Bangladesh: ইনকিউবিটরে জন্মাল উটপাখির ছানা

উটপাখি! এক প্রকারের বৃহৎ, উড্ডয়নে অক্ষম পাখি। আফ্রিকার সাহারা মরুভূমির দক্ষিণের তৃণভূমি এদের বিচরণস্থল। বিগত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা ক্রমেই কমছে, তবে আশঙ্কাজনক পর্যায়ে…

উটপাখি! এক প্রকারের বৃহৎ, উড্ডয়নে অক্ষম পাখি। আফ্রিকার সাহারা মরুভূমির দক্ষিণের তৃণভূমি এদের বিচরণস্থল। বিগত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা ক্রমেই কমছে, তবে আশঙ্কাজনক পর্যায়ে যেয়ে পৌঁছেনি। সেকারণে International Union for the Protection of Nature বা IUCN এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে।

উটপাখি সবচেয়ে দৌড়বাজ, দ্রুতগামী। উটপাখির ডিম সবচেয়ে বড় (দেড় কেজি)। একমাত্র পাখি যার পায়ে দুটি মাত্র আঙুল রয়েছে। বিশ্বে উটপাখি পালন করা হল একটি লাভজনক ব্যবসা। বিশ্ববাজারে এর চামড়া, মাংস, পালক ইত্যাদির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

বাংলাদেশে এই প্রথম উটপাখির ডিম থেকে বাচ্চা ফোটালেন গবেষকরা। গবেষকরা ১১ জুলাই হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিকস অ্যান্ড এনিমেল ব্রিডিং বিভাগের গবেষনাগারের ইনকিউবেটরে এই ডিম ফোটান।

জানা গিয়েছে ১.৫ মাস আগে ইনকিউবিটরের ট্রেতে ৬ টা ডিম বসানো হয়। এই ৬ টা ডিমের মধ্যে একটা ডিম ফোটে। একটি উটপাখির বাচ্চা জন্ম নেয়। বাচ্চাটির ওজন ৯৪৮ গ্রাম হয় জন্মের সময়।

হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষণারত শিক্ষার্থী তৌহিদুল ইসলাম জানান যে ২০২০ সালে উটপাখি বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে গবেষণা শুরু করা হয়। ইনকিউবেটরে ১৯টি ডিম বসানো হয়। কিন্তু কোনওটা ফোটেনি।

এরপর ফের ২০২২ সালে বিভিন্ন ধাপে ৩৬টি ডিম বসানো হয়। কিন্তু সেইবারও সুফল পাওয়া যায়নি। ২০২৩ সালে প্রথমে ১৩টি ডিম বসানো হয়। লাভ হয়নি এবারেও। এরপর আরও ছয়টি ডিম ইনকিউবিটরে বসান গবেষকরা। সেখান থেকেই একটা বাচ্চা হয়েছে। তৌহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন যে আরও চারটি ডিম ফুটে বাচ্চা বের হবে বলে প্রত্যাশা করছেন তারা।

সাক্ষাৎকারে জেনেটিকস অ্যান্ড এনিমেল ব্রিডিং বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. রাশেদুল ইসলাম জানিয়েছেন, কৃত্রিম পদ্ধতিতে উটপাখির বাচ্চা ফোটানোর সাফল্যে এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেড়ে গেল। এই গবেষণা কার্যক্রমকে আরও এগিয়ে নিতে চাই।

এনিমেল সায়েন্স অ্যান্ড নিউট্রিশন বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. উম্মে সালমা বলেছেন, অনেক চেষ্টার পর বাংলাদেশে আমরাই প্রথম ইনকিউবেটরে উটপাখির ডিম থেকে বাচ্চা ফোটাতে সক্ষম হয়েছি। আমরা এই সাফল্যে খুশি এবং আপ্লুত। এখন আমাদের সাফল্যকে এগিয়ে নিতে আরও বড় পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন।