নিজস্ব সংবাদদাতা, পটাশপুর: স্কুলের শিক্ষাদানের বদলে, ছাত্র-ছাত্রীদের বেধড়ক মারধর করল মদ্যাপ শিক্ষক। মদ্যাপ শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবিতে গ্রামবাসী থেকে অভিভাবকেরা। স্কুলে মদ্যপ অবস্থায় ছাত্র ছাত্রীদের বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল স্কুলের সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
গ্রামবাসীরা মদ্যাপ শিক্ষক সহ বাকি শিক্ষকদের ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ এসে শিক্ষকদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। তারপরেই পরিস্থিতি শান্ত হয়। ঘটনাটি ঘটছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুরের ভূবন মঙ্গলপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। মদ্যাপ শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চলেছে পূর্ব মেদিনীপুর প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই স্কুলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছিলেন জীতেন্দ্রনাথ সিংহ। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক থাকাকালীন মাঝে মধ্যেই এভাবেই মদ্যপ অবস্থায় স্কুলে আসতেন বলে অভিযোগ অভিভাবক থেকে গ্রামবাসীরা। নতুন প্রধান শিক্ষক স্কুলে যোগদান করায় জীতেন্দ্রনাথ সিংহ এখন সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে আবারও ওই শিক্ষক মদ্যপ অবস্থায় টলমল পায়ে স্কুলে আসেন।
ক্লাস নেওয়ার সময় শ্রেণি কক্ষের মধ্যে তিন চারজন ছাত্র ছাত্রীকে বেধড়ক মারধর করেন অভিযোগ। তারপরে অসুস্থ হয়ে স্কুলের মধ্যে বমি করতে করতে মাটিতে শুয়ে পড়েন শিক্ষক। ঘটনার খবর পেয়ে গ্রামবাসী ও অভিভাবকেরা স্কুল এসে বিক্ষোভ দেখায়। অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবীতে অনান্য শিক্ষকদের আটকে রাখেন। পটাশপুর থানার পুলিশ গিয়ে আহত শিক্ষক সহ আটক শিক্ষকদের উদ্ধার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। ঘটনার পর অমর্ষি উত্তর চক্রের স্কুল পরিদর্শক স্কুলে এসে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। গোটা ঘটনা জেলা প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শককে জানানো হয়।
বিক্ষোভকারী এক গ্রামবাসী বলেন, “ওই শিক্ষক প্রায়ই মদ্যাপ অবস্থায় স্কুলে আসত। কিন্তু এবার মদ্যাপ অবস্থায় ছাত্র-ছাত্রীদের মারধর করেছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের কঠোরতম শাস্তি চাই৷”
পটাশপুর থানার ওসি রাজু কুণ্ডু বলেন, “গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের কথা শুনে স্কুল থেকে ওই শিক্ষকদের আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে ওই শিক্ষকদের থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কোন লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। অভিযোগ পেলে পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হবে৷”
পটাশপুর ২ ব্লকের ভিডিও শঙ্খ ঘটক বলেন, “মদ্যাপ অবস্থায় ওই শিক্ষক স্কুলে এসে ছাত্র ও ছাত্রীদের মারধর করেছে বলে অভিযোগ এসেছে। গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ দেখালে পুলিশ এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷”
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, “অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক ও পটাশপুর থানা পুলিশকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। এই ধরনের ঘটনা কোন মতেই মেনে নেওয়া হবে না৷”