কলকাতা: অনগ্রসর শ্রেণির সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ধর্ম নয়, আর্থিক পরিস্থিতিই মুখ্য—সাফ জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বিধানসভা অধিবেশনে ওবিসি সংরক্ষণ সংক্রান্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, “ওবিসি তালিকা নির্ধারণের সঙ্গে ধর্মের কোনও সম্পর্ক নেই। আর্থিক অনগ্রসরতার ভিত্তিতেই সমীক্ষা চলছে।”
ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণ নয়
তিনি আরও জানান, “যাঁরা বলছেন ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণ হচ্ছে, তাঁরা মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন। এটা সম্পূর্ণ ভুল তথ্য।” মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই এই সমীক্ষা শেষ হবে।
বর্তমানে রাজ্যে মোট ১৪০টি ক্যাটাগরি রয়েছে, যার মধ্যে ৪৯টি ওবিসি-‘এ’ এবং ৯১টি ওবিসি-‘বি’ শ্রেণিতে রয়েছে। আরও ৫০টি ক্যাটাগরির জন্য সমীক্ষা চলছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বাম আমলে কোনও সমীক্ষা না হলেও ২০১২ সাল থেকে তাঁদের সরকার ধারাবাহিকভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
ওবিসি সংরক্ষণ ৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ১০ শতাংশ Mamata Banerjee OBC reservation
মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানান, কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ২২ মে, ২০২৪ তারিখে একটি রায় দেয়, যার ফলে বহু ছাত্রছাত্রী সমস্যায় পড়ে। এই রায়ের পরই নতুন করে ১১৭টি শ্রেণি ওবিসি তালিকাভুক্ত হওয়ার আবেদন করে। আইন মেনেই বিজ্ঞপ্তি জারি করে সরকার এবং কমিশন সমীক্ষার কাজ শুরু করে। এরপর ৩ জুন, ২০২৫ তারিখে রাজ্যে ওবিসি সংরক্ষণ ৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়।
তিনি আরও জানান, সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, সংরক্ষণের প্রস্তাবিত তালিকাভুক্ত শ্রেণিগুলির মধ্যে ৬১ শতাংশ হিন্দু এবং ৭৯ শতাংশ মুসলিম। এই তথ্য তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট মন্তব্য, “ওরা কিছুই জানে না। শুধু ধর্মীয় প্রোপাগান্ডা চালিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।”
এদিন মুখ্যমন্ত্রী সুপ্রিম কোর্ট ও হাই কোর্টের নির্দেশ, কমিশনের সুপারিশ এবং সরকারি বিজ্ঞপ্তি বিধানসভায় পেশ করেন। পাশাপাশি, সেনার প্রতি সম্মান জানিয়ে পহেলগাঁও ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে একটি বিশেষ প্রস্তাবও বিধানসভায় আনা হয়, যাতে মুখ্যমন্ত্রী নিজে উপস্থিত ছিলেন।
