Bicycle factory in Bengal: ন্যানো তাড়িয়ে বাংলায় সাইকেল গড়বেন মমতা

বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বিপুল বিনিয়োগের বার্তা দিলেও এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও কিছু আসেনি রাজ্যে। তবে এবার মুখ্যমন্ত্রী নিজেই…

singur-mamata

বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বিপুল বিনিয়োগের বার্তা দিলেও এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও কিছু আসেনি রাজ্যে। তবে এবার মুখ্যমন্ত্রী নিজেই সাইকেল শিল্পের বিষয়ে বার্তা দিলেন।

যতবারই ভারি শিল্প, কারখানার কথা মুখ্যমন্ত্রী মুখে শোনা গেছে, ততবারই ইতিহাসের পাতা থেকে সিঙ্গুরে টাটা কারখানা বন্ধ করতে মমতার ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মঙ্গলবার যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে শোনা গেল সাইকেল তৈরির কারখানা হবে বাংলায় তখনও পিছু নিল টাটা কারখানার ছায়া।

https://video.incrementxserv.com/vast?vzId=IXV533296VEH1EC0&cb=100&pageurl=https://kolkata24x7.in&width=300&height=400
Tata nano factory in singur
বাম আমলে সিঙ্গুরে টাটাদের ন্যানো গাড়ির কারখানা তৈরি হয়েছিল

জেলা সফরে বেরিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রশাসনিক সভা থেকে তিনি বলেন, আমরা এত সাইকেল দিই, অথচ রাজ্যে কোথাও কোনও সাইকেল তৈরির কারখানা নেই। একটা কারখানা ছিল। সেটাও ধুঁকছিল। বন্ধ হয়েছে সেটাও। তিনি বলেন, এবার খড়্গপুরেই সাইকেল হাব তৈরি করা হবে। প্রচুর কর্মসংস্থানও তৈরি করা যাবে ওই কারখানার মাধ্যমে। মুখ্যমন্ত্রীর এই কথাতেই ফের আলোচনা শুরু হয়েছে সিঙ্গুরকে ঘিরে।

বামেদের সূর্য যখন মধ্যগগনে। কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্পি আমাদের ভবিষ্যত। রাজ্য জুড়ে এই স্লোগানকে সামনে রেখে জেলায় জেলায় শিল্প তালুক গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টচার্য। এই বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন তৎকালীন শিল্প মন্ত্রী নিরূপম সেন।

কিন্তু বাধ সাধল বিরোধী নেত্রী মমতার আন্দোলন। জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে মমতা সেই আন্দোলনের ঝাঁঝ দেশ বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। তখন মমতাকে সমর্থনকে এগিয়ে এসেছিল বিজেপি সহ বেশ কয়েকটি বাম সংগঠনও৷ দূর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে মমতার ধর্না পরবর্তীকে তাঁর নবান্নের ১৪ তলার রাস্তা মসৃণ করে দিয়েছিল৷ ন্যানো কারখানা বন্ধ হয়। নষ্ট হয় রাজ্যে বহু বেকারের কর্মসংস্থান৷ সিঙ্গুর আন্দোলনের সেই ক্ষত রাজ্যবাসীর কাছে এখনও কাঁচা। বিপুল জনসমর্থনের পরে আফসোস থেকে যায় আম জনতার।

বাম আমলে সিঙ্গুরে টাটাদের ন্যানো গাড়ির কারখানা গড়ার প্রতিবাদে তৃণমূলের আন্দোলন

গড়ে ওঠা কারখানা ভাঙতে যে বিপুল অর্থ রাজ্যের কোষাগার থেকে খরচ হয়েছে তাতে লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি হয়েছে। কৃষকদের জমি ফিরিয়ে দেওয়া হলেও তা নিয়ে এখনও বিতর্ক থেকে গেছে৷ সর্ষে ছড়িয়ে কৃষি বিপ্লব আনতে পারেননি মমতা। আলাদা করে সুবিধের পরেও কর্ম সন্ধানী সিঙ্গুরবাসীর অবস্থা চাতক পাখির মতো। শোনা যায় সেই জমিতে তৈরি হচ্ছে মাছের ভেড়ি।

গত এক দশক ধরে শিল্পের খরায় রাজ্য ছেড়ে ভিন রাজ্যে কর্মের সন্ধানে যেতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। গত সাত বছর ধরে বন্ধ রয়েছে এন্নোর কোক। বন্ধ রোহিত ফেরোটেক আয়রন কারখান, মর্ডান কনকাস্ট, জেভিএল৷ বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে একাধিক চটকল। যেগুলো চলছে তাঁর অবস্থা শোচনীয়। এরই মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর সাইকেল তৈরির কারখানার কথা ঘোষণা করে চমক দেওয়ার মতো কিছুই দেখছে না রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

সম্প্রতি এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে সাইকেল ব্যবহারে এগিয়ে বাংলা৷ পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সবুজ সাথী’ প্রকল্পকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন সকলেই৷ কিন্তু যেখানে ন্যানো ফিরে গেল, যেখানে শিল্প তালুকগুলোর অবস্থা একেবারে আইসিইউতে চলে গেছে, সেখানে সাইকেলের কারখানা তৈরি করে রাজ্যে বৃহৎ শিল্পের বিরাট বিপ্লব আনতে পারবেন মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই এই প্রশ্ন মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে।