Rampurhat Massacre: শনিতে সিবিআই ‘সর্বনাশা’ জেরার ভয় অনুব্রতর

দশজনকে কেটে খুন। তার পর পুড়িয়ে দিয়ে দেহ লোপাটের চেষ্টা। গত পাঁচ দশকে এত বড় সংখ্যালঘু গণহত্যার আর কোনও নজির পশ্চিমবঙ্গে নেই। যেমনটা ঘটে গিয়েছে…

TMC leader arrested after CM Mamata Banerjee's directive

দশজনকে কেটে খুন। তার পর পুড়িয়ে দিয়ে দেহ লোপাটের চেষ্টা। গত পাঁচ দশকে এত বড় সংখ্যালঘু গণহত্যার আর কোনও নজির পশ্চিমবঙ্গে নেই। যেমনটা ঘটে গিয়েছে গত সোমবার রামপুরহাটের (Rampurhat Massacre) বগটুই গ্রামে। এই গণহত্যার তদন্তে বীরভূমে পৌঁছে গেছে সিবিআই।

ডিআইজি অখিলেশ সিংয়ের নেতৃত্বে সিবিআইয়ের বিশাল টিম শুক্রবার রাতেই রামপুরহাটে পৌঁছেছে। তদন্তকারী দলে রয়েছেন ১৫ জন। সূত্রের খবর বগটু়ই গ্রামে যেমন তদন্ত করবে তেনন জেরার মুখে পড়তে চলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল।

   

শনিবারই সরেজমিনে সিবিআই তদন্ত শুরু। শনিতেই সিবিআই সর্বনাশ দেখছে তৃণমূল কংগ্রেস। অনুব্রত মণ্ডলকে যে কোনও সময় গ্রেফতার করা হতে পারে এমনই আশঙ্কা। তেমনই অনুব্রতর অসুস্থ হওয়ারও প্রবল সম্ভাবনা। কারণ আগেও গরু পাচার সহ বিভিন্ন সময় সিবিআই শমন পেয়েও অনুব্রত (কেষ্ট) বারবার অসুস্থ হয়ে হাজিরা এড়িয়েছেন।

আদালতের রায়কে মানি। কোর্ট যা বলেছে সেরকমই তদন্ত হবে। শুক্রবার বোলপুরে দলীয় কার্যালয়ে বসে বগটুই গ্রামের গণহত্যায় সিবিআই তদন্ত নিয়ে এমনই জানান টিএমসি বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। লুঙ্গি, হাফহাতা নীল গেঞ্জি পরে একেবারে বেপরোয়া ভঙ্গিতে কথা বলতে গিয়ে ‘টেনশন’ ফুটে উঠছিল অনুব্রত (কেষ্ট) মণ্ডলের। রামপুরহাটের বগটুই গ্রামেগ্রামেই গণহত্যার তদন্তে সিবিআই আসছে জেলায়। ফলে চাপা উত্তেজনা পুরো তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে। দলেই ফিসফাস, কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বের হবে। তখন কী হবে!

কলকাতা হাইকোর্ট বগটুই গ্রামে দশ জন সংখ্যালঘুকে খুন করার মামলায় রাজ্য সরকারের তদন্তে ভরসা রাখেনি। সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। তদন্তের ভার পেয়ে যাবতীয় দিক খতিয়ে দেখা শুরু করেছে সিবিআই।

সিবিআই দল কি বোলপুরে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে হানা দেবে? জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কিছু নেতা মনে করছেন তেমন সম্ভাবনা প্রবল। চাপের মুখে ‘দাদা’ ফের অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। এমনিতেই ওনার মাথায় অক্সিজেন কম যায়, বুকে ব্যথা হয়। জানিয়েছেন সেই নেতারা।

এর আগে যতবার সিবিআই বিভিন্ন মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে শমন পাঠিয়েছিল প্রত্যেকবার অসুস্থ হয়েছিলেন তিনি। এবার কী হবে? বোলপুর সহ পুরো রাজ্য জুড়ে এই প্রশ্ন।

রামপুরহাটের বগটু়ই গ্রামের গণহত্যায় সিবিআই তদন্ত নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, আদালতের নির্দেশ মানবে রাজ্য সরকার। তবে সিবিআই যদি বিজেপির দেখানো পথে হাঁটে তাহলে আন্দোলন হবে। অন্যান্য টিএমসি নেতারা সিবিআই তদন্ত নিয়ে প্রতিক্রিয়া বারবার বিজেপির প্রতিহিংসা রাজনীতিকে সামনে আনছেন।

যদিও বিরোধী দল বিজেপি বলছে গণহত্যার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত রাজ্য করলে সত্য বের হবে না। সিবিআই তদন্তে উঠে আসবে সত্যিটা।

বীরভূম জেলা সিপিআইএমের দাবি, তদন্ত সঠিক হলে তৃণমূল কংগ্রেসের ঘাড়ে বিপদ। দলটির রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বগটু়ই গ্রামে গিয়ে প্রকাশ্যে তৃণমূলের বেআইনি বালি ও পাথর খাদানের বখরা নিয়ে গন্ডোগোলের জেরে গণহত্যা হয়েছে বলে দাবি করেন।

গণহত্যার পরপরই বীরভূম জেলা টিএমসি সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেছিলেন, শর্টশার্কিট থেকে আগুন ছড়িয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে। পরে ফরেন্সিক তদন্তে প্রকাশ হয়, গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিল বগটুই গ্রামে। দশ জনকে কেটে খুন করে তেলে চুবিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

এলাকার তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠী রাজনীতি ও বালি পাথরের চোরাচালানের বখরা নিয়েই স্থানীয় টিএমসি উপপ্রধান ভাদু শেখকে বোমা মেরে খুন করা হয় সোমবার। সেই রাতে বগটুই গ্রামে শিশু মহিলা সহ দশ জনকে খুন করা হয়। বিশ্লেষণে উঠে আসছে, পশ্চিমবঙ্গে এত বড় সংখ্যালঘু গণহত্যা গত চার পাঁচ দশকে হয়নি।