জলপাইগুড়ি দিনবাজারের পুরনো দাবি পূরণ না হওয়ায় ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ, পৌর সভার অভিযান নিয়ে বিতর্ক

২০১৫ সালে জলপাইগুড়ি দিনবাজারে (Jalpaiguri)বড় ধরনের আগুন লেগে পুরো বাজারটি পুড়ে গিয়েছিল। সেই সময়েই মুখ্যমন্ত্রী একটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, এক টাকার বিনিময়ে ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন…

Jalpaiguri Dinbazar Traders' Anger Over Unfulfilled Demands, Controversy Over Municipal Corporation's Drive

২০১৫ সালে জলপাইগুড়ি দিনবাজারে (Jalpaiguri)বড় ধরনের আগুন লেগে পুরো বাজারটি পুড়ে গিয়েছিল। সেই সময়েই মুখ্যমন্ত্রী একটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, এক টাকার বিনিময়ে ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন দোকান বরাদ্দ করা হবে।

কিন্তু দীর্ঘ সাত বছর পেরিয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত সেই প্রতিশ্রুতি পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। এই কারণে, বাজারে ব্যবসায়ীরা (Jalpaiguri)অযথা ফুটপাথ ও রাস্তার পাশে দোকান গড়ে তুলে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন, যার ফলে বাজারে ভিড় বেড়ে গেছে এবং স্থানীয় প্রশাসনও বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালিয়ে ব্যবসায়ীদের (Jalpaiguri)সতর্ক করে দিচ্ছে। তবে, এসব দাবির বিরুদ্ধে জলপাইগুড়ি পৌরসভা ও ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যে বিতর্ক এবং অমিল দেখা দিয়েছে।

   

শুক্রবার, জলপাইগুড়ি পৌরসভা (Jalpaiguri) বিশেষ অভিযান চালিয়ে শহরের দিনবাজারে ফুটপাথে ব্যবসা করা দোকানদারদের সতর্ক করে। পৌরসভা কর্তৃপক্ষের নেতৃত্বে ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায় নিজে ত্রিপল কেটে দেন এবং দোকানদারদের সরকারি নির্দেশিকা মেনে চলার জন্য আহ্বান জানান। পৌরসভা জানিয়েছে, যে কোনো ধরনের অবৈধ দখল থেকে শহরকে মুক্ত করার জন্য তারা নিয়মিত অভিযান চালিয়ে যাবে। তবে, এই অভিযান (Jalpaiguri)কার্যক্রমের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন দিনবাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সম্পাদক শরৎ দাস।

শরৎ দাস বলেন, “আগুন লেগে বাজার পুড়ে যাওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন যে, দ্রুত নতুন ভবন তৈরি করে ব্যবসায়ীদের তা দেওয়া হবে। কিন্তু দীর্ঘ সাত বছর পরেও সেই ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়নি। ফলে বাধ্য হয়ে আমরা ফুটপাথে বসে ব্যবসা করছি। আমরা জানি যে, যদি নতুন ভবন তৈরি হয়, তাহলে এই অযথা ভিড় কমে যাবে এবং ব্যবসায়ীরা একসঙ্গে একটি নিরাপদ পরিবেশে ব্যবসা করতে পারবেন।”

তিনি আরও বলেন, “এখন পর্যন্ত নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শেষ না হওয়ায়, ব্যবসায়ীরা জীবিকার জন্য বাধ্য হয়ে ফুটপাথে বা রাস্তার পাশে বসে ব্যবসা করছেন। এমন পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এবং প্রশাসনের এই ধরনের অভিযান ব্যবসায়ীদের জন্য আরও সমস্যার সৃষ্টি করছে।”

পৌরসভা পক্ষ থেকে ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছিলেন এবং যথাসময়ে বাজারের জন্য নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। তবে এই কাজের জন্য কিছু সময় প্রয়োজন এবং সেজন্য আমরা ব্যবসায়ীদের সহানুভূতির সঙ্গে আচরণ করছি। কিন্তু অবৈধ দখল, ফুটপাথে ব্যবসা বা রাস্তা দখল করাটা আইনগতভাবে ঠিক নয়। আমাদের লক্ষ্য শহরকে পরিচ্ছন্ন ও সুশৃঙ্খল রাখা।”

এই ধরনের পরিস্থিতি আরও কয়েকটি শহরে দেখা যায়, যেখানে বাজারে পর্যাপ্ত পরিকাঠামো না থাকার কারণে ব্যবসায়ীরা ফুটপাথে বসে ব্যবসা করছেন। অনেক সময় প্রশাসন এসবের বিরুদ্ধে অভিযান চালায়, কিন্তু বাজারের মধ্যে একমাত্র সমাধান যদি না থাকে, তাহলে ব্যবসায়ীরা কীভাবে তাদের জীবিকা নির্বাহ করবেন? এমন প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, শহরগুলির জন্য একটি উন্নত পরিকাঠামো তৈরি করা খুবই জরুরি, যাতে ব্যবসায়ীরা একত্রিতভাবে নিরাপদভাবে ব্যবসা করতে পারেন এবং জনগণের জন্যও একটি সুবিধাজনক পরিবেশ তৈরি হয়।

এদিকে, দিনবাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জানিয়েছে। তারা মনে করে, যদি নতুন ভবন দ্রুত তৈরি করা হয়, তাহলে ব্যবসায়ীদের সমস্যা কমবে এবং বাজারের অব্যবস্থাপনাও দূর হবে। তবে, এই সমস্যার সমাধান কবে হবে, তা নিয়ে এখনও কোনও স্পষ্ট সময়সীমা দেওয়া হয়নি।

এটা পরিষ্কার যে, নতুন ভবনের নির্মাণ কার্যক্রম সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত, জলপাইগুড়ি দিনবাজারের ব্যবসায়ীরা সমস্যায় পড়তে থাকবেন এবং প্রশাসনও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে থাকবে। ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে একদিকে যেমন নতুন ভবন তৈরি করার দাবি জানানো হচ্ছে, তেমনি প্রশাসনের পক্ষ থেকেও আইন মেনে চলার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। এখন দেখার বিষয় হলো, দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান কিভাবে হয়।