Tangail Saree: টাঙ্গাইল শাড়ির জন্মভূমি নিয়ে বিতর্ক, বিখ্যাত শাড়ির কারিগররা কী বলছেন?

টাঙ্গাইল শাড়ি (Tangail Saree)। জনপ্রিয় এই শাড়ির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলার নাম। কিন্তু সম্প্রতি ভারত সরকার দাবি করেছে ‘টাঙ্গাইল শাড়ি’ তাদের পণ্য। তারপরেই…

টাঙ্গাইল শাড়ি (Tangail Saree)। জনপ্রিয় এই শাড়ির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলার নাম। কিন্তু সম্প্রতি ভারত সরকার দাবি করেছে ‘টাঙ্গাইল শাড়ি’ তাদের পণ্য। তারপরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রক ফেসবুকে একটি পোস্ট করে টাঙ্গাইল শাড়িকে পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহ্য উল্লেখ করে। সেখানে বলা হয়, এটি এই অঞ্চলের সাংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে। তারপরেই শুরু হয় বিতর্ক। অনেক বাংলাদেশি ক্ষোভ উপরে দেয়। তাদের বক্তব্য টাঙ্গাইল বাংলাদেশের একটি জেলার নাম এবং ওই শাড়িটির উৎপত্তি এই জেলায়।

কিন্তু এই বিতর্কের প্রেক্ষাপট রচিত হয়েছে আরো এক মাস আগে।ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের অধীন পেটেন্ট, ডিজাইন অ্যান্ড ট্রেড মার্কস বিভাগের পক্ষ থেকে টাঙ্গাইল শাড়িকে পশ্চিমবঙ্গের ভৌগোলিক নির্দেশকপণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অবশ্য জিআই’র তালিকায় টাঙ্গাইল শাড়ির উপস্থিতির কথা শুনে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে এই শাড়ির উৎপত্তিস্থল হিসেবে সুনির্দিষ্টভাবে উঠে আসছে পাথরাইল, নলশোধা, ঘারিন্দাসহ টাঙ্গাইলের এমন বাইশ-তেইশটি গ্রামের নাম।এসব গ্রামই ঠিকানা ছিলো তাঁতীদের। যাদের পদবি ছিল ‘বসাক’। হরিপদ বসাক জানিয়েছেন, যিনি ওই তাঁতীদের বংশধর। জন্ম ও বেড়ে ওঠা ‘পূর্ব বাংলায়’ হলেও বর্তমানে বসবাস করছেন পশ্চিম বঙ্গের নদীয়ায়।

টাঙ্গাইল শাড়ির কারিগররদের সঙ্গে কথা বলেছে বিবিসি। তারা বলেছেন, ১৮৫০ সাল বা তার কাছাকাছি সময়ে তৎকালীন ধামরাই এবং চৌহট্ট নামে দুটি গ্রামে মসলিনের উত্তরসূরী কিছু তাঁতি বসবাস করতেন।সন্তোষ, করটিয়া, দেলদুয়ারে জমিদারি পত্তনের সময় অন্যান্য পেশাজীবীদের পাশাপাশি ওই তাঁতিদেরও সেসব জায়গায় নিয়ে বসতি গড়ে ওঠে।এসব গ্রামের মানুষেরা যে শাড়ি বয়ন করতেন তাই ‘টাঙ্গাইল শাড়ি’ নামে পরিচিতি লাভ করে। ১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর বসাক সম্প্রদায়ের বড় অংশই ভারতে চলে যান। তাদের ভিড়টা বেশি হয় নদীয়া জেলার ফুলিয়া গ্রাম এবং পূর্ব বর্ধমানের ধাত্রীগ্রাম ও সমুদ্রগড়ে।তাদের মাধ্যমেই নদীয়া ও পূর্ব-বর্ধমানসহ পশ্চিমবঙ্গে ‘টাঙ্গাইল শাড়ি’ পরিচিতি লাভ করে।

২০১১ সালেও একবার টাঙ্গাইল শাড়ির জন্য জি আই আবেদন করা হয়েছিল। সেই আবেদনটি বাতিল হয়ে গিয়েছিল।তারপরও চেষ্টা চালিয়ে গেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। ফল পেয়েছে ২০২৪ সালে এসে। নতুন বছরে বাংলায় উৎপাদিত পাঁচটি পণ্যকে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) ট্যাগের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সুন্দরবনের প্রাকৃতিক মধু, জলপাইগুড়ির কালো নুনিয়া চাল এবং মুর্শিদাবাদের গারদ এবং নদিয়া ও টাঙ্গাইলের শাড়ি। তবে শাড়িটির জন্মভূমি নিয়ে বিতর্ক বাড়ছে।