কলকাতা: শুক্রবার রতে দুর্গাপুরের (Durgapur) বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রীর গণধর্ষণের (Gangrape) ঘটনার কথা সামনে উঠে আসতেই শুরু হয়েছে তুমুল শাসক-বিরোধী তরজা। রাজ্যে, বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে ফের তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে বিজেপি। আর জি করের (R G Kar) মত নৃশংস ঘটনার পরেও যে নারী সুরক্ষায় রাজ্য সরকার এবং প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই, দক্ষিণ কলকাতার আইন কলেজ এবং দুর্গাপুরের মেডিক্যাল কলেজের ঘটনা তার জলজ্যান্ত প্রমাণ বলে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি (BJP)।
বিজেপির তোপ
বিজেপির আইটি শাখার প্রধান অমিত মালব্য (Amit Malviya) এক্সে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) নিশানা করে লিখেছেন, “ফের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনের আইনশৃঙ্খলার ব্যর্থতার প্রমাণ পাওয়া গেল। অধীনে একটি বিরক্তিকর ধরণ প্রকাশ করে। এই ঘটনায় স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করতে হবে, যা আর জি করের ক্ষেত্রে হয়নি।” তিনি আরও বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ নারীদের জন্য নিরাপদ নয়। তৃণমূল সরকারের পতন না হলে রাজ্যজুড়ে নারীরা ভয়ের মধ্যে বাস করতে থাকবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ২০২৬ সালেই চলে যেতে হবে।”
পাল্টা সরব তৃণমূল
বিজেপির অভিযোগের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ করেছেন তৃণমূলের নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা (Shashi Panja)। ডাক্তারি পড়ুয়ার গণধর্ষণের ঘটনায় তিনি বলেন, “এখানে কি রাজনীতির কোনও জায়গা আছে? আর যদি কেউ রাজনৈতিক বক্তব্য দেন, তাহলে তাদের জিজ্ঞাসা করুন ওড়িশায় মেয়েদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ সম্পর্কে তাদের কী বলার আছে। তাঁরা নিজেদের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন। মণিপুরে কিছু ঘটলে যারা চুপ থাকে, তারা যন্তর মন্তরে প্রতিবাদ করার সময় স্বর্ণপদকজয়ী মেয়েদের সাথে কী করছিল?”
কলেজে নিরাপত্তা না থাকার অভিযোগ নির্যাতিতার বাবার
শুক্রবার রাত ১০ টা নাগাদ দুর্গাপুরের (Durgapur) বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাস থেকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে পাশের জঙ্গলে গণধর্ষণ করা হয় ওড়িশার ওই ছাত্রীকে বলে অভিযোগ। ঘটনায় কলেজের নিরাপত্তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন নির্যাতিতা ছাত্রীর বাবা।
তিনি বলেন, “বান্ধবীর সঙ্গে ৮.৩০ টা নাগাদ ক্যাম্পাসের বাইরে ফুচকা খেতে গিয়েছিল আমার মেয়ে। তাঁর প্রেমিক ওয়াসিফ আলি তাঁকে ফোন করে বাইরে যেতে বলে। এরপর তিন চারজন ওদের ঘিরে ধরে এবং ফোন ছিনিয়ে নেয়।” সংবাদসংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ছাত্রীর বাবা বলেন, “কলেজের হোস্টেল অনেক দূরে। আমার মেয়ে খাওয়ার জন্য বাইরে গেছিল। এখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যাপ্ত নয়। এত গুরুতর ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”
অন্যদিকে অভয়ার পর আরও এক মেডিক্যাল ছাত্রীর গণধর্ষণের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ডাক্তার ফ্রন্ট (WBDF)। ন্যায়বিচার দাবি করে, WBDF বলেছে, ভারতের প্রধান বিচারপতির বিষয়টি বিবেচনা করা এবং বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া উচিত।