Biswajit Das: ভোটের মুখে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিলেন বিশ্বজিৎ দাস

লোকসভা ভোট চলাকালীন এবার রাম ধাক্কা খেল বিজেপি (BJP)। আজ শুক্রবার একদিকে যখন ২৪-এর লোকসভা ভোট শুরু হয়েছে তখন আচমকা বিজেপির বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা…

লোকসভা ভোট চলাকালীন এবার রাম ধাক্কা খেল বিজেপি (BJP)। আজ শুক্রবার একদিকে যখন ২৪-এর লোকসভা ভোট শুরু হয়েছে তখন আচমকা বিজেপির বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিলেন বনগাঁ লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস (Biswajit Das)। বিরোধী গেরুয়া শিবির অবশ্য বলছে, এবার ওঁর আমও গেল ছালাও গেল । শুক্রবার নিজের বাড়ির মন্দিরে পুজো দিয়ে কালী মাকে প্রণাম করেই কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেন বিশ্বজিৎ । যাওয়ার আগে বিশ্বজিতের সাফ কথা, ‘বিধায়ক কোনও দলের হয় না । আমি বাগদা বিধানসভার প্রত্যেকটি মানুষের বিধায়ক । মানুষের সুখে দুঃখে ভালো মন্দে কাজ করাটাই আমার লক্ষ্য । স্বাধীনতার পর আমিই ওই এলাকার প্রথম বিধায়ক যার কাজের নমুনা ছড়িয়ে রয়েছে বাগদার প্রতিটি প্রান্তে ।’

এদিকে বিধায়ক পদ থেকে বিশ্বজিৎ দাসের এহেন আচমকা পদত্যাগের জেরে মানুষের মধ্যে শোরগোল পরে গিয়েছে। ‘কিন্তু এবার কি হবে ? আমাদের তো আবার ভোট দিতে হবে।’ প্রশ্ন তুলছেন বাগদার মানুষ । তাদের দাবি বিজেপির টিকিটে জিতে বিধায়ক হয়ে বাগদার মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন বিশ্বজিৎ । এ নিয়ে বিশ্বজিৎ অবশ্য বলছেন, ‘অধিকারি পরিবারের বর্ষীয়ান নেতা দলবদলু শিশির অধিকারিকে শিক্ষা দিতেই আমি তৃণমূলে ফিরেছি । তৃণমূলই আমার প্রকৃত জায়গা।’ এ নিয়ে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা অবশ্য বলছেন, তৃণমূল আর বিজেপি একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ । সকালে যিনি তৃণমূল বিকেলে তিনি পদ্মফুল । তবে সেই ২০১১ । রাজ্যে পালাবদলের প্রেক্ষাপটে তৃণমূলের টিকিটে জয়লাভ করে বনগাঁ উত্তর বিধানসভার বিধায়ক হন বিশ্বজিৎ । পাঁচ বছর পর ২০১৬ । বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে জিতে ফের বিধানসভায় পা রাখেন বিশ্বজিৎ ।

   

তৃণমূল জমানায় মুকুল রায়ের সঙ্গে বিশ্বজিতের সক্ষ্যতা কারোর চোখ এরায়নি । একথায় মুকুলই তাঁর রাজনৈতিক ‘গডফাদার’। ২০১৯ সালে মুকুল রায়ের হাত ধরেই পদ্মশিবিরে নেম লেখান বিশ্বজিৎ। পরবর্তীতে ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে মুকুলরায়ের কাঁধে ভর দিয়েই বাগদার ভুমিপুত্র দুলাল বর কে ট্রাম করে বাগদা বিধানসভায় বিজেপির টিকিট হাসিল করেন বিশ্বজিৎ । শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে জয়লাভ করে বাগদার বিধায়ক হন তিনি । মুকুলের সঙ্গে সক্ষ্যতা থাকায় বরাবরই জ্যোতিপ্রিয় ওরফে বালুর সঙ্গে তার দুরত্ব বেশ চওড়া । উত্তর ২৪ পরগণা জেলার রাজনীতিতে এ কথা কারও অজানা নয় । এমনকি বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক থাকাকালীন বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান বালু ঘনিষ্ঠ শংকর আঢ্যর সঙ্গেও বিশ্বজিতের সম্পর্ক ছিল কচু পাতায় জলের মতো ।

এরইমধ্যে ২০২২ সালে বনগাঁ সাংগঠনিক জেলায় তৃণমূলের সভাপতি হন বিশ্বজিৎ । এ নিয়ে বারংবার বিরোধী গেরুয়া শিবিরের কটাক্ষের শিকার হয়েছেন বিশ্বজিৎ । তবে এরই মধ্যে ইছামতী দিয়ে জল গড়িয়েছে অনেক দূর । বালু এখন জেলে আর মুকুল এখন রাজনৈতিক সন্যাস । তার ওপর নির্বাচনী বিধি । তাই ধরি মাছ না ছুঁই পানি আর চলবে না । সিদ্ধান্ত তাঁকে নিতেই হতো । বলছেন বনগাঁর সাধারণ মানুষ ।