চিরকুটে চাকরির কথা বলেছিলেন মমতা, ফাঁস করল তৃণমূল

নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ভুরি ভুরি অভিযোগে স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং প্রাথমিক শিক্ষক পদে চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। বেনিয়মে নিয়োগ তালিকায় নাম থাকা মন্ত্রী পরেশ…

নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ভুরি ভুরি অভিযোগে স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং প্রাথমিক শিক্ষক পদে চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। বেনিয়মে নিয়োগ তালিকায় নাম থাকা মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীও চাকরি খুইয়েছেন। আদালতের নির্দেশের মুখ পুড়েছে বর্তমান শাসক দল তৃণমূল। এই সুযোগে গায়ে সততার প্রতীক লাগিয়ে স্বচ্ছতার মাপকাঠিতে প্রথম স্থানে রাখার অবিরাম চেষ্টা করছে বামেরা। কিন্তু জেলায় জেলায় কেঁচো খুঁড়তে বেরিয়ে আসছে কেউটে।

বাংলায় এই ধরনের নিয়োগ সংক্রান্ত ইতিহাস জানা সকলেরই। তা হল চিরকুটের মাধ্যমে চাকরি। যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে আগে শোনা গেছে সদ্য সেই মৌচাকে ঢিল মেরে জল্পনা উস্কে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।

   

চিরকুট প্রকাশ করেছে তৃণমূল। এতে এক নেতা অপর নেতা সিপিআইএমের লেটারপ্যাডে লেখা চিঠিতে জানাচ্ছেন, পশ্চিম মেদিনীপুরের ছেলে মোহিতলাল হাজরা। দুঃস্থ পরিবারের ছেলে এবং বামপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। ধেড়ুয়া অঞ্চল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গ্রুপ ডি পদে যে লোক নেওয়া হবে, সেই বিষয়ে যাহাতে একে নেওয়া যায় তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে অনুরোধ জানাচ্ছি। পরে সঙ্গে সাক্ষাত করে নেবো।

২০০৮ সালে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে খগেন্দ্রনাথ মাহাতোকে। চিঠিটি পাঠানো হয়েছে এক প্রভাবশালী বাম নেতার তরফেই। এই তৃণমূলের তরফে এই ছবি স্যোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয়েছে। তাতেই শোরগোল পড়েছে রাজনৈতিক মহলে। যদিও এই চিঠিটা আমরা যাচাই করে দেখিনি৷

উল্লেখ্য, সম্প্রতি স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে। এর মধ্যে গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। নিজাম প্যালসে হাজিরা দিতে হয়েছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে৷ সিবিআইয়ের নজরে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রাক্তন উপদেষ্টা কমিটির কনভেনর শান্তিপ্রসাদ সিনহাকেও।

অন্যদিকে, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে ২৬৯ জনের চাকরি যেতেই সামনে আসছে একাধিক তৃণমূল নেতাদের আত্মীয় অথবা ঘনিষ্ট জনদের নামও। এই পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতির জেরে চরম অস্বস্তিতে রাজ্যের শাসক দল৷ তাই তুলনার জন্য জন্য কি এই চিরকুটের রহস্য ফাঁস উঠছে প্রশ্ন।

এর আগে অবশ্য এই চিরকুটে চাকরির কথা প্রথম প্রকাশ্যে এনেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, আগে চিরকুট দিয়ে চাকরি হত। বদলি হত। সিপিএমের ৩৪ বছরে আমি অনেক খোঁজ নিয়েছি। আস্তে আস্তে চ্যাপটার ওপেন করব। এতদিন ভদ্রতা করে এসেছি। আর সেই চিরকুটের একটি নমুনা তুলে ধরে স্যোশাল। মিডিয়ায় আলোড়ন ফেলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।