Bangladesh: ভারতে শয়ে শয়ে বাংলাদেশি নারী পাচার, সীমান্তবর্তী নিরাপদ ঘাঁটি খুলনা

বাংলাদেশ (Bangladesh) থেকে ভারতে নারী পাচারকারীদের ব্যবসা রমরমিয়ে চলে। দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলে লেনদেন। বিভিন্ন তদন্ত ও পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে ভারতে শতাধির…

বাংলাদেশ (Bangladesh) থেকে ভারতে নারী পাচারকারীদের ব্যবসা রমরমিয়ে চলে। দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলে লেনদেন। বিভিন্ন তদন্ত ও পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে ভারতে শতাধির মহিলা পাচারকারীদের ঘাঁটি খুলনা। সীমান্তের ওপারে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা। সেখান থেকে কলকাতা হয়ে নারী পাচার চলে অহরহ।

খুলনার নিউমার্কেট এলাকার নারীর ছদ্মনাম সাবিনা। দারিদ্রের যাতাকলে পিষ্ঠ এই নারী একমাত্র সতেরো বছরের মেয়েকে নাচ শেখানোর কৌশলে বাড়ি থেকে নিয়ে ভারতে বিক্রি করে দেয় রোমা হক নামে এক নারী। সেখানে পাশবিক নির্যাতনে তিন বছরের মাথায় ২০১৭ সালে দেশে লাশ হয়ে ফেরে তার মেয়ে। এমন কাহিনী খুলনার শতাধিক নারীর। জনবহুল এই নগরীতে প্রতি নিয়ত বিভিন্ন পন্থায় প্রলোভনে জাল বুনছে নারী ও শিশু পাচারকারী চক্র। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে কিশোরীদের প্রেম ভালোবাসা আর নারীদের সংসারের লোভ দেখিয়ে ফাঁদে ফেলা হচ্ছে।

এক পাচারকারী নারীর কথায়, আমাকে যে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। আরও যারা আমার সাথে এখানে বাংলাদেশী মহিলা ছিল তাদের সাথে পরিচয় হতে তারা আমায় ব্যাপারটি জানায়। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে নগরের আটটি থানায় এ সংক্রান্ত মামলা হয়েছে ২৫ টি। এর মধ্যে সর্বোচ্চ খালিশপুরে আটটি।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় একাধিক পাচারকারী চক্র থাকলেও এই খালিশপুরে রয়েছে ৬-৭ টি। এর মধ্যে একটি তুলিজুলি চক্র এলাকা থেকে নারী ও কিশোরীদের টার্গেট করে প্রলোভন দেখায়‌। তুলি আর মৌ তাদের ভারতে নিয়ে যায়। বর্ডার পার করে দেয় নয়নমশী। এর প্রধান শাহিদ থাকে ভারতের হায়দ্রাবাদে। দেশে চার-পাঁচ, ও ভারতে ছয়-সাত হাত বদল করে নারী বিক্রি হয় দুই থেকে তিন লাখ টাকায়।

শুধুমাত্র একটি বেসরকারি সংস্থা জাস্টিস এন্ড কেয়ার গত ছয় বছরে ভারত থেকে উদ্ধার করেছে ৮৯ জন নারী ও শিশুকে। যতদিন না পাচারকারীদের কঠিন শাস্তির দাবি করছি ততদিন এটা আটকানো খুব মুশকিল। পুলিশ বলছে এসব অপরাধ দমনে পাচারকারীদের শনাক্ত করে চার্জশিট পেশ করলে সহজে তারা বেল পেতনা। খুলনার মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে ১৫৪ টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।