K2: ভয়াবহ কারাকোরামে আফগান পর্বতারোহীর দেহ মিলল, নেবে তালিবান জঙ্গি সরকার

গত বছর জুলাই মাসে বিশ্বের দ্বিতীয় উচ্চতম শৃঙ্গ K2 আরোহণের জন্য এগোচ্ছিলেন এক দল পর্বতারোহী। সেই দলেই ছিলেন ৩৪ বছরের আলি আকবর সাখি। তিনি ছিলেন…

গত বছর জুলাই মাসে বিশ্বের দ্বিতীয় উচ্চতম শৃঙ্গ K2 আরোহণের জন্য এগোচ্ছিলেন এক দল পর্বতারোহী। সেই দলেই ছিলেন ৩৪ বছরের আলি আকবর সাখি। তিনি ছিলেন আফগানিস্তানের প্রথম পর্বতারোহী। তাঁর মৃত্যু হয় কে-২ অভিযানে। ক্যাম্প ৩-এর কাছ থেকে তাঁর দেহ মিলেছে। এক বছর পেরিয়ে গেলেও তাঁর দেশে ফেরানো যায়নি। অবশেষে আফগানিস্তানের প্রথম পর্বতারোহীর দেহ উদ্ধার করে তাঁর নিজ দেশে সফল ভাবে ফেরত পাঠানো হল। জানিয়েছে পাকিস্তান সরকার। সেই দেহ গ্রহণ করবে আফগানিস্তানের শাসক তালিবান জঙ্গিরা।

কারাকোরাম বা কৃষ্ণগিরি পর্বতমালা হিমালয়ের চেয়েও দুর্গম। পর্বতাভিযাত্রীরা দাবি করেন, এভারেস্টের থেকেও কারাকোরামের শীর্ষ শিখর K2 যা বিশ্বে দ্বিতীয় উচ্চতম, সেটি জয় করা কঠিন। এই শৃঙ্গ পড়ছে পাকিস্তানের মধ্যে।

   

২০২২ সালের জুলাই মাসে K-2 অভিযানে গিয়েছিলেন আফগান পর্বতারোহী আলি আকবর সাখি (৩৪)। তাঁর মৃত্যুর পর ক্যাম্প ৩ থেকে দেহ আনার জন্য গিয়েছিল ৬ জনের আরও একটি দল। এই ছয় পর্বতারোহীরা স্কার্দু থেকে অভিযান শুরু করেন। তারা বলছেন, কে-২ এলাকা থেকে ওই দেহ নিচে আনা হয়। উদ্ধারকারী দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন আবিদ সাদপারা। দলে ছিলেন সাদিক সাদপারা, আলি মুসা, আরিফ সাদপারা, মুরাদ আলি শাগরি এবং আবদিন শাগরি। দেহ উদ্ধার করে ফিরিয়া আনার কাজে সাহায্য নেওয়া হয় পাকিস্তান সেনার।

জানা যাচ্ছে যে ৬ জনের স্থানীয় দল ৬ দিনের মধ্যেই ৭,২০০ মিটার উচ্চতায় দেহটি খুঁজে বার করেছেন। দড়ি দিয়ে বেঁধে দেহটিকে নামিয়ে আনা হয়েছে। প্রতি পদে পাক সেনা সাহায্য করেছে বলেও জানানো হয়েছে। মৃত আফগান পর্বতারোহীর দেহ বেস ক্যাম্প থেকে সিএমএইচ স্কার্দু তে সেনার হেলিকপ্টারে করে নিয়ে আসা হয়। তারপর আলি আকবর সাখির দেহ তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এরপর পিআইএ বিমানে ইসলামাবাদে উড়িয়ে নিয়ে আসা হয়। এরপর দেহটি তাঁর দেশ আফগানিস্তানে পাঠানো হয়।

K2 এর মতো বিপজ্জনক অভিযানে অংশ নিতে অস্বীকার করেন নেপালের শেরপারা। যদিও তাঁরা পর্বতারোহনে খুবই পারদর্শী। জানা গিয়েছে দেহটি বরফে থাকার ফলে ভালোভাবে সংরক্ষিত ছিল।

K-2 তে রয়েছে ভয়ঙ্কর সব বাধা-বিপদ। তাই এইরকম একটি জায়গা থেকে দেহ উদ্ধার করে সফল ভাবে নিয়ে আসা একটি উল্ল্যেখযোগ্য অর্জন। খুব কঠিন এবং বিপজ্জনক কে-২ পর্বত আরোহন করা। পাহাড়ে ওঠা এবং সেই পাহাড় থেকে নামা দুটোই ভয়ঙ্কর। সঙ্গে রয়েছে খারাপ আবহাওয়া এবং কঠিন রাস্তা।

১৯৫২ সাল থেকে আজ অবধি কে-২ তে অন্তত ৫৮৬ জন পর্বতারোহী মারা গিয়েছেন। এরমধ্যে কিছুজন স্থানীয় এবং কিছুজন বাইরের দেশের। এতটাই ভয়ঙ্কর এই পর্বত আরোহন করা।