শুভেন্দুকে উপযুক্ত সময় এলে তথ্য ফাঁস করার হুমকি সভাধিপতি উওমের

নিজস্ব সংবাদদাতা, নন্দীগ্রাম: লোকসভা নির্বাচন দোড়গোড়ায়৷ অধিকারী পরিবারের বিগত দিনের দুর্নীতি ফাঁস করার হুংকার দিলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতির তথা পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম বারিক।…

নিজস্ব সংবাদদাতা, নন্দীগ্রাম: লোকসভা নির্বাচন দোড়গোড়ায়৷ অধিকারী পরিবারের বিগত দিনের দুর্নীতি ফাঁস করার হুংকার দিলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতির তথা পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম বারিক।

নন্দীগ্রাম বিধানসভায় দাঁড়িয়ে দাউদপুরে তৃণমূল কর্মী সভা থেকে অধিকারী পরিবারের উদ্দেশ্যে, ‘কি ছিলুম আর কি হলুম ‘ এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম বারিক।

বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর ও পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম বারিকের বাদানুবাদে উপ্তয় পূর্ব মেদিনীপুরে রাজনীতি। সাম্প্রতিক কয়েকদিন আগে উত্তম বারিক’কে আয়কর দফতরের নোটিশ নিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বিস্ফোরক মন্তব্য করেন।

তাঁর দাবি, একটা বড় ডাকাত! আয়কর দফতরকে অনুরোধ করবো, সেটা যেন ইডি ( কেন্দ্রীয় এজেন্সি ) হাতে তুলে দেয় মামলা! ৫ কোটি টাকা দিয়ে ভাইপো কাছ থেকে সভাধিপতি কিনেছে “! পাল্টা জবাব জবাব দেন সভাধিপতি উত্তম বারিক।

সোমবার বিকালে নন্দীগ্রামে দাউদপুরে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সভায় উপস্থিত হন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম বারিক। এদিন সভায় কংগ্রেস থেকে ৬ জন নেতৃত্ব তৃণমূল কংগ্রেসের যোগদান করেন। নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ সহ স্থানীয় ব্লক নেতৃত্ব থেকে জেলা নেতৃত্বরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিন সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম বারিক অধিকারীর পরিবারের উদ্দেশ্যে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “গেরুয়া বসন পরে ভাবছেন উনি সন্ন্যাস হয়ে যাবেন। মনে রাখবেন ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হয় না! দস্যু রত্নাকর বাল্মিকী হয়েছিল একজন! তুমি দস্যু রত্নাকর ছিলে, আগামী দিনেও থাকবে! ২০১১ সাল থেকে ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারি ক্ষমতা ভোগ করে! একাধিক দফতরের দুর্নীতি করেছো? আপনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়’কে ডাকাতের রানী বলেন! আপনিতো ডাকাতের সর্দার! আপনার বাড়িতে বাড়িতে ডাকাত পুষে রেখেছেন! তা না হলে এতগুলো পদ কিসের দরকার ছিল? ডাকাতি করবেন নাকি মানুষের সেবা করবেন?’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘৪০ বছর তো আপনাকে কাঁথি পুরসভায় বসিয়ে রেখেছিল! কাঁথি মহকুমা রাস্তা ডুবে যেতো! কাঁথির মানুষকে ধাপ্পা দিয়েছেন। জেলা পরিষদ দু’কোটি টাকা আর্থিক ব্যয় যমুনা জলা সংস্কার করছে। কাঁথির জন্য কি করেছেন? এবার মানুষ ধুয়ে মুছে সাফ করে দিয়েছে। আপনি ডাকাতের সর্দার, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়’কে দেখলে ডাকাত রানী বলেন! মানুষ বিচার করবে! বিগত দিনেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখেছে, এখনোও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়’কে দেখছে মানুষ! কি পরিবর্তন হয়েছে!’’

তাঁর কথায়, ‘‘আপনার কি পরিবর্তন হয়েছে! আপনার যদি ক্ষমতা থাকে ২০১১ সালে কি ছিল, আপনার ২০২৩ সালে কি হয়েছে মানুষের সামনে শ্বেতপত্র প্রকাশ করুন? বাংলা থেকে কত হাজার কোটি টাকা লুট করেছেন! কত বেকার প্রতারিত হয়েছে! নিজে টাকা নিবে না এজেন্ট ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে, জেলার একাধিক জায়গায় এজেন্ট রয়েছে! ২০১২ সালের শিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতি করেছেন! ক্ষমতা থাকলে সিবিআই তদন্ত হোক৷’’

আয়কর দফতর নিয়ে সভাধিপতিকে নোটিশ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কটাক্ষ। পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন সভাধিপতি উত্তম বারিক। তিনি বলেন, “এডি’কে এই মামলার স্থানান্তরিত করে একটা দুর্নীতি বের করুন? উত্তম বারিক পূর্ব মেদিনীপুর জেলাতে কোন দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে! কাউকে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নিয়েছে! নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করলাম! ২০১০ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আপনি কি করেছেন? উপযুক্ত সময় এলে অনেক তথ্য ফাঁস দেবো? আমি সকলকে চোর ডাকাত বলেন? কি ছিলুম কি আর হলুম! সময় এলেই সব বুঝতে পারবেন৷’’