সম্প্রতি তৃণমূল সুপ্রিমো তথা, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন ভিন রাজ্যের পরিযায়ী (Shramshree)শ্রমিকরা বাংলায় ফিরে এলেই মিলবে কড়কড়ে পাঁচ হাজার। কিন্তু পরিযায়ী শ্রমিকদের ভিন্ন মত। রাজ্যে কর্ম সংস্থান কই ? প্রশ্ন করেছেন তারা। তাই পুরুলিয়া রেল স্টেশনে দেখা গেল ভিন রাজ্যে পাড়ি দেওয়ার জন্য পরিযায়ী যুবকের ঢল।
তাদের মতে রাজ্যে তাদের জন্য কর্মসংস্থান নেই। সবচেয়ে বড় কথা ভিন রাজ্যে কাজ করলে দিনে যে টাকা তারা রোজগার করেন তা মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা করা পাঁচ হাজারের চেয়ে অনেকন বেশি। সুতরাং রাজ্যে কাজ করবার বা ফিরে আসার কোনও মানেই হয়না। ভিন রাজ্যে, বিশেষ করে বিজেপি শাসিত রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিগ্রহ নিয়ে উত্তাল বাংলা।
তৃণমূলের দাবি বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশী বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে তাদের। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন নতুন শ্রমশ্রী প্রকল্পের। যে প্রকল্পে বাংলায় ফিরে এলেই পরিযায়ী শ্রমিকরা পেয়ে যাবেন পাঁচ হাজার। কিন্তু পরিযায়ী শ্রমিকরা যারা অন্য রাজ্যে কাজ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করেন তারা জীবন এবং জীবিকার জন্য ভিন রাজ্যকেই বেঁচে নিচ্ছেন।
এই বিষয়ে আবারও সরব হয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেছেন মমতার এই শ্রমশ্রী প্রকল্প শুধু মাত্র পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্যে টেনে এনে ভোটব্যাংক মজবুত করার স্ট্রাটেজি। অর্থাৎ তিনি তার বক্তব্যে স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে তৃণমূলের এই মুহূর্তের স্ট্রাটেজি হল ‘কাজের সময় কাজি আর কাজ ফুরোলেই পাজি।’
বিরোধীদের একাংশ মন্তব্য করেছে করোনা মহামারীর কালে পরিযায়ী শ্রমিকদের ট্রেন কে মমতা করোনা এক্সপ্রেস বলেছিলেন। বিরোধিতা করে বলেছিলেন বিজেপি এই রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের ঢুকিয়ে মহামারির প্রকোপ বাড়িয়ে দিতে চায়। এখন ভোট যে বড় বালাই তাই এখন পরিযায়ী শ্রমিকদের ডেকে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছে মমতা।
শুভেন্দু আরও বলেছেন মমতার বাঙালি প্রীতি শুধু মাত্র রাজনৈতিক কৌশল এবং পরিযায়ী শ্রমিকদের এই ফাঁদে না পড়ার উপদেশ দিয়েছেন তিনি। বিরোধী দলনেতা কার্যত মমতাকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন এবং বলেছেন যে রাজ্য সরকারের যদি ক্ষমতা থাকে তাহলে এই পরিযায়ী শ্রমিক যুবকদের রাজ্যে রেখে তাদের কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা করুন। কিন্তু রাজ্য সরকার অপদার্থ। তা না হলে অনেক আগেই সরকার পরিযায়ী শ্রমিকদের ফিরিয়ে নিয়ে আসত রাজ্যে।
নারী নিরাপত্তায় সেরা সাতে নেই বাংলার কোনও শহর
সমালোচকদের একাংশ বলেছেন শুধু পুরুলিয়া নয় আরো অনেক জেলার যুবকেরা আজ পাড়ি দিয়েছে ভিন রাজ্যে, জীবন এবং জীবিকার জন্য। আবার অনেকে বলেছেন শুধু কর্মসংস্থান নয় শিক্ষা ক্ষেত্রে হাল এতই শোচনীয় যে জয়েন্ট মেধা তালিকার প্রথম দশ জন ছাত্রই আজ পড়াশুনোর জন্য ভিন রাজ্যে চলে গেছে। এটা রাজ্যের লজ্জা।