উত্তরবঙ্গ সফর শেষে শহরে পুজো উদ্বোধনে মমতা

কলকাতা: দুর্গাপুজোর আনন্দ ম্লান হতেই ফের বাঙালির ক্যালেন্ডারে নতুন উৎসবের রঙ। সামনে কালীপুজো ও দীপাবলি—আলোর উৎসবের সূচনা আজ থেকেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) শুক্রবার বিকেল থেকে শুরু করছেন শহর কলকাতার কালীপুজো উদ্বোধনের কর্মসূচি। গিরিশ পার্কের ফাইভ স্টার ক্লাবের পুজো উদ্বোধনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে সূচনা করবেন তিনি। এরপর জানবাজার, পার্ক স্ট্রিট এবং দক্ষিণ কলকাতার আরও বেশ কিছু পুজো মণ্ডপের উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisements

গত কয়েকদিন ধরে উত্তরবঙ্গে (North Bengal) প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার রাতে কলকাতায় ফিরে আজ বিকেল থেকেই শুরু করছেন পুজো উদ্বোধনের ব্যস্ত সূচি। জানা গেছে, আগামী কয়েকদিন ধরে শহর জুড়ে বড় বড় পুজো মণ্ডপে তিনি উপস্থিত থাকবেন উদ্বোধনের জন্য। প্রতি বছর যেমন দুর্গাপুজোয় প্যান্ডেল উদ্বোধনে ব্যস্ত থাকেন মুখ্যমন্ত্রী, তেমনি কালী আরাধনাতেও শহরবাসীর আনন্দ ভাগ করে নেন তিনি।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজের বাড়িতেও প্রতি বছর কালীপুজো হয়। দক্ষিণ কলকাতার হরিশ মুখার্জি রোডের বাড়িতে এই পুজো ঘিরে প্রতিবছরই সাধারণ মানুষের ভিড় উপচে পড়ে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই অংশ নেন পুজোর সমস্ত আয়োজন ও আরাধনায়। এবছরও সেই ঐতিহ্য অব্যাহত থাকবে বলে জানা গেছে।

দীপাবলি (Diwali 2025) উপলক্ষে ইতিমধ্যেই আলোর সাজে সেজে উঠছে গোটা শহর। পার্ক স্ট্রিট, বেনিয়াপুকুর, কালীঘাট, টালিগঞ্জ, শ্যামবাজার—সব এলাকাতেই চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। ব্যবসায়ীদের মতে, এবছর আলোর বাজারে চাহিদা বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ। শহরের বিভিন্ন কোণায় তৈরি হচ্ছে নতুন থিমের কালী মণ্ডপ ও আলোকসজ্জা।

নিরাপত্তা নিয়েও বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কলকাতা পুলিশ শহরজুড়ে বিশেষ নজরদারি চালাচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ জংশন ও পুজো মণ্ডপে বাড়ানো হয়েছে পুলিশের টহল। ফায়ার ব্রিগেডের পক্ষ থেকেও আলাদা ফায়ার স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে যাতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে। নবান্ন সূত্রে জানা গেছে, মুখ্যমন্ত্রী নিজে এই ব্যবস্থাগুলি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং প্রশাসনকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।

Advertisements

প্রশাসনের পাশাপাশি পুজো উদ্যোক্তারাও মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে রোমাঞ্চিত। তাঁদের মতে, মুখ্যমন্ত্রী নিজে উদ্বোধনে এলে পুজোর মর্যাদা ও আনন্দ দুইই বৃদ্ধি পায়। শহরবাসীর উৎসাহও বহুগুণ বেড়ে যায়।

আগামী সোমবার রাজ্যজুড়ে পালিত হবে দীপাবলি। সরকারি ও বেসরকারি দফতরগুলিতে থাকবে ছুটি। আলোর উৎসবে মেতে উঠবে গোটা বাংলা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা, “আনন্দে মাতুন, কিন্তু সচেতন থাকুন”—দীপাবলির আগেই রাজ্যবাসীকে সাবধানতার বার্তা দিয়েছেন তিনি।

শহরের নানা প্রান্তে মুখ্যমন্ত্রীর কালীপুজো উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে আজ থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হচ্ছে আলোর উৎসবের মরসুম। দুর্গাপুজোর পর এবার কালী আরাধনায় মেতে উঠতে তৈরি গোটা রাজ্য।