Bangladesh: দুর্গাপুজোর আগে পদ্মার ইলিশে সংকট ! হতাশ ভোজনরসিক বাঙালি

পুজোর আগে ভোজনরসিক বাঙালির মাথায় হাত। পুজোর সময়ে পদ্মার ইলিশ পাতে পড়বে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। কারণ দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রায়…

পুজোর আগে ভোজনরসিক বাঙালির মাথায় হাত। পুজোর সময়ে পদ্মার ইলিশ পাতে পড়বে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। কারণ দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রায় ৪ হাজার টন ইলিশ রপ্তানির কথা ছিল। সেখানে মাত্র এক-তৃতীয়াংশও রপ্তানি হচ্ছে না। ৪০ দিনের মধ্যে রপ্তানির কথা থাকলেও সরকারি ছুটি আর নিষেধাজ্ঞায় সব আটকে আছে। এ নিয়ে দুদেশের ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ। লোকসানের সম্মুখীনও হবেন বলে তারা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রপ্তানির সময় বাড়ানোর দাবিও তুলেছেন তারা।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের কাছে ভারতের ব্যবসায়ীরা চিঠিও দিয়েছেন। যদিও এখন পর্যন্ত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে কোনো ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। যদিও বাংলাদেশের চাহিদা পূরণ ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে বহু বছর ধরে ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। তবে দুর্গাপূজার সময় দুদেশের সম্প্রীতির নিদর্শন হিসাবে প্রতিবেশী দেশে কিছু ইলিশ রপ্তানি করা হয়।

এবার দেশের ৭৯টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে ৩ হাজার ৯৫০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে রপ্তানি করতে বলা হয়। নির্দেশ অনুযায়ী ইলিশ পাঠাতে গিয়ে ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন। মাত্র ৪০ দিনের মধ্যে পাঠাতে বলা হলেও হিসাবে দুদেশের সরকারি ছুটি আনা হয়নি। এর ওপর আবার ১২ অক্টোবর থেকে বাংলাদেশে শুরু হচ্ছে ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা। প্রজনন মৌসুমের হিসাবে যা চলবে ২ নভেম্বর পর্যন্ত। এসব মিলিয়ে ৪০ দিনের মধ্যে মাত্র ১২ দিন ইলিশ রপ্তানি করা সম্ভব হবে। এতে লোকসানের শিকার হবেন ব্যবসায়ীরা।

বাংলাদেশ হিলশা এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি নিরব হোসেন টুটুল বলেন, ‘কখনোই এমন হয়নি যে পূজার আগেই বন্ধ হয়ে গেছে ভারতে ইলিশ রপ্তানি। অথচ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই ইলিশ পাঠাচ্ছেন পূজার শুভেচ্ছা হিসাবে। পূজা শুরু ২১ অক্টোবর আর রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তার ১০ দিন আগে ১১ অক্টোবর থেকে। ৩ হাজার ৯৫০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন মিলেছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৫৫০ টনের কিছু বেশি ইলিশ গেছে। আর ৪ দিন ইলিশ পাঠাতে পারব। এ ৪ দিনে বড় জোর ২০০ টন ইলিশ পাঠানো যাবে। অবশ্য তাও পারব কিনা সন্দেহ।

ব্যবসায়ীদের দাবি ১২ দিন রপ্তানি করে যা বিনিয়োগ করেছিলাম সেই লাভ তো উঠবে না বরং মোটা অঙ্কের লোকসান হবে। ট্রলার মালিক আর জেলেদের দেওয়া অগ্রিম ফেরত না পাওয়াসহ রপ্তানি প্রশ্নে আরও যত বিনিয়োগ সব জলে যাবে। যেহেতু অনুমোদনের ৫ ভাগের ১ ভাগ ইলিশও রপ্তানি হয়নি তাই সরকারের কাছে অনুরোধ, এই পরিমাণ ইলিশ না যাওয়া পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া হোক সময়। সেক্ষেত্রে অন্তত ব্যবসায়ীরা লোকসান এড়াতে পারবে।

অনুমতির পুরো ইলিশ না যাওয়ায় ক্ষুব্ধ পশ্চিমবঙ্গের আমদানিকারকরাও। গত বছরের মত এ বছর তো কম আসবে ইলিশ। দাম চড়া হলেও ইলিশ নিয়ে আগ্রহ আর উৎসাহের কমতি ছিল না। এখন পুরো ইলিশ আসছে না জেনে হতাশ সবাই।পাশাপাশি আমরা লোকসানের শিকার হই। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের মন্ত্রী ও হাইকমিশনে চিঠি দিয়েছে ভারতের ব্যবসায়ীরা। এখন এটাই দেখার বিষয় বাংলাদেশের সরকার কি সিদ্ধান্ত দেয়।