কলকাতা: বছরের অন্যতম বড় সাংস্কৃতিক ইভেন্ট আবার ফিরে এল শহরে। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হল ৩১তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (Kolkata Film Festival 2025)। ধনধান্য অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হল জমকালো উদ্বোধন অনুষ্ঠান। উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বলিউড এবং টলিউডের একঝাঁক তারকা।
শহর জুড়ে আজ যেন উৎসবের রঙ। নন্দনে সকাল থেকেই ভিড় জমিয়েছেন সিনেমাপাগলরা। সন্ধ্যা নামতেই ধনধান্য অডিটোরিয়াম প্রায় আলোয় ঝলমল করে উঠেছে তারকার উপস্থিতিতে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা শর্মিলা ঠাকুর, আরতি মুখোপাধ্যায়, শত্রুঘ্ন সিনহা, রমেশ সিপ্পি, সুজয় ঘোষ, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের। যদিও গত বছর মতো এবারও শাহরুখ খান উপস্থিত থাকতে পারছেন না, তবে তাঁর শুভেচ্ছাবার্তা আয়োজকদের কাছে পৌঁছে গেছে বলে সূত্রের খবর।
উত্তম কুমারের শতবর্ষ উপলক্ষে এই উৎসব বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। কালজয়ী পরিচালক অজয় করের ছবি ‘সপ্তপদী’ প্রদর্শনের মধ্যেই উৎসবের পর্দা উঠল। এবারের উৎসবের স্লোগান ‘চলচ্চিত্র মেলায় বিশ্ব’।
চলচ্চিত্র উৎসব চলবে ৭ থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত। কলকাতার নন্দন, রবীন্দ্র সদন, শিশির মঞ্চ, নজরুল তীর্থ, বিনোদিনী থিয়েটার, রাধা স্টুডিও সহ একাধিক প্রেক্ষাগৃহে চলবে প্রদর্শনী। সাতদিন ধরে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি পরিচালকের সিনেমা দেখার সুযোগ থাকবে দর্শকদের।
এই বছরে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নিচ্ছে মোট ৩৯টি দেশ। প্রদর্শিত হবে ২১৫টি চলচ্চিত্র, যার মধ্যে ১৮৫টি পূর্ণদৈর্ঘ্যের ও ৩০টি স্বল্পদৈর্ঘ্যের। বাংলা সিনেমার প্রতিনিধি হিসেবে একাধিক নতুন এবং বিষয়ভিত্তিক ছবি নির্বাচিত হয়েছে। দেশের অন্যান্য ভাষার ছবির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রের বড় সংগ্রহ এই উৎসবের বড় আকর্ষণ।
পোলিশ সিনেমার ওপর বিশেষ বিভাগ রাখা হয়েছে, যেখানে পরিচালকেরা নতুন ভাবনার সিনেমা উপস্থাপন করবেন। ঋত্বিক ঘটকের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে তাঁর পাঁচটি মাইলস্টোন ছবি প্রদর্শনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে: ‘অযান্ত্রিক’, ‘মেঘে ঢাকা তারা’, ‘বাড়ি থেকে পালিয়ে’, ‘কোমল গান্ধার’, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’৷ বাংলা চলচ্চিত্রে তাঁর অবদান বিশেষভাবে তুলে ধরা হবে উৎসব জুড়ে।
বলিউডের কালজয়ী ছবি ‘শোলে’-র ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে উৎসবে আয়োজন করা হয়েছে ‘সত্যজিৎ রায় মেমোরিয়াল লেকচার’। বক্তা হিসেবে থাকবেন ছবি নির্মাতা রমেশ সিপ্পি। উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ নৃত্য পরিবেশন করলেন শিল্পী ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়।
উদ্বোধনের মঞ্চ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করলেন ‘বিবেকানন্দ যুবভারতী হকি স্টেডিয়াম’, যা আন্তর্জাতিক মানের এবং প্রায় ২২ হাজার দর্শকাসন বিশিষ্ট। স্টেডিয়াম নির্মাণে খরচ হয়েছে প্রায় ২০ কোটি টাকা।


