শিলিগুড়ি: বন্যা (North Bengal Disaster) পরিস্থিতি ক্ষতিয়ে দেখতে এবং ত্রাণ বিতরণে গিয়ে নাগরাকাটায় সাংসদ খগেন মুর্মূর (Khagen Murmu) পাশাপাশি আক্রান্ত হয়েছিলেন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ (Shankar Ghosh)। হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থাতেই সংবাদসংস্থার সাক্ষাৎকারে শাসকদলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন তিনি।
শনিবার শঙ্কর ঘোষ (Shankar Ghosh) বলেন, “অপরাধীদের এই রাজ্য পরিচালনা করতে দেব না। আমরা দেশের নাগরিকই এই দেশকে চালাই”। পাশাপাশি “গুন্ডাদের দিয়ে তৃণমূল পরিকল্পিতভাবেই সোমবার তাঁদের উপর হামলা করিয়েছে তৃণমূল” বলে এদিনও দাবী করলেন শঙ্কর। তৃণমূল রাজ্যে এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছে “যেখানে যে কারও প্রাণসংশয় হতে পারে” বলে মন্তব্য করেন তিনি।
উত্তরবঙ্গ নিয়ে কি বললেন শঙ্কর?
“একবার হামলা হোক অথবা বারংবার, আমাকে আমার কর্তব্য থেকে সরাতে পারবে না। উত্তরবঙ্গে বন্যা বিধ্বস্তদের জন্য আমি ত্রাণ বিলি করবই”, বলে সাফ জানালেন বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ (Shankar Ghosh)। “ত্রাণ সংগ্রহ এবং বিলি করা মানুষের অধিকার। একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাকে এই কাজ করা থেকে কেউ আটকাতে পারবে না”।
শঙ্করদের উপর হামলার ঘটনায় পুলিশের জালে ৪
সোমবার জলপাইগুড়ির নাগরাকাটায় বন্যা পরিদর্শন ও ত্রাণ দিতে দিয়ে স্থানীয়দের হাতে আক্রান্ত হয়েছিলেন মালদহ উত্তরের লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মূ ও শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। এই ঘটনায় বুধ ও বৃহস্পতিবার মিলিয়ে নাগরাকাটা থেকেই মোট ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে ধৃতেরা তৃণমূল বা অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত কিনা সেই বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি।
অভিযোগ, ত্রাণ দিতে পৌঁছলে স্থানীয় ‘তৃণমূল গুন্ডারা’ বিজেপি জনপ্রতিনিধিদের গাড়ি লক্ষ্য কোরে পাথর ছোঁড়ে। ঘটনায় মাথায় গুরুতর আঘাত পান খগেন। গলগল কোরে রক্ত বেরতে থাকে। সজোরে ধাক্কা দেওয়ায় হাটে আঘাত লাগে শঙ্করের। তাঁদের দুজনকেই শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুধবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন শঙ্কর ঘোষ। তবে সাংসদ খগেন মুর্মূ এখনও চিকিৎসাধীন।
বিজেপি-তৃণমূল তরজা তুঙ্গে
রবিবার যখন বন্যায় ভাসছিল উত্তরবঙ্গ তখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কার্নিভালের মঞ্চে টলিউড তারকাদের সঙ্গে ‘নাচছিলেন’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ‘ইমেজ ঠিক’ করতে ত্রাণ দিতে যাওয়া বিজেপি সাংসদ-বিধায়কদের উপর দলীয় গুন্ডা লেলিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে তোপ দেগেছিল পদ্ম-শিবির।
অন্যদিকে, বন্যা কবলিত উত্তরবঙ্গে ত্রাণের নামে ‘ফটো শুট’ করতে গিয়েছিলেন খগেন-শঙ্কর বলে পাল্টা তোপ দাগে শাসকদল। পাশাপাশি, আক্রমণের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছিল তৃণমূল। ঘটনার পরের দিন খগেনকে হাসপাতালে দেখতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তবে শঙ্কর ঘোষের সঙ্গে দেখা করেননি তিনি।