কালীপুজোয় বারাসত ও মধ্যমগ্রামে ভিড় সামলাতে পুলিশের বিশেষ পরিকল্পনা

গতকালই শেষ হয়েছে লক্ষ্মীপুজো। তার রেশ কাটতে না কাটতেই রাজ্যের একাধিক জায়গায় শুরু হয়ে গিয়েছে কালীপুজোর প্রস্তুতি। বিশেষ করে উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত ও মধ্যমগ্রামে…

Police Unveil Special Crowd Management Plan for Kali Puja in Barasat and Madhyamgram

গতকালই শেষ হয়েছে লক্ষ্মীপুজো। তার রেশ কাটতে না কাটতেই রাজ্যের একাধিক জায়গায় শুরু হয়ে গিয়েছে কালীপুজোর প্রস্তুতি। বিশেষ করে উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত ও মধ্যমগ্রামে (North 24 Pargana) কালীপুজো মানেই এক অন্য রকম আবেগ, এক অন্য রকম রঙিন উৎসব। এখানকার কালীপুজো শুধু ধর্মীয় নয়, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক দিক থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। প্রতি বছর দুর্গাপুজোর সমতুল্য ভিড়, আলো, থিম ও আড়ম্বর দেখা যায় এই অঞ্চলের কালীপুজো ঘিরে।

Advertisements

এই দুই অঞ্চলে বিগ বাজেটের পুজোগুলোর মধ্যে থিমের প্রতিযোগিতা ক্রমশ বাড়ছে। বিভিন্ন ক্লাব ও পুজো উদ্যোক্তারা ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছেন মণ্ডপ নির্মাণ ও প্রতিমা তৈরির কাজ। কারও থিম নারীশক্তি, তো কারও থিম পরিবেশ রক্ষা। আবার কেউ তুলে ধরছে ঐতিহ্যবাহী শিল্পকলাকে। উদ্যোক্তারা বলছেন, “আমরা চিরাচরিত ধারার বাইরে গিয়ে এমন কিছু ভাবতে চাই, যাতে দর্শনার্থীরা শুধু পুজো নয়, একটা বার্তা নিয়েও বাড়ি ফেরেন।” দর্শনার্থীদের ভিড় সামলানো, যান নিয়ন্ত্রণ এবং অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বারাসত জেলা পুলিশ এবার আগেভাগেই প্রস্তুতি শুরু করেছে। বিভিন্ন পুজো কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে পুলিশ প্রশাসন নিরাপত্তা সংক্রান্ত একাধিক দিক নিয়ে আলোচনা করেছে।

   

জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “বারাসত ও মধ্যমগ্রামে কালীপুজোর সময় বিপুল সংখ্যক মানুষ রাস্তায় নামেন। অনেকেই গভীর রাত পর্যন্ত ঠাকুর দেখেন। সেই কারণে ভিড় নিয়ন্ত্রণ, সিসিটিভি নজরদারি, মোবাইল পেট্রোলিং, ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা— সবদিকেই বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।”

দর্শনার্থীরা যাতে নিরাপদে এবং আরামে ঠাকুর দেখতে পারেন, তার জন্য বারাসত ও মধ্যমগ্রামে একাধিক পথনির্দেশিকা বসানো হচ্ছে। পাশাপাশি, কিছু জনপ্রিয় পুজোমণ্ডপে ‘ওয়ান ওয়ে’ দর্শনার্থী প্রবেশ ও নির্গমনের পথ চালু করা হবে। ভিড় সামাল দিতে প্রয়োজনে লাঠিচার্জ নয়, বরং ‘সফট কন্ট্রোল’ মডেল ব্যবহার করার কথা ভাবছে পুলিশ। প্রতিমা দর্শনের পাশাপাশি এখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোর খেলা ও নানা ধরনের স্টলও থাকে। তাই নিরাপত্তার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকছে বিশেষ নজরে।

কালীপুজো মানেই আলো, থিম, আনন্দ আর আড্ডা। এলাকার মানুষ বলছেন, “দুর্গাপুজোর পর কালীপুজোতেই আবার মেতে ওঠে বারাসত। রাস্তাঘাট রঙিন হয়ে ওঠে, পাড়া-প্রতিবেশে খুশির হাওয়া বইতে থাকে।” বিশেষ করে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও দোকানদারদের মধ্যে এই সময়টা নিয়ে থাকে বাড়তি প্রত্যাশা। কারণ উৎসব মানেই বাড়তি বিক্রি, বাড়তি রোজগার।