অয়ন দে, নাগরাকাটা: নাগরাকাটায় পৌঁছে ত্রাণ ও উদ্ধারকাজের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সোমবার সকালে দুর্গত এলাকা ঘুরে তিনি প্রশাসনকে দ্রুত উদ্ধার কার্যক্রম এবং পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এনডিআরএফ শুধু কেন্দ্রের নয়, আমাদের সঙ্গেও ওদের চুক্তি আছে। এটি কোনো কেন্দ্রের দান নয়, রাজ্যও এনডিআরএফকে অর্থ প্রদান করে। অথচ মিথ্যে প্রচার চলছে।”
সোমবার বাগডোগরা বিমানবন্দরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য দাবি করেছিলেন, “রাজ্য উদ্ধারকাজে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। যা কিছু কাজ হচ্ছে, তা কেন্দ্রের তত্ত্বাবধানে।” নাগরাকাটায় পৌঁছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, রাজ্য সরকারও এনডিআরএফের সঙ্গে সমন্বয় করছে। তিনি নাম না করে বিজেপিকে সতর্ক করে বলেন, “দুর্যোগের সময় বিভ্রান্তি ছড়ানো উচিত নয়। মানবিকতার খাতিরে রাজনীতি না করার অনুরোধ করছি।”
ত্রাণ শিবিরে দাঁড়িয়ে মৃতদের পরিবারের পাশে সমবেদনা জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি ঘোষণা করেন, “প্রত্যেক মৃত পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ এবং একজনকে বিশেষ হোমগার্ডের চাকরি দেওয়া হবে।” যাদের বাড়িঘর ভেঙেছে, তাদেরও আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দেন।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই বন্যা মূলত ভুটান থেকে অতিরিক্ত জল ছাড়া এবং ভারী বৃষ্টির কারণে হয়েছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, আকাশ পরিষ্কার হলেও বিপদ এখনও কমেনি। আগামী দু’দিনে হাই টাইডের আশঙ্কা রয়েছে। তিনি বলেন, “নতুন করে কোনো প্রাণ যেন না ঝরে। প্রাণের চেয়ে বড় কিছু নেই। বেঁচে থাকলে ঘরবাড়ি পুনর্নির্মাণ সম্ভব, কিন্তু প্রাণ গেলে তা আর ফেরানো যায় না।”
নদী সংলগ্ন বিপজ্জনক এলাকায় যারা বাস করছেন, তাদের দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে স্থানান্তর করতে প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। নাগরাকাটার ত্রাণ শিবিরে কার্যক্রম তদারকি করে স্থানীয়দের ত্রাণ, খাবার ও চিকিৎসা নিশ্চিত করেন।
মুখ্যমন্ত্রী আগামীকাল মিরি এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রমের জন্য যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। এই পদক্ষেপ প্রমাণ করছে, রাজ্য সরকার দুর্যোগ মোকাবেলায় সক্রিয় এবং কেন্দ্রীয় সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় রেখে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।