ভোট দিনুভয়ো দাজু?… পাহাড়ি বাংলার ভোটে খুন-বুথ লুঠ নেই!

‘ভোট দিনুভয়ো দাজু’ (ভাই ভোট দিলে নাকি) পথ চলতি যে কেউ একে অন্যকে বলছেন এমন। বৃষ্টি হয়েছে। পাইন পাতা থেকে জল ঝরছে। পাহাড়ের মাথায় জমে…

‘ভোট দিনুভয়ো দাজু’ (ভাই ভোট দিলে নাকি) পথ চলতি যে কেউ একে অন্যকে বলছেন এমন। বৃষ্টি হয়েছে। পাইন পাতা থেকে জল ঝরছে। পাহাড়ের মাথায় জমে আছে মেঘ। নিচে ছোট ছোট পাহাড়ি গ্রামে ভোটাররা যাচ্ছেন আসছেন। ভোটের লাইনে চলছে গল্প। কুকুর লেজ নাড়িয়ে জুলজুল চোখে লাইনে ঘুরছে। ভোর রাতে ভোট কেন্দ্রের নিচে দুটো হাতি ঘুরছিল বলেই জানালেন কেউ কেউ। রক্তপাতহীন ভোট চলছে এই বাংলায়। দার্জিলিং ও কালিম্পং দুই পাহাড়ি জেলায় চলছে দ্বিস্তর পঞ্চায়েত ভোট।

অথচ পাহাড়ি রাজনীতি বারবার রক্তাক্ত হয়েছে। গুলি চলেছে। প্রকাশ্যে নেতা খুন। আশির দশক থেকে যে রক্তাক্ত পাহাড়ি রাজনীতিতে শয়ে শয়ে নিহত হয়েছিলেন তা গত কয়েকবছর পর্যন্ত ছিল। মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত হামলার মুখে পড়েছিলেন। দু দশক বন্ধ ছিল পাহাড়ের পঞ্চায়েত ভোট। সেই রাজনীতির রক্তাক্ত অলি গলি পেরি়য়ে দুশক পর দ্বিস্তর পঞ্চায়েত ভোট চলছে। নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশ সীমান্ত বেশিষ্ট দুটি জেলায়।

দীর্ঘ দুই দশক পর পাহাড়ে পঞ্চায়েত ভোট। রাজ্যের চারিদিকে শুধু বোমা, বারুদ, গুলি, খুন, হিংসার ছবি ফুটে উঠছে। তবে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার এই দৃশ্য থেকে ভিন্ন রূপে নজরে আসলো পাহাড়। সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে চলছে পাহাড়ি ভোট গ্রহণ। পাহাড়ে শেষ ভোট হয়েছিল ২০০১ সালে তারপর থেকে পঞ্চায়েত ভোট হয়নি পাহাড়ে। এবার দীর্ঘ ২২ বছর পর পঞ্চায়েত ভোট চলছে পাহাড়ে। সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ চলছে দার্জিলিং, কালিম্পং এলাকায়। ইতিমধ্যে সকাল ৯টা পর্যন্ত কুরসিয়ং মহকুমায় ৭.৫৮% ভোট পড়েছে বলে জানা গেছে।

গোটা পাহাড়বাসী অপেক্ষায় ছিল এই পঞ্চায়েত ভোটের জন্য। কারণ, পঞ্চায়েত না থাকায় উন্নয়নের কাজ আটকে গিয়েছিল দীর্ঘদিন। এবার এই সমস্যার সমাধান হবে। তবে রাজ্যজুড়ে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচন হলেও পাহাড়ে কিন্তু দ্বিস্তরীয় নির্বাচন চলছে। আজ এই পঞ্চায়েত ভোটে যেখানে রাজ্য জুড়ে এখনও পর্যন্ত বলি বহু প্রাণ। সেখানে পাহাড়ের এই শান্তিপূর্ণ ভোট নজর কেড়েছে গোটা রাজ্যের।