আশ্বিন মাস মানেই দুর্গাপুজোর আনন্দে মেতে ওঠেন আপামোর বাঙালি। আর এই পুজো শেষ হতে না হতেই ঘরে ঘরে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর আয়োজন শুরুই হয়ে যায়। বাংলার ঘরে ঘরে লক্ষ্মী ঠাকুরের (Laxmi Puja) আরাধনায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন গৃহস্থেরা। ধূপ, ফুল, ধুনো, নাড়ু, দুধও নানা উপাচারে সাজিয়ে তোলা হয় লক্ষ্মীদেবীর আরাধনায়। কিন্তু এবারের পুজোয় সেই আয়োজনের আগেই মাথায় হাত গৃহস্থ পরিবারের। কারণ, বাজারে লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি।
এই বছর আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা চাষাবাদে বড় ধাক্কা দিয়েছে। একদিকে অতিবৃষ্টি, অন্যদিকে আকস্মিক বন্যা বা খরা—ফসলের পরিমাণ কমেছে অনেকটাই। তারই সরাসরি প্রভাব পড়েছে বাজারে। ফল, সব্জি, ফুল, এমনকি পুজোর সামগ্রী—সব কিছুর দাম বেড়েছে হু-হু করে।
শহরের বাজার ঘুরে দেখা গেল, আপেলের দাম গত সপ্তাহেও যেখানে ১২০ টাকা প্রতি কেজি ছিল, তা এখন গিয়ে ঠেকেছে ১৮০-২০০ টাকায়। পেয়ারার দাম ১০০ টাকায় পৌঁছে গেছে, যা সাধারণত পুজোর সময়েও ৫০-৬০ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করত। নাসপাতি ও বেদানা—এই দুই ফলের দাম ২০০ টাকার ঘরে।
একজন মধ্যবিত্ত গৃহবধূ বললেন, “একটা পুজোর আয়োজনে ফল কিনতেই হাজার টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে। তাও ভালো মানের ফল পাওয়া যাচ্ছে না। কিসে দেবীর পুজো করব, সেটাই বুঝে উঠতে পারছি না।”
ফল ছাড়াও সমস্যার শেষ নেই ফুল নিয়েও। গাঁদা, রজনীগন্ধা, জবা, বেলপাতা, শিউলি—সব কিছুর চাহিদা তুঙ্গে, কিন্তু জোগান যথেষ্ট নয়। কয়েক সপ্তাহ আগের টানা বৃষ্টিতে ফুলচাষের ক্ষতি হয়েছে প্রচুর। যার জেরে ফুলের দাম গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ।
অন্যদিকে, প্রতিমা তৈরির খরচও বেড়েছে লাফিয়ে। দেড় ফুট উচ্চতার ছাঁচের ঠাকুরের দাম যেখানে আগে ২৫০-৩০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যেত, এখন সেটা দাঁড়িয়েছে ৫০০-৬০০ টাকায়। যেসব পরিবার নিজেরাই ঘরে ঠাকুর গড়েন, তারাও কাঁচামাল ও রঙের দাম দেখে অবাক।