Rampurhat Files: আনারুল বলবে ‘গণহত্যা’ ষড়যন্ত্রের কথা, বয়ান নেবে সিবিআই

বগটুই গ্রামে কেউ নেই! নেই বলা ভুল। আছে সিবিআই গোয়েন্দাদের সতর্ক চলাফেরা। দূরে কিছু পুলিশ। আর ব্যস্ততম রামপুরহাটের (Rampurhat Files) জনজীবনে চলছে ফিসফাস, কানাকানি। সকালের…

বগটুই গ্রামে কেউ নেই! নেই বলা ভুল। আছে সিবিআই গোয়েন্দাদের সতর্ক চলাফেরা। দূরে কিছু পুলিশ। আর ব্যস্ততম রামপুরহাটের (Rampurhat Files) জনজীবনে চলছে ফিসফাস, কানাকানি। সকালের দৈনিক সংবাদপত্রগুলোর পাতায় চোখ রেখে ভীতু আলোচনা। কী হয় কী হয় ভাব। বীরভূমের রাঙা ধুলোয় পাক খাচ্ছে হরেক জল্পনা।

সিবিআই জেরা করবে। বয়ান নথিভুক্ত করবে। পুলিশকর্মী, দমকল কর্মীদের বয়ান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাদের জেরা করেই বহু জট কাটবে। কারণ, গণহত্যার রাত গত সোমবার কী ঘটেছিল তারাই জানে। নিহত বগটুইবাসীদের আত্নীয়রা অভিযোগ করেছেন, ঘটনার সময় পুলিশ ছিল নীরব। আগুন দেখেও দূরে ছিল দমকল।

পুলিশ ও দমকলকে রাজনৈতিক নির্দেশে আটকে রেখে গণহত্যা?এই প্রশ্ন ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। তেমনই উঠছে প্রশ্ন বীরভূম জেলার পুলিশ সুপার নগেন্দ্র ত্রিপাঠির ভূমিকা। মনে করা হচ্ছে সোমবার রাত থেকে পরের ৪৮ ঘণ্টায় তাঁর মোবাইলে আসা সবকটি ফোন ‘সন্দেহজনক’। ফলে জেরার মুখে পড়বেন ত্রিপাঠি।

যাকে ঘিরে আরও বিতর্ক সেই টিএমসি নেতা আনারুল হোসেন কী বলবে? ষড়যন্ত্র চলেছে,সব সিবিআইকে বলব একথা আগেই জানিয়েছে বগটুইয়ের তৃণমূল কংগ্রেস নেতা আনারুল।

বয়ানের পর বয়ান। রবিবার সেই বয়ানবাজি নথিভুক্ত করে সিবিআই করবে বিশ্লেষণ। উঠে আসবে পরপর সূত্র। পশ্চিমবঙ্গে গত পাঁচ দশকে বৃহত্তম সংখ্যালঘু গণহত্যার রহস্যময় দিকগুলি। সরকারি হিসেবে মৃত ৮ জন আর স্থানীয়দের দাবি কমপক্ষে দশজনকে কেটে কেটে মেরে, তারপর পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল গত সোমবার।

রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে গত সোমবার গণহত্যা সংঘটিত হয়। স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসের উপপ্রধান ভাদু শেখকে বোমা মেরে খুন করার পর গ্রামে পরপর কয়েকটি বাড়িতে হামলা হয়।

ভাদু শেখ খুনের পর আনারুলের ভূমিকা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে। রাজ্য সরকার বলেছে বগটুই গ্রামের গণহত্যায় ‘পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র’। এই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত স্থানীয় টিএমসি নেতা (প্রাক্তন ব্লক সভাপতি) আনারুল হোসেন দাবি করেছে , সব ষড়যন্ত্র। ঘটনার সময় এবং ঘটনার পরে বাড়িতেই ছিলাম। পুলিশ ডাকতে আমার কাছে কোনও ফোন আসেনি

নিহতদের আত্মীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে ও ঘটনাস্থল থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের পরপরই পুলিশ তৎপরতা দেখিয়ে আনারুল হোসেনকে গ্রেফতার করে তারাপীঠের হোটেল থেকে। অভিযোগ, তার নেতৃত্বে হামলা হয়েছিল বগটুই গ্রামে।তবে আনারুলের দাবি, তৃণমূল দলনেত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের পর আত্মসমর্পণ করেছি। এখানেও প্রশ্ন, ঘটনার পর থেকে বারবার সংবাদ মাধ্যমে আনারুল তার বক্তব্যে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে। তখন পুলিশ তাকে ধরেনি। অথচ গ্রামবাসীরা বলেছিল আনারুলের নির্দেশে খুন ও আগুন ধরানোর সময় পুলিশকে ছিল নিষ্ক্রিয়।

সূত্রের খবর, বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে আনারুল হোসেনের দূরত্ব বাড়ছিল। তেমনই দূরত্ব তৈরি হয়েছিল পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখের সঙ্গে। ভাদু খুন হওয়ার পিছনে আনারুলের তার কোনও হাত আছে নাকি তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

<

p style=”text-align: justify;”>রামপুরহাট থেকে বালি ও পাথর চোরাচালানে স্থানীয় টিএমসি নেতা কর্মীর জড়িত তা স্পষ্ট হয়েছে। অভিযোগ, বগটুই গ্রামের ভাদু শেখের সঙ্গে চোরাচালানের বখরা নিয়ে গোষ্ঠী দেখা দিয়েছিল অন্যান্য নেতাদের। যার যেরে খুন হয় ভাদু। সেই জের ধরে গণহত্যা। গোটা ঘটনায় জেলা টিএমসি সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বগটুই গ্রামের গণহত্যাকে শর্টশার্কিট বলে প্রচার করেছিলেন তিনি।