কলকাতা: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে জেরা যতই এগোচ্ছে, ততই সামনে আসছে বিস্ফোরক সব তথ্য। সোমবার দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর ইডি বড়ঞার এই বিধায়ককে গ্রেফতার করে। মোবাইল ফোন নর্দমায় ফেলে দিয়ে পাঁচিল টপকে পাঁকের পুকুরে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু সেই দুঃসাহসিক কৌশলও শেষ পর্যন্ত তাঁকে রক্ষা করতে পারেনি।
কোটি কোটি টাকার অঘোষিত সম্পত্তি
ইডি তদন্তে এবং India Today–এর হাতে আসা এক্সক্লুসিভ নথিতে দেখা যাচ্ছে, জীবনকৃষ্ণ সাহার নামে ও বেনামে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির টাকা ব্যবহার করেই গড়ে তোলা হয়েছে এই সাম্রাজ্য। অভিযোগ, নগদ অর্থের জোগান দিয়ে একাধিক জমি ও আবাসিক সম্পত্তি ক্রয় করেছেন জীবনকৃষ্ণ ও তাঁর ঘনিষ্ঠরা।
সহযোগীর তালিকায় আত্মীয়-স্বজন jiban krishna saha property
এই দুর্নীতির মূল সহযোগী হিসেবে উঠে এসেছে জীবনকৃষ্ণের পিসি তথা তৃণমূল কাউন্সিলর মায়ারানি সাহার নাম। পাশাপাশি নিতাই সাহা, রাজেশ ঘোষ ও গৌর সাহার নামও এসেছে। এঁরা মিলে বিভিন্ন জমি-বাড়ির লেনদেন করেন, যার প্রায় সবই হয়েছে নগদে।
বাবার সাক্ষ্যে ভাঙল দাবি
প্রথমে জীবনকৃষ্ণ দাবি করেছিলেন, এই সম্পত্তি তাঁর সঞ্চয় ও বাবার দেওয়া টাকায় কেনা। কিন্তু তাঁর বাবা বিশ্বনাথ সাহা ইডিকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন—তিনি কখনও ছেলেকে অর্থ দেননি, ব্যবসাতেও ছেলের কোনও ভূমিকা ছিল না। বরং তাঁর বক্তব্য, চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে ‘অযোগ্য প্রার্থী’দের কাছ থেকে টাকা তোলা হয়েছিল।
ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে নগদের ছাপ
তদন্তকারীদের হাতে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, জীবনকৃষ্ণ সাহার নামে ৪৬ লাখ টাকারও বেশি নগদ জমা পড়েছে। SBI–তে একাধিক লেনদেনে ধরা পড়েছে মোটা অঙ্কের টাকা। এক প্রার্থীর কাছ থেকে নেওয়া ১২ লাখ টাকার মধ্যে ৫ লাখ টাকা ফেরত পাঠানো হয়েছিল HDFC ব্যাঙ্কের মাধ্যমে। যদিও এই আর্থিক লেনদেন সম্পর্কে কোনও যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা দিতে পারেননি বিধায়ক।
তদন্তের বিস্তার
মুর্শিদাবাদের বড়ঞা ছাড়াও, রঘুনাথগঞ্জে জীবনকৃষ্ণ সাহার শ্বশুরবাড়িতেও হানা দিয়েছে ইডি। বীরভূমের এক মধ্যস্থতাকারী, যিনি নিয়োগ দুর্নীতিতে অর্থ সংগ্রহ করেছিলেন, তিনিও এদিন ছিলেন ইডির সঙ্গে।
West Bengal: TMC MLA Jiban Krishna Saha has been arrested by the ED in the teacher recruitment scam after a dramatic chase. Investigations reveal he amassed crores in undeclared assets using illicit funds, with his father denying any financial support. The probe uncovers a web of corruption involving relatives.