চণ্ডীপুরের চণ্ডাল! বিমা এজেন্টকে ‘খুন’ করে বস্তাবন্দি করল দোকানদার

নিজস্ব সংবাদদাতা, চণ্ডিপুর: পাওনা টাকা সংক্রান্ত বিবাদের জেরে এক যুবককে খুন করে দোকানের ভিতরে গুম করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। কয়েক ঘণ্টার পর সন্ধ্যা ৭ টা…

নিজস্ব সংবাদদাতা, চণ্ডিপুর: পাওনা টাকা সংক্রান্ত বিবাদের জেরে এক যুবককে খুন করে দোকানের ভিতরে গুম করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। কয়েক ঘণ্টার পর সন্ধ্যা ৭ টা নাগাদ দোকানের ভেতর থেকে রক্তাক্ত বস্তাবন্দি যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করলো পুলিশ।

বস্তাবন্দি মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে মৃত যুবক গৌতম জানা (৪৮)। তার বাড়ি চণ্ডিপুর থানার চৌখালি গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ আঠাওর গ্রামের বাসিন্দা। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করতে গিয়ে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন।

উত্তেজিত গ্রামবাসীদের দাবি অভিযুক্তের কঠোরতম শাস্তি চাই। গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে প্রায় এক ঘন্টা চেষ্টা মৃতদেহটি উদ্ধার করে নিয়ে আসে চণ্ডিপুর থানার পুলিশ। যদিও অভিযুক্ত খুনী রঞ্জিত মাইতি’কে পলাতক রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চণ্ডিপুর থানার চৌখালি গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ আঠাওর গ্রামের মুদির দোকান রয়েছে রঞ্জিত মাইতি। এদিকে একটি জীবন বিমা সংস্থায় কাজ করেন গৌতম জানা। সেই সূত্র ধরে গৌতম জানা’র কাছ থেকে ব্যবসার জন্য কয়েক লক্ষ টাকা ধার দেন রঞ্জিত মাইতি বলে অভিযোগ।

মাসের পর বছর পেরিয়ে গেলেও সেই টাকা শোধ দেয়নি রঞ্জিত মাইতি বলে অভিযোগ। সোমবার সকালে টাকা চেয়ে দোকানে হাজির হয় গৌতম জানা বলে অভিযোগ। তখন’ই দুজনের মধ্যে বচসা শুরু হয়। দুপুর থেকে বিকাল গড়িয়ে গেলেও গৌতমের কোথাও সন্ধান পাননি পরিবারের সদস্য।

মোবাইলে ফোন করলে সুইচ অফ। পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি শুরু করলে জানতে পারে, স্থানীয় মুদি দোকানি রঞ্জিত মাইতির সঙ্গে বচসা হয়েছিল জানায় স্থানীয়রা। গৌতমের পরিবারের সদস্যরা গ্রামবাসীরা কোথায় আছে, জানতে চান? কিন্তু কিছু জানে না বলে জানিয়ে দেন রঞ্জিত মাইতি।

কথাবার্তায় অসঙ্গতি দেখা দিলে দোকানের ভেতরে দেখতে চান পরিবারের সদস্যরা থেকে গ্রামবাসীরা। কোন মতেই রাজি হয়নি। জোর করে দোকানে ঢুকতেই দেখে বস্তাবন্দি অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ততক্ষণে দোকান থেকে চম্পট দেয় মুদির দোকানে রঞ্জিত মাইতি।

এরপর চণ্ডিপুর থানা পুলিশকে খবর দেন গ্রামবাসীরা। পুলিশ এসে বস্তার ভিতর থেকে রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে। তারপরেই অভিযুক্তের শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হোন গ্রামবাসীরা। কোন রকমের মৃতদেহটি উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।

পুলিশের অনুমান, গৌতম জানাকে ভারি বস্তু দিয়ে আঘাত করে খুন করা হয়েছে! আর প্রমাণ লোপাটের জন্যই বস্তার ভিতর ঢুকিয়ে রেখে দেওয়া হয়। গভীর রাতে হয়তো, বস্তাবন্দি মৃতদেহটি পুকুরে বা খালে ফেলে দিতো? একজনের ক্ষেত্রে কি এমন খুন করা পর, বস্তাবন্দি করা সম্ভব? পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে চণ্ডিপুর থানার পুলিশ আধিকারিকেরা।

চণ্ডিপুর থানার ওসি বুদ্ধদেব মাল বলেন, “মৃতদেহটি উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়েছে। পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ তদন্তের আগে কিছু বলা সম্ভব নয়। পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়েছে।’’

যদিও এই ঘটনায় মৃত গৌতম জানা’র পরিবারের সদস্যদের কোন প্রতিক্রিয়া মেলেনি। অভিযুক্ত শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন এলাকার বিজেপি নেতৃত্ব থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা। তমলুক সাংগঠনিক জেলার বিজেপি নেতা পুলক কান্তি গুড়িয়া বলেন, “অভিযুক্তের কঠোরতম শাস্তি চাই। কোন কারনে অভিযুক্ত কঠোরতম শাস্তি না পায়, তাহলে হয়তো আরও অপরাধ বেড়েই যাবে। পুলিশ প্রশাসনকে অনুরোধ করবো তদন্ত করে শাস্তি প্রদান করে৷”