ক্ষমতার পালাবদলের পর বাংলাদেশে চরম অরাজক পরিস্থিতি চলছে। নিজ দেশের সংখ্যালঘু হিন্দুরা আক্রান্ত বলে আন্তর্জাতিক মহলে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন লেখিকা (Taslima Nasrin) তসলিমা নাসরিন। তিনি সবধর্মের মৌলবাদী ভূমিকারই তীব্র সমালোচক। বাংলাদেশে ইসলামি মৌলবাদের বিরুদ্ধে লিখে তসলিমা নির্বাসিত হয়েছেন দীর্ঘদিন। তিনি এবার সতর্কতা দিলেন বর্তমানে যে অন্তর্বর্তী সরকার চলছে তার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে খুন করতে পারে জামাত ইসলামি।
সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ ইস্যু (কোটা সংস্কার) ঘিরে রক্তাক্ত গণআন্দোলনের ধাক্কায় গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে পালাবদল ঘটে। ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেন। নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন লিখেছেন, শেখ হাসিনার শাসনে গণতন্ত্র ছিল না। সেই সরকার পতন হয়েছে। এরপর বাংলাদেশে জেঁকে বসেছে জামাতিরা।
উল্লেখ্য বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনে গণবিক্ষোভের রূপ নেওয়ার পর শেখ হাসিনা বলেছিলেন নাশকতা ছড়িয়ে অভ্যুত্থানের মূলে আছে জামাত ইসলামি। তিনি জামাতকে নিষিদ্ধ করেন। আর জামাতের হুঁশিয়ারি ছিল ‘বুমেরাং হবে’। পরে বিক্ষোভের ধাক্কায় পতন হয় শেখ হাসিনার।
বিক্ষোভকারীদের হুমকির মুখে পদত্যাগের ঘোষণা করলেন বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি!
পালাবদলের পর বারবার তসলিমা নাসরিন আশঙ্কা করছেন বাংলাদেশে জামাতের মৌলবাদী শাসন শুরু হবে। তিনি লিখেছেন, “আমি ১৯৬৯ এর গণআন্দোলন দেখেছি। আমি ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি। আমি ১৯৭৫ এর শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ড দেখেছি।আমি ১৯৯০ এর এরশাদ পতন আন্দোলন দেখেছি।আমি ২০২৪ এর হাসিনা পতন আন্দোলন দেখেছি। কিন্তু কখনও দেশে এত ভয়ংকর রাজাকারের উত্থান দেখিনি, জামায়াতের এত বিপুল ধ্বংসযজ্ঞ দেখিনি।”
সাদ্দাম স্টাইলে হাসিনা উত্খাত, নেপথ্যে ‘আরব্য রজনী’র দারুচিনি দ্বীপ?
তসলিমার অভিযোগ, হাসিনার নেতৃত্বে চলা আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস জামাতের ধংসলীলায় নীরব। তসলিমা লিখেছেন, “ইউনুস সাহেব ছাত্রদের খুশি করতে বলছেন তিনি ছাত্রহত্যার বিচার করবেন। একবারও বলেননি যারা দেশজুড়ে ধ্বংসযজ্ঞ করছে, তাদের বিচার করবেন। তাহলে কি তিনিও চাইছেন একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিশ্চিহ্ন করে দিতে? শেখ মুজিবের সমস্ত স্মৃতি গুঁড়িয়ে দিতে?”
তিনি লিখেছেন, “জামায়াতিরা যেন দেশের সমস্ত জাদুঘর, ভাষ্কর্য, মুক্তিযোদ্ধাদের ভাষ্কর্য, ছবি, স্মৃতি, বীরশ্রেষ্ঠদের যা কিছু স্মৃতি, স্মৃতিস্তম্ভ, শেখ মুজিবর রহমানের বাড়ি, মিউজিয়াম, ভাষ্কর্য সব ভেঙ্গে গুঁড়ো করতে পারে, পুড়িয়ে ছাই করতে পারে। জামায়াতিরা হিন্দুদের, আহমদিয়াদের এবং সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছে।”
তসলিমা নাসরিন লিখেছেন “অনভিজ্ঞ ছাত্ররা রাস্তা ঝাড়ু দিচ্ছে, ট্রাফিক সামলাচ্ছে, আর জামায়াতিরা ভেঙ্গে চুড়ে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে দেশ,আর চিৎকার করে জানিয়ে দিচ্ছে, দেশে ইসলামের পতাকা উড়বে। ইউনুস সাহেবদের জামায়াতিদের আদেশ পালন করতে হবে, নয়তো জামায়াতিদের হাতে খুন হয়ে যেতে হবে।”