Mamata Banerjee: আদালত অবমাননা! বিরাট বিপদে পড়তে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

লোকসভা ভোট চলাকালীন হাইকোর্টের রায়ে চাকরি গিয়েছে ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের। এরপর হাইকোর্ট এবং বিচারপতিদের উদ্দেশ্যে একাধিক মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মুখ্যমন্ত্রীর…

Mamata Banerjee with Calcutta High Court

লোকসভা ভোট চলাকালীন হাইকোর্টের রায়ে চাকরি গিয়েছে ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের। এরপর হাইকোর্ট এবং বিচারপতিদের উদ্দেশ্যে একাধিক মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মুখ্যমন্ত্রীর সেই মন্তব্য ঘিরে তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয়। আইনজীবীরা অভিযোগ করেন, মুখ্যমন্ত্রী আদালত অবমাননা করেছেন। এবার এই ইস্যুতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।

বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে এই বিষয়টি উত্থাপন করেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করার দাবি জানান তিনি। মমতা বলেছিলেন, হাইকোর্টের বিচারপতিরা পক্ষপাতদুষ্ট। হাইকোর্টকে কিনে নেওয়া হয়েছে। এই দুই মন্তব্যে আদালত অবমাননা হয়েছে বলে দাবি করে পদক্ষেপ করার কথা বলেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।

সোমবার ২০১৬ সালের এসএসসির পুরো প্যানেল বাতিলের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চের এই নজিরবিহীন রায়ের ফলে চাকরি হারান ২৫ হাজার ৭৫৩ জন। এরপরই আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে সুর চড়ান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে চাকরিহারাদের পাশে থাকার বার্তা দেন তিনি।

মমতা বলেছিলেন, দেশজুড়ে বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। আমরা চাকরি দিচ্ছি। কিন্তু আইনের খোঁচা মেরে চাকরি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। বিজেপির লোকদের হাইকোর্টে বসানো হয়েছে। ওটা বিজেপির বিচারালয় হয়ে গিয়েছে। ‘বেআইনি’ অর্ডার। আমরা এটা নিয়ে উচ্চ আদালতে যাচ্ছি। চিন্তা করবেন না শিক্ষক-শিক্ষিকারা এবং ছাত্রছাত্রীরা। আপনাদের পাশে কেউ না থাকলেও আমি আছি। প্রসঙ্গত, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই উচ্চ আদালতে গিয়েছে রাজ্য।

তৃণমূল সাংসদ তথা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও নিয়োগ দুর্নীতিতে হাইকোর্টের এই রায় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘ত্রুটিপূর্ণ রায়। ৫ মিনিটে আমরা সুপ্রিম কোর্টে স্থগিতাদেশ পেয়ে যাব। যারা চাকরি করছেন, তাঁদের সবাইকে বলব, আপনারা নিশ্চিন্ত থাকুন। কারও চাকরি যাবে না। কয়েকজনের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তার জন্য এভাবে পুরো প্যানেল বাতিল করে দেওয়া যায় না। এটা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়।’

প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন আইনজীবী ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, এটা ফৌজদারি অবমাননা, বিভিন্ন পত্রিকায় রিপোর্ট জমা দিচ্ছি। তিনি (মুখ্যমন্ত্রী) বলছেন, পুরো হাইকোর্ট বিক্রি হয়ে গিয়েছে। আমরা অনেক কষ্ট করে মামলা করি। বিচারকরা আমাদের কথা শোনেন এবং তারপর রায় দেন। হাইকোর্টকে উপহাস করতেই এই মন্তব্য করেছেন তিনি (মুখ্যমন্ত্রী)।

আইনজীবী ভট্টাচার্য আঞ্চলিক (বাংলা) এবং ইংরেজি, উভয় ভাষার সংবাদপত্রের রিপোর্টও জমা দেন। মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল ওই সব সংবাদপত্র। প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রীর ওই একই মন্তব্যকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আরও একটি পিটিশন দাখিল করা হয়েছিল। সেই অনুযায়ী আদালত এই বিষয়ে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে এবং তা শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত করেছে।