নিজস্ব প্রতিনিধি, পশ্চিম মেদিনীপুর: ঘাটাল (West Medinipur) আবারও জলের তলায়। টানা বৃষ্টিপাত এবং ব্যারেজ থেকে অতিরিক্ত জল ছাড়ার কারণে সৃষ্ট প্রবল জলাবদ্ধতায় এলাকার বহু মানুষ কার্যত গৃহবন্দি। একাধিকবার বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে করতে ভেঙে পড়েছে সাধারণ মানুষের সহ্যশক্তি। এই পরিপ্রেক্ষিতে আজ ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটির পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়াকে আবেদন পাঠানো হয়েছে।
সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক জানান, এই বছর ঘাটাল মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা ইতিমধ্যেই ৭ বার বন্যার কবলে পড়েছে, অথচ বহু প্রতীক্ষিত ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। তিনি অভিযোগ করেন, “গত লোকসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নের ঘোষণা করেছিলেন। অর্থ বরাদ্দ হওয়ার সাত মাস পরেও কাজ শুরু হয়নি। এই গাফিলতির মাশুল দিচ্ছে হাজার হাজার সাধারণ মানুষ—জীবনহানি ঘটেছে, ঘরবাড়ি নষ্ট হয়েছে, চাষাবাদ বিপর্যস্ত।”
বলা হয়েছে, জল নেমে গেলে আগামী নভেম্বর মাসেই শিলাবতী নদীর নিম্নাংশ এবং রূপনারায়ণ নদীর পূর্ব মেদিনীপুর ও হাওড়া জেলার অংশে পূর্ণ সংস্কারের কাজ শুরু করা হোক।** মাস্টার প্ল্যানের প্রথম পর্যায়ের কাজের মধ্যে এগুলিই ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি।
সংগ্রাম কমিটির দাবি, এই অংশগুলির সংস্কার কাজ সেচ দপ্তর যদি সময়মতো শুরু করত, তবে চলতি বর্ষায় অনেকটাই কম হত ক্ষয়ক্ষতি। কিন্তু প্রশাসনের গাফিলতিতে ও অগ্রাধিকারহীন কাজের তালিকায় পড়ে প্রকৃত গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলি পড়ে রয়েছে ফাইলবন্দি।নারায়ণবাবু আরও জানান, “যেটা শুরুতেই করা উচিত ছিল—যেমন শিলাবতীর নিম্নাংশ সংস্কার, সেটা বাদ দিয়ে এমন কিছু কাজ সেচ দপ্তর বেছে নিয়েছে, যেখানে স্থানীয় স্তরে বিরোধিতা আসাটা নিশ্চিত ছিল। এতে একদিকে যেমন কাজের অগ্রগতি ব্যাহত হয়েছে, তেমনই মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।”
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সরকার যদি বরাদ্দকৃত টাকা পাওয়ার পরপরই সঠিক পরিকল্পনা অনুসারে কাজ শুরু করত, তবে আজ এত মানুষকে জলের নিচে ডুবে দিন কাটাতে হতো না।”
- মাস্টার প্ল্যানের প্রথম পর্যায়ের কাজ অবিলম্বে শুরু করতে হবে, বিশেষ করে শিলাবতী নদী এবং রূপনারায়ণের উল্লেখযোগ্য অংশগুলির পূর্ণ সংস্কার। নভেম্বর থেকেই যেন কাজ শুরু হয়।
- মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন ও তদারকির জন্য একটি মনিটরিং কমিটি গঠনের দাবি জানানো হয়েছে, যেখানে সংগ্রাম কমিটির প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এতে কাজের স্বচ্ছতা ও বাস্তবায়নের গতি নিশ্চিত করা যাবে।