ছিলেন লেখক। এখন বিধায়ক। হুগলির বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক। মনোরঞ্জন ব্যাপারি (Manoranjan Byapari)। তিনিই এখন ঘাসফুল শিবিরের বড় বিড়ম্বনা। দলের একাংশের সঙ্গে তাঁর বিরোধ প্রকাশ্যে। লোকসভা ভোটের প্রচার নিয়ে দলের নেতাদের বিরুদ্ধেই বোমা ফাটিয়েছেন। এ নিয়ে ফের ব্যাপারি-বিড়ম্বনায় পড়েছে তৃণমূল।
এসব তো টাটকা ঘটনা। কয়েক দিন আগেই নিজেকে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা অটল বিহারী বাজপেয়ীর সঙ্গে তুলনা করেন মনোরঞ্জন ব্যাপারি। সোশাল মিডিয়ায় দলের কোন্দল প্রসঙ্গে লিখতে গিয়ে নিজেকে বাজপেয়ীর সঙ্গে তুলনা করেন। লেখেন, ‘অটল বিহারী বাজপেয়ী একজন সত্যিকারের ভালো মানুষ। কিন্তু তিনি ছিলেন কোন দলে? তাঁকে ব্যবহার করে দেশে সেই শক্তি বলবান হয়ে গেছে যারা সাম্প্রদায়িক, অমানবিক, মানবতা বিরোধী। তাই তার ভালো গুণ আমাদের কোন কাজে আসেনি। তাই তিনি আমার কাছে ভালো নন।’ এরপর তিনি আরও লেখেন, ‘অনুরূপভাবে আমিও অনেকেরই কাছে ভালো নই। আমাকে ভালো তারাই বাসে যারা চাষী মজুর, যারা সৎভাবে খেটে খায়। দিন আনা দিন খাওয়া গরীব মানুষ।’
ঘুরপথে বাজপেয়ীর প্রশংসা। একই পথে মহাত্মা গান্ধীর সমালোচনাও করেন বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক। সোশাল মিডিয়ায় মনোরঞ্জন ব্যাপারি লেখেন, ‘মহাত্মা গান্ধী দেশের বাপুজি, অথচ আমি তাঁকে তেমন ভালোবাসতে পারি না। দেখতে গেলে তিনি যে জীবন যাপন করছেন তা একটা আদর্শ জীবন। কমিউনিস্ট সুলভ জীবন। শ্রদ্ধা পাবার তাঁর অধিকার আছে। কিন্তু আমার ধারনায় তিনি আজীবন যে কাজগুলো করেছেন তাতে দেশের গরীব মানুষ নয়, উপকৃত হয়েছে ধনীক শ্রেণি।’
বিভিন্ন সময়ে দলের নেতাদের বিরুদ্ধে সোশাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন মনোরঞ্জন ব্যাপারি। বিধায়ক হওয়ার জন্য দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। বিধায়ক হয়ে তাঁর প্রাপ্য বলতে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর প্রশংসা করেছেন। তাঁর প্রতি বিরোধী দলনেতার সম্মানজনক ব্যবহারের প্রশংসা করেও সোশাল মিডিয়ায় লিখেছেন। বিভিন্ন সময়ে শুভেন্দু অধিকারীর মুখেও শোনা গিয়েছে মনোরঞ্জনের প্রশংসা। এ নিয়ে নানা জল্পনা হয়েছে।
মাঝে দলের এক নেত্রীকে কুরুচিকর ভাষায় আক্রমণ করেন মনোরঞ্জন ব্যাপারি। তা নিয়ে অনের জলঘোলা হয়। নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে বিষয়টি মিটে যায় বলে দাবি করে তৃণমূল। এবার লোকসভা ভোটের মুখে বলাগড়ে তৃণমূলের ব্যাপারি বিড়ম্বনা।