নন্দীগ্রামে মূর্তি ভাঙচুরের অভিযোগ, তৃণমূলকে তীব্র কটাক্ষ শুভেন্দুর

বিজেপি নেতা এবং নন্দীগ্রাম বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী শুক্রবার তার এলাকায় মূর্তি ভাঙচুরের অভিযোগ তুলেছেন। তার দাবি, পশ্চিমবঙ্গের নন্দীগ্রামের কামালপুর গ্রামে এক স্থানীয় পূজা উপলক্ষে মন্দিরে…

nandigram-idol-vandalism-shuvendu-adhikari-tmc-bjp-west-bengal

short-samachar

বিজেপি নেতা এবং নন্দীগ্রাম বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী শুক্রবার তার এলাকায় মূর্তি ভাঙচুরের অভিযোগ তুলেছেন। তার দাবি, পশ্চিমবঙ্গের নন্দীগ্রামের কামালপুর গ্রামে এক স্থানীয় পূজা উপলক্ষে মন্দিরে মূর্তি ভাঙার ঘটনা ঘটেছে। এই অভিযোগের পর, বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেসের পাল্টা প্রতিক্রিয়া এসেছে, যেখানে তাদের দাবি, বিজেপি ধর্মীয় বিষয়ক দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চাইছে।

   

শুভেন্দু অধিকারী তার টুইটার (বর্তমানে X) অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, “গত মঙ্গলবার থেকে নন্দীগ্রাম II ব্লকের কামালপুর গ্রামে স্থানীয় পূজা উপলক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে পূজা এবং রাম নারায়ণ কীর্তন চলছিল। কিন্তু গতকাল রাত প্রায় বারোটার দিকে এক ব্যক্তি বাড়ি ফেরার পথে দেখতে পান যে, পূজামণ্ডপে স্থাপিত মূর্তিগুলি ভাঙা হয়েছে। পরে স্থানীয়রা এসে এই ঘটনা দেখতে পান।”

অধিকারী আরও দাবি করেছেন, এই ঘটনা অত্যন্ত ভয়ানক এবং দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্তদের শাস্তি দেওয়ার জন্য পুলিশ প্রশাসনকে অনুরোধ করেছেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ মহাপরিদর্শক (DGP) কে ট্যাগ করে লিখেছেন, “দয়া করে এই ঘটনার তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নিন এবং দোষীদের শাস্তি দিন। পুলিশ প্রশাসন যেন এ ধরনের অপরাধে মৃদু পদক্ষেপ না নেয়, তা নিশ্চিত করুন।”

এদিকে, রাজ্য পুলিশ জানিয়েছে যে, নন্দীগ্রামে ঘটনার পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। পুলিশ কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক এবং স্থানীয় উৎসবগুলি শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কুনাল ঘোষ সাংবাদিকদের বলেন, “এটি বিজেপির একটি পুরানো চক্রান্ত, যেখানে তারা সমাজে বিভাজন সৃষ্টি করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চায়। তাদের ভোটের সংখ্যা প্রতিটি নির্বাচনে কমে যাচ্ছে এবং তারা এখন ধর্মীয় ইস্যু তুলে ধরে সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চাচ্ছে।”

কুনাল ঘোষ আরও বলেন, “বিজেপি কোনো সমস্যার সমাধান করতে পারে না, তাই তারা মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য ধর্মীয় বিষয় নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করছে। কিন্তু মানুষের এই ধরনের চক্রান্তে আর বিভ্রান্ত হওয়া উচিত নয়।” তিনি আরও যোগ করেন, “রাজ্য পুলিশ প্রত্যেকটি ঘটনার বিষয়ে সজাগ রয়েছে এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা নিচ্ছে।”

এদিকে, বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী এই অভিযোগে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “তৃণমূল সরকার জনগণের সমস্যাগুলোর সমাধানে মনোযোগী না হয়ে, প্রতিনিয়ত বিজেপি-র বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে রাজনৈতিক সুযোগ খুঁজছে।” তিনি দাবি করেন, রাজ্যে অশান্তি সৃষ্টির জন্য তৃণমূল কংগ্রেস দায়ী।

এদিকে, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে মূর্তি ভাঙচুরের ঘটনায় দ্রুত তদন্তের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে এবং পুলিশ প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে। তবে, এই ঘটনা রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা তৈরি করেছে, যা আগামী দিনে রাজ্য রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

এই ঘটনায় নন্দীগ্রামের জনগণের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে, তবে পুলিশ প্রশাসনের দাবি, পরিস্থিতি এখন শান্তিপূর্ণ এবং সবাইকে শিথিল থাকতে অনুরোধ করা হচ্ছে।