নিজস্ব সংবাদদাতা | কলকাতা, ৮ অক্টোবর ২০২৫: উত্তরবঙ্গের ভয়াবহ বন্যা ও ধসে যখন হাজার হাজার মানুষ বিপর্যস্ত, তখন রাজনৈতিক লাভ–ক্ষতির হিসাব না কষেই ত্রাণ ও উদ্ধার কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)। গ্রামে গ্রামে পৌঁছে যাচ্ছে খাবার, পানীয় জল, ত্রিপল, এমনকি শিশুদের জন্য দুধ পর্যন্ত।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নাগরাকাটা, বানরহাট, মিরিক ও বিজনবাড়ি—এই চারটি সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে সংঘের স্বয়ংসেবকরা সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। তাঁদের মূল লক্ষ্য, দুর্গত পরিবারগুলিকে অন্তত প্রাথমিক সুরক্ষা ও খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা।
রাজনীতির বাইরে মানবসেবা
বিশেষজ্ঞদের মতে, আরএসএস ভোট রাজনীতিতে সরাসরি অংশ নেয় না। তাই তাদের এই তৎপরতা নিছক মানবিক উদ্যোগ হিসেবেই দেখা হচ্ছে। সংঘের এক স্বেচ্ছাসেবক বলেন, “মানুষের বিপদ মানেই আমাদের দায়িত্ব। এখানে রাজনীতি নেই, আছে শুধু সেবার মানসিকতা।”
কীভাবে চলছে ত্রাণ কার্যক্রম?
- প্রতিদিন দুর্গত গ্রামগুলোতে রান্না করা খাবার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
- শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য আলাদা করে শুকনো খাবার, দুধ ও ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে।
- যারা গৃহহীন হয়েছেন, তাঁদের হাতে ত্রিপল তুলে দেওয়া হচ্ছে।
- কিছু এলাকায় কাদায় আটকে থাকা মানুষদের উদ্ধার কাজেও সাহায্য করছেন সংঘ কর্মীরা।
দুর্গত এলাকার চিত্র
নাগরাকাটায় অন্তত ২০০ পরিবার গৃহহীন হয়েছেন। বানরহাটে ধসে ভেঙে পড়েছে একাধিক কাঁচা বাড়ি। বিজনবাড়ি ও মিরিকে বহু রাস্তা ধসে অবরুদ্ধ। সরকারি ত্রাণ পৌঁছাতে দেরি হলেও আরএসএস-এর ছোট ছোট দল স্থানীয়দের সহায়তায় কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া
এক দুর্গত পরিবার জানান, “সরকারি ত্রাণ এখনও আসেনি। কিন্তু আরএসএস-এর ছেলেরা প্রথম দিন থেকেই আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে।”
বিশেষজ্ঞদের মত
সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, আরএসএস দীর্ঘদিন ধরেই দুর্যোগে মানবিক সাহায্যের জন্য পরিচিত। ভূমিকম্প থেকে বন্যা—প্রতিবারই সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা সবার আগে মাঠে নেমে পড়েছেন। উত্তরবঙ্গেও তার অন্যথা হয়নি।
বন্যা ও ধসে বিধ্বস্ত উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি এখনো সংকটজনক। প্রশাসন উদ্ধারকাজে নিয়োজিত হলেও, আরএসএস-এর এই নিঃস্বার্থ মানবসেবা দুর্গত মানুষদের মনে নতুন করে আশা জাগিয়েছে।