প্রশাসনের কাজের মূল্যায়ন করতে সোনারপুরে লাভলী মৈত্রর নয়া উদ্যোগ (Voter Feedback)। আগামী বছরে বিধানসভা নির্বাচন। তাকে পাখির চোখ করেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দলের নীল নকশা ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে।
তার পর থেকেই তৃণমূলের মধ্যে নতুন উদ্যোগ ও কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। সোনারপুর দক্ষিণের বিধায়ক লাভলী মৈত্রও এই তৎপরতা বাড়ানোর জন্য অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন।
লাভলী মৈত্র এবার নিজের কাজের মূল্যায়ন করতে সাধারণ মানুষের কাছে যাচ্ছেন। তিনি ঘোষণা করেছেন, সোনারপুরের প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে থাকবে একটি অভিযোগ বাক্স। এই বাক্সের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ তার কাজকর্মের সম্পর্কে মতামত জানাতে পারবেন। কেউ যদি অভিযোগ করেন, সেটি লিখিত আকারে জমা দিতে পারবেন। আবার, যদি কাউকে কোনও পরামর্শ দিতে হয়, তাহলে সেটিও এই বাক্সে জমা দেওয়া যাবে।
লাভলী মৈত্র জানিয়েছেন, ‘আপনার বিধায়ক আপনার পাশে’ নামে এই অভিযোগ বাক্স তৈরি করা হবে। পঞ্চায়েত, ওয়ার্ড অফিস, সব জায়গায় এই বাক্স বসানো হবে। এতে সাধারণ মানুষ তাদের অভিযোগ কিংবা সুচিন্তিত পরামর্শ জানাতে পারবেন। বিধায়ক জানিয়েছেন, ‘আমার নামেও যদি কোনো ধরনের অভিযোগ থাকে, তাও জানাতে দ্বিধাবোধ করবেন না।’
লাভলী আরও জানিয়েছেন, এর মাধ্যমে তিনি তার কাজকর্মে কতটা ঘাটতি ছিল, তা বুঝতে পারবেন এবং সেই অনুযায়ী উন্নয়নমূলক কাজ করার চেষ্টা করবেন। জনসংযোগের উপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।
এছাড়া, ভোটার তালিকা যাচাই করার জন্য বুথভিত্তিক কমিটি গঠন করার পরিকল্পনা করেছেন লাভলী মৈত্র। আগামী বিধানসভা নির্বাচনের জন্য দলের কর্মীদের মধ্যে আরও শক্তিশালী মনোভাব তৈরি করতে এই কমিটি গঠন করা হবে।
লাভলী মৈত্র জানান, ‘আমরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে আরও নিবিড় সম্পর্ক তৈরি করতে চাই। এটি একটি দলগত প্রচেষ্টা, যাতে জনগণের কাছে আরও বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠতে পারি।’
এমনকি, লাভলী মৈত্র আরও জানিয়েছেন যে, প্রতি সপ্তাহে বুথে ক্যাম্প করা হবে। এখানে প্রশাসনিক আধিকারিকদের উপস্থিতি থাকবে এবং যেকোনো অসুবিধা বা সমস্যার সমাধান করা হবে। এই ক্যাম্পগুলির মাধ্যমে এলাকার বাসিন্দাদের দাবিদাওয়া বা অভিযোগ শোনা হবে এবং যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তৃণমূল সাংসদ সায়নী ঘোষও এই কর্মীসভায় উপস্থিত ছিলেন। তিনি সোনারপুর দক্ষিণের নির্বাচনের বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করেন। গত লোকসভা নির্বাচনে সোনারপুর দক্ষিণে তৃণমূল কম ভোট পেয়ে ছিল। তিনি বলেন, ‘এটা ঠিক যে, আমরা অনেক বেশি ভোট আশা করেছিলাম। হয়তো আমার তরফে কিছু খামতি ছিল, যার কারণে আমরা প্রত্যাশিত ভোট পাইনি। তবে, এবার সেই ভুলত্রুটি শুধরে দলকে আরও বেশি ভোট এনে দেওয়ার জন্য সতর্ক থাকতে হবে।’
লাভলী মৈত্র বলেন, ‘এটি শুধু একক প্রচেষ্টা নয়। দলের সকল কর্মী এবং নেতার মধ্যে সঠিক সমন্বয়ের মাধ্যমে আমরা আগামী বিধানসভা নির্বাচনে সোনারপুর দক্ষিণের ফলাফল ভালো করতে চাই।’
তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘আমরা শহুরে ভোটারদের আরও আকৃষ্ট করার জন্য একটি রণকৌশল তৈরি করতে যাচ্ছি। শহুরে এলাকার ভোটারদের সঙ্গে আরও নিবিড় সম্পর্ক তৈরি করতে হবে।’
এই নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে লাভলী মৈত্র এবং তৃণমূল দল সোনারপুর দক্ষিণে একটি শক্তিশালী সংগঠন গড়ার চেষ্টা করছেন, যা আগামী নির্বাচনে তাদের ফলাফল আরও উন্নত করতে সাহায্য করবে। এমনটাই মনে করছেন দলের একাংশ।