আরজি কর হাসপাতালের নৃশংস ঘটনায় ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার ঝাড়গ্রাম যাওয়ার পথে কলকাতার পুলিশ কমিশনারের থেকে ঘচনার বিবরণ শুনেই চমকে উঠেছিলেন। সফরকালে বলে ফেলেছিলেন, ‘এরকম নৃশংস ঘটনা হতে পারে? মনে হচ্ছে যেন আমার পরিবারের কারও সঙ্গে হয়েছে।’ ওইদিনই ফোনে তিনি কথা বলেছিলেন সন্তানহারা বাবার সঙ্গে। দিয়েছিলেন ন্যায় বিচারের আশ্বাস। পাশাপাশি কলকাতার পুলিশ বিনীথ গোয়েলকেও মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ ছিল, ২৪ ঘন্টার মধ্যে দোষীকে ধরতে হবে। তদন্তের দেখভাল করছেন খোদ কমিশনার।
কিন্তু, উত্তাল চিকিৎসক মহল। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার সঙ্গে যুক্তরা ইতিমধ্যেই মুখর। চলছে কর্মবিরতি। ঘটনার অভিঘাত বেশ গাঢ় বিলক্ষণ বুধেছেন পোড়খাওয়া মমতা। পুলিশের প্রতি ভরসা না থাকলে সিবিআই-কে দিয়েও তদন্তের জদাবি মেনে নিতে তাঁর কোনও আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। শনিবার বিকেলে আরজি কর হাসপাতাল নিয়ে নবান্নে বৈঠক করেন মমতা। সেখানেই ওই হাসপাতাল নিয়ে বিশেষ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে সূত্রে খবর।
এ দিন বিকেল চারটে নাগাদ নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একটি বৈঠকে হয়। সেখানে ছিলেন মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, স্বাস্থ্যসচিব, কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকরা। ওই বৈঠকে আরজি কর হাসপাতালের জায়গা বাড়াতে একটি ভবন গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সিদ্ধান্ত হয়েছে, তৈরি হতে চলা নতুন ভবনের একটি ফ্লোরের নাম মৃতা মহিলা চিকিৎসকের নামে রাখা হবে।
এই সিদ্ধান্ত যখন হয়েছে, তখনই খবর হয় যে- আরজি কর হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজে যুবতী চিকিৎসক খুনের ঘটনায় ধৃত যুবককে ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ হয়েছে। শনিবার তাঁকে শিয়ালদহ আদালতে হাজির করানো হয়। এ দিন অভিযুক্তের হয়ে কোনও আইনজীবী সাওয়াল করেননি।
হাসপাতালের পড়ুয়ারা ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, ধৃত সঞ্জয় রায় হাসপাতালের কেউ না হলেও আরজি কর মেডিক্যালের জরুরি বিভাগ থেকে চারতলা, সর্বত্রই ছিল তার অবাধ যাতায়াত। এই ঘটনা সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীও বললেন, “আমি বুঝতে পারছি না এত বড় সাহস পায় কোথা থেকে। আরজিকর হাসপাতালে নিয়মিত যাতায়াত ছিল অভিযুক্তের।” তবে অভিযুক্ত সিভিক ভলেন্টিয়ার ছিল কিনা তা স্পষ্ট জানানো হয়নি পুলিশের তরফে। শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে অভিযুক্তর পরিচয় সম্পর্কে সিপি বিনীত গোয়েল বলেন, এখন তার একটাই পরিচয়, সে ক্রিমিনাল।