এখনই টাকা নয়! চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীদের ভাতা নিয়ে নির্দেশ হাই কোর্টের

কলকাতা: চাকরি হারানো গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের জন্য ভাতা প্রকল্প চালু নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার উপরে প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাই কোর্ট। সোমবার বিচারপতি অমৃতা…

এখনই টাকা নয়! চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীদের ভাতা নিয়ে নির্দেশ হাই কোর্টের

কলকাতা: চাকরি হারানো গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের জন্য ভাতা প্রকল্প চালু নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার উপরে প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাই কোর্ট। সোমবার বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চ জানিয়ে দিল, এখনই যেন ওই ভাতা দেওয়া শুরু না হয়। রাজ্য সরকার নিজের এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে এই প্রকল্প চালু করেছে-এমনটাই প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ আদালতের।

কী নিয়ে এই মামলা?

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে যখন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-কর্মীর চাকরি বাতিল হয়, তখন থেকেই রাজ্যজুড়ে তীব্র ক্ষোভ ও বিক্ষোভ শুরু হয়। সেই প্রেক্ষিতেই মুখ্যমন্ত্রী চাকরিহারা গ্রুপ সি ও ডি কর্মীদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়ে মাসিক ভাতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন।

   

১৫ মে জারি হওয়া বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, গ্রুপ সি কর্মীদের ২৫ হাজার টাকা এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের ২০ হাজার টাকা করে মাসিক ভাতা দেওয়ার কথা বলা হয়। প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয়- ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল লাইভলিহুড অ্যান্ড সোশ্যাল সিকিউরিটি ইন্টারিম স্কিম, ২০২৫’। এই ঘোষণার বিরোধিতা করে হাই কোর্টে মামলা দায়ের হয়। সেই মামলারই শুনানি ছিল সোমবার।

কী বললেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য? Kolkata High Court Allowance Halt

আদালতে রাজ্যের এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন,“সুপ্রিম কোর্ট যাদের নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা করেছে, তাদের এইভাবে সরকারি কোষাগার থেকে টাকা দেওয়া যায় না।”

তিনি আরও দাবি করেন, সংবিধানে ‘জনস্বার্থে অর্থ বরাদ্দ’ করার সুযোগ থাকলেও, তা এই ধরনের মামলায় প্রযোজ্য নয়। বরং এই প্রকল্প দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়ারই নামান্তর, বলে সওয়াল করেন তিনি।

Advertisements

আদালতের পর্যবেক্ষণ: ‘এখনই টাকা দেওয়া চলবে না’

বিচারপতি অমৃতা সিনহা রাজ্যের কাছে জানতে চান, “এক এপ্রিল থেকে কীভাবে এত দ্রুত টাকা দেওয়া শুরু হলো? আবেদন নেওয়ার পরে তো কিছু প্রক্রিয়া থাকে। এত তাড়াতাড়ি টাকা কীভাবে দেওয়া হয়?”

বিচারপতির স্পষ্ট পর্যবেক্ষণ, এখনই যেন ভাতা দেওয়া না হয়। সরকারি প্রকল্প কার্যকর করতে হলে নিয়ম মেনে সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া চালু হওয়া দরকার। তিনি বলেন, “এখনই কোনও টাকা দেবেন না।”

পরবর্তী কী?

এখন আদালতের চূড়ান্ত নির্দেশ আসা পর্যন্ত রাজ্যের পক্ষ থেকে এই প্রকল্প চালু রাখা হবে কি না, কিংবা ইতিমধ্যেই যারা টাকা পেয়েছেন-তাদের নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

হাই কোর্টের পরবর্তী শুনানিতেই প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হবে বলে মনে করছে আইনি মহল।