চেপে ধরেছে, ভারতও তাই করেছে, ব্রাজিলও একইভাবে শুল্ক চাপিয়েছে। আমি ট্যারিফকে বিশ্বের অন্য যে কারও চেয়ে ভালো বুঝি। ভারতে এতদিন আমেরিকার ব্যবসার জন্য উচ্চ শুল্ক থাকায় আমাদের বাজার সেখানে সীমিত ছিল। কিন্তু এখন তারা আমাকে শূন্য শুল্কে বাণিজ্যের প্রস্তাব দিয়েছে, যা আগে কখনও দেয়নি।”

   

ট্রাম্প অভিযোগ করেন যে আমেরিকা ভারতের কাছে বহু পণ্য বিক্রি করতে পারে না, অথচ ভারতীয় কোম্পানিগুলি বিপুল পরিমাণে পণ্য আমেরিকায় রপ্তানি করে। তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে এই সম্পর্ক একপাক্ষিক ছিল। ভারত আমেরিকার উপর বিশ্বের সর্বোচ্চ শুল্ক ধার্য করেছিল, ফলে আমাদের ব্যবসাগুলি ভারতে প্রবেশ করতে পারছিল না। এটি ছিল একপাক্ষিক বিপর্যয়। এখন তারা শুল্ক শূন্যে নামানোর প্রস্তাব দিয়েছে, কিন্তু অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।”

এই মন্তব্য এমন সময় এল যখন ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য সম্পর্ক টানাপোড়েনের মধ্যে রয়েছে। মার্কিন প্রশাসন সম্প্রতি ভারতীয় পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছে এবং রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কেনার কারণে আরও ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে। ফলে মোট শুল্ক বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশে, যা ভারতের জন্য আমেরিকার বাজারে রপ্তানি করা আরও কঠিন করে তুলেছে।

তবে ট্রাম্পের এই শুল্কনীতি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরেও বিরোধিতা শুরু হয়েছে। একটি মার্কিন আপিল আদালত তাঁর এই শুল্ক সিদ্ধান্তকে “অবৈধ” বলে রায় দিয়েছে। এর পাশাপাশি, আমেরিকার প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান ট্রাম্পকে তীব্রভাবে সমালোচনা করে বলেছেন, “আমরা ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে কাজ করছিলাম। ভারত প্রযুক্তি, অর্থনীতি ও কৌশলগত দিক থেকে আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মিত্র। কিন্তু পাকিস্তানের সঙ্গে ট্রাম্প পরিবারের ব্যবসায়িক সম্পর্কের কারণে তিনি ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে অবহেলা করছেন। এর ফলে জার্মানি বা জাপানও ভাববে, আমেরিকার উপর আস্থা রাখা যায় না।”

ট্রাম্পের বক্তব্যে ভারত নিয়ে মার্কিন রাজনীতিতে নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তিনি দাবি করছেন, তাঁর শুল্ক নীতির জোরেই ভারত যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বাণিজ্যিক ছাড় দিতে রাজি হয়েছে। অন্যদিকে সমালোচকরা বলছেন, এই শুল্কনীতি দীর্ঘমেয়াদে আমেরিকার বাণিজ্যিক সম্পর্ককেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

ভারতীয় কূটনৈতিক মহলে এই পরিস্থিতিকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। ভারত দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকার অন্যতম বড় বাণিজ্য অংশীদার। তবে নতুন শুল্ক আরোপে ভারতের রপ্তানি শিল্পে চাপ তৈরি হয়েছে। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, এই নীতিগুলি উভয় দেশের কৌশলগত ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।